সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায় সম্পর্কে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক গত ৯ আগস্ট তার কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে যে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন সে সম্পর্কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান আজ ১০ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশের কেউই আইনের উর্ধ্বে নন। তাই মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সম্পর্কে যে সর্ব সম্মত রায় প্রদান করেছেন সে সম্পর্কে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিয়ে মূলতঃ আদালত অবমাননা করেছেন। তার এ অসৌজন্যমূলক বক্তব্য জাতির নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। আইন বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন আদালত অবমাননার দায়ে তার বিচার হওয়া উচিত।
তিনি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায় সম্পর্কে মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের রায়কে পূর্ব পরিকল্পিত বলে যে মন্তব্য করেছেন তার জবাবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, তিনি মুন সিনেমা হল সংক্রান্ত মামলার রায় দিতে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার ব্যবস্থা করেছেন। তার গতকালের বক্তব্যের দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, তার ঐ রায় ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত ও রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য তাড়িত। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক ছাড়াও সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যারা কটাক্ষপূর্ণ ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন তারা সবাই আদালত অবমাননা করেছেন। তাদের সবাইকে আদালত অবমাননার দায়ে বিচারের মুখোমুখী দাঁড় করানো উচিত।
গত কয়েক বছরে রাজনৈতিক দলের যে সব নেতা-কর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি আদালতের রায় সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার বক্তব্য দিয়েছেন তাদের সবাইকেই আদালত অবমাননার দায়ে বিচারের মুখোমুখী করা হয়েছে। এখন যারা আদালতের রায় সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন তারা বিচারের মুখোমুখী হবেন না কেন? সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সম্পর্কে মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের রায়ে বর্তমান সরকারের ব্যাপারে যে সব বিষয় উঠে এসেছে তাতে বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোন নৈতিক অধিকার নেই।
তাই মাথা গরম করে দেশের জনগণকে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে না দিয়ে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার স্বার্থে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বর্তমান সরকারের বিদায় নেয়া উচিত বলে দেশবাসী মনে করেন।”