২৩ মার্চ ২০১৬, বুধবার, ৭:১৮

বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়

গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম দফায় ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতায় ১১জন মানুষ নিহত, সহস্রাধিক আহত, ১৩৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন ও ৬৫টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ব্যাপক ভোট ডাকাতির প্রহসনের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের আজ ২৩ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে।

গত ২২ মার্চ রাতে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ায় ভোট গণনার সময় কারচুপির ষড়যন্ত্র ঠেকানোর জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৫ ব্যক্তি নিহত, কক্সবাজারের টেকনাফে সাবরং ইউনিয়নে ২জন নিহত হয়েছে, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জে ১জন মহিলা, নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলায় ১জন, ঝালকাঠিতে ১জন, পটুয়াখালীতে ১জন লোক নিহত হয়েছে। ২২ মার্চ ব্যাপক সহিংসতা, ভোট ডাকাতি, ব্যালট কেটে বাক্সে ঢুকানো হয়েছে, জালভোট দেয়া হয়েছে, ভোটগ্রহণের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করা হয়েছে। বরিশালে ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজেদের ভোট পর্যন্ত দিতে পারেননি। এ নির্বাচনকে নির্বাচন না বলে ভোটকেন্দ্র দখলের প্রক্রিয়াই বলা যেতে পারে। বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কখনো এ ধরনের ভোট ডাকাতির নির্বাচন কেউ প্রত্যক্ষ করেনি।

ভোট কেন্দ্র দখল, বাক্সে ব্যালট কেটে ঢুকানো, প্রিজাইডিং অফিসারদের মারধর করা, জাল ভোট দেয়া, সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়া, গোলাগুলি, সহিংসতা, বোমাবাজির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কিভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলে মন্তব্য করতে পারলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। ভোট ডাকাতির এ নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বক্তব্যেরই পূনরাবৃত্তি করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিবেক বোধ থাকলে তিনি এ নির্বাচনের পক্ষে এভাবে সাফাই গাইতে পারতেন না।

২২ মার্চের নির্বাচনের দ্বারা আবারো প্রমাণিত হলো যে, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য হলো সরকারী দলের প্রার্থীদের যে কোন মূল্যে বিজয়ী করা।

২২ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যে সব ভোট কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, জালভোট প্রদান, ব্যালট কেটে ঢুকানো হযেছে, সহিংসতা, গোলাগুলি, বোমাবাজীসহ নানা ধরনের অনিয়ম ও বেআইনী কর্মকান্ড হয়েছে সে সব ভোটকেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করে ঐ সব ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে পূনরায় নির্বাচন দেয়ার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”