১৫ এপ্রিল ২০১৬, শুক্রবার, ৭:০১

রেহমান সোবহানের বইয়ের বরাত দিয়ে বিডি নিউজ-এর অসত্য রিপোর্টের কোন ভিত্তি নেই

বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে জনাব রেহমান সোবহানের লিখিত বইয়ের বরাত দিয়ে “জামায়াত গণহত্যার এজেন্ট, পাকিস্তানের দালাল। জামায়াতি জঙ্গিদের সামরিক প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের কাজে লাগায় কিলিং স্কোয়াড হিসেবে। ঐতিহাসিকভাবে তাদের হত্যাযজ্ঞে নামানো হয়েছিল আল বদর ও আল শামস নামে। এ স্কোয়াডগুলো পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কার্যক্রম চালিয়েছে।” মর্মে যে সব বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের আজ ১৫ এপ্রিল প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “জনাব রেহমান সোবহানের বইয়ের বরাত দিয়ে বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রিপোর্টে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে সব তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই।

জনাব রেহমান সোবহানের বক্তব্য পড়লে মনে হয় যেন যুদ্ধটা তখন হয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে নয়, জামায়াতে ইসলামীর সাথে। তাদের এ ধরনের বক্তব্য চরম ইতিহাস বিকৃতি, আদর্শিক এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত ও সত্যের শতভাগ অপলাপ মাত্র। বিষয়টি যদি তাদের দাবি অনুযায়ী এ রকমই হয়, তাহলে স্বাধীনতার পরপর শেখ মুজিবুর রহমান জীবিত থাকাবস্থায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হাজার হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপকর্ম সংঘটনের জন্য অসংখ্য মামলা হয়ে থাকলেও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কিসে তাদেরকে মামলা করতে বাধা দিয়েছিল?

দীর্ঘ ৪০ বছর যাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা কিংবা একটি জিডিও করেনি, ৪০ বছর পরে জামায়াতকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে ঘায়েল করতে গিয়ে শতাব্দির নিকৃষ্টতম মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ট্রাইবুনালের মামলায় মিথ্যা সাক্ষী, অপ্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষী, দলীয় ক্যাডারদের মিথ্যা সাক্ষী নেয়া হলেও রহস্যজনক কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের বেঁচে থাকা সদস্যদের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়নি।

উপরন্তু স্কাইপ কেলেংকারী ও আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সাক্ষী অপহরণ, বিচারের ওপরে সরকার দলীয় নেতাদের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আইনজীবীদের ওপর দফায় দফায় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন, এ সব কিছুই বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ এবং বিশ্ব সম্প্রদায় প্রত্যক্ষ করেছে। যার ফলে এ বিচারের বিষয়ে বিশ্বের গুরুত্বপুর্ণ মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং বহু দেশ নিয়ে গঠিত ঐক্যবদ্ধ সংস্থাসমূহ দফায় দফায় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে আপত্তির কথা জানিয়েছে। তাই সরকার দিশেহারা হয়ে তাদের আশির্বাদপুষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা নির্লজ্জ অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আমরা মনে করি সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ার পরে এভাবে মিথ্যাচার করে জাতি ও বিশ্বসম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে তারা নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে, ইনশাআল্লাহ।

ক্লান্তিহীন মিথ্যাচার আর কত! ছায়ার সাথে উনাদের যুদ্ধ আর কত কাল চলবে? এ মতলববাজরা জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছেন কার স্বার্থে?

মিথ্যাচার যথেষ্ট হয়েছে। আর কোন মিথ্যাচার ও অপপ্রচার না চালানোর জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”