বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের পর দেশকে অর্থবহ স্থিতিশীল ও উন্নয়নের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বৈষম্যহীন, সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে চাই। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের কর্তাব্যক্তিগণ, দলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দেশে যে নৈরাজ্যকর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে আইনের শাসন, সকল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সরকারের অপকর্মের মদদদাতা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে সৎ, দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে। ফ্যাসিবাদীদের লুটপাট করা বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের এ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসররা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এই বিজয়কে দুষ্কৃতকারীরা যেন নস্যাৎ করতে না পারে এজন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সোচ্চার থাকতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করার আহবান জানান তিনি।
তিনি আজ রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে হিন্দু ধর্মালম্বীদের নিয়ে সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেন এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হসাইন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস। হিন্দু নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাবু কৃষ্ণ নন্দী, অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ, কানাই লাল কর্মকার, ডা. হরিদাস মন্ডল, বাবু সদেশ হালদার প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তরুণদের স্বপ্ন, ন্যায়, সাম্য ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে এবং চলমান পরিস্থিতিতে শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রতি ফিরিয়ে আনা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করাই জামায়াতে ইসলামীর প্রথম কাজ।”
ডুমুরিয়ার শান্তি, শৃঙ্খলা ও সম্প্রতি বজায় রাখার জন্য জামায়াত নেতা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দেন।
সভায় প্রধান অতিথি বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে সভাপতি, অধ্যক্ষ বাবু দেব প্রসাদকে সাধারণ সম্পাদক ও বাবু গৌতম মন্ডলকে কোষাধ্যক্ষ করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটিতে সহ-সভাপতি বাবু প্রশান্ত মন্ডল, ডা. হরিদাস মন্ডল ও কানাই লাল কর্মকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধদেব মন্ডল এবং অমূল্য কুমার সরকার, পুলকেশ মন্ডল, বিপ্লব সরকার, প্রদীপ কুমার সরকারকে সদস্য ঘোষণা করেন। তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঘোষিত এই কমিটিকে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের জন্য দায়িত্ব দেন।