আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে, যা ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও কাজ এখনো শেষ হয়নি। এই চার লেন প্রকল্পে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। একই সঙ্গে ঢাকা-সিলেট ছয় লেন মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজও চলছে। কিন্তু দুই প্রকল্পের কাজের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। এর ফলে ইট-বালু বহনকারী ট্রাক যত্রতত্র পার্কিং করা হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাতায়াতকারী যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এই চরম জনদুর্ভোগের প্রেক্ষিতে আজ ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী জননেতা জনাব মোঃ সেলিম উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ব্যারিষ্টার শিশির মোঃ মনির এবং হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ-) আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী এড. শেখ জিল্লুর রহমান আজমী।
সাক্ষাৎকালে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল মাননীয় উপদেষ্টাকে জানান, আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কিলোমিটার এলাকায় গত তিন দিন ধরে ভয়াবহ যানজট বিরাজ করছে। নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে এই সংকট আরও দীর্ঘ হচ্ছে। যানজটে আটকে পড়েছে হাজারো যানবাহন, যাত্রী ও শ্রমিকদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। অনেক যাত্রীকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে পুরো দিন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘব করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এই দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তারা জনদুর্ভোগ নিরসনে নিম্নোক্ত প্রস্তাবসমূহ পেশ করেন।
প্রস্তাবসমূহ:
১। নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে চার লেন ও ছয় লেন প্রকল্পের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করা।
২। অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে নির্মাণ কাজের গতি বাড়ানো।
৩। বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেনের বগি সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “সরকার ইতিমধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে অচিরেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং জনদুর্ভোগ দূর হবে।”