বাংলাদেশ জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “জুলুমের হাত থেকে বাঁচার জন্য জাতির বিশাল প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশার দাবি পূরণের দায়িত্ব পড়েছে বিশেষভাবে যারা সরকার পরিচালনা করছেন এবং যারা রাজনীতি করেন তাদের সকলের উপর। যদি এই দায়িত্ব পালন না করা হয় বিশ্বাস ঘাতকতা করা হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর ২০২৪) বিকেলে নওগাঁর নওযোয়ান মাঠে স্থানীয় জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মুহতারাম আমীরে জামায়াত বক্তব্যের শুরুতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন, " অসংখ্য মানুষের চোখের পানি ও রক্তের বিনিময়ে আল্লাহ আমাদের এই মুক্ত ময়দানে স্বাধীনভাবে একত্রিত হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। গত সাড়ে ১৫ বছরের জুলুম-নির্যাতনের কথা স্মরণ করে বলেন, আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসেই পিলখানা হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আওয়ামী সরকার গত সাড়ে ১৫ বছরে শত মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, হামলার মাধ্যমে আমাদের নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আলহামদুলিল্লাহ, শত চেষ্টার মাধ্যমেও তারা আমাদের শেষ করতে সক্ষম হয়নি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন কিন্তু আপনাদের কলমের মাধ্যমে তা উঠে আসেনি। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা গণমাধ্যমের উপর চাপ প্রয়োগ করে তাদের চাঁপিয়ে দেওয়া স্ক্রিপ্টে সংবাদ তৈরী করতে বাধ্য করেছে। এতো কিছুর পরেও তারা গণমাধ্যমকে স্বাধীন বলে দাবি করেছে।
আমীরে জামায়াত সংবাদিকদের সাথে কুশল বিনিময়ের সময় নবীন ও প্রবীণ সাংবাদিকদের তাদের কাজের জন্য ধন্যবাদ প্রদান করেন এবং বস্তুনিষ্ঠ, সত্য ও সঠিক সংবাদ তৈরী ও প্রচারের জন্য অনুরোধ করেন।
আমীরে জামায়াত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের কথা স্মরণ করেন এবং এই বিজয়ের পুরো কৃতিত্ব ছাত্রদের প্রদান করেন। তিনি বলেন, এই বিজয় নির্দিষ্ট কোনো দল বা মতের নয়। যাঁরাই এই আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেছেন তারা সবাই ১৮ কোটি জনগণের দল এবং শহীদরা হলেন ১৮ কোটি মানুষের।
আমীরে জামায়াত আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পাওয়ায় আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আমীরে জামায়াত বলেন, আল্লাহ যদি আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ প্রদান করেন, আমরা তখন জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবো, দেশের মালিক হয়ে নয়। যারা দেশের মালিক হয়ে দেশের ক্ষমতায় বসেছিল, তারা তাদের জবাব ইতোমধ্যে পেয়ে গেছে এবং জনগণ তা দেখেছে।
তিনি আরও বলেছেন, যুব সমাজ যুগে যুগে দেশের ক্রান্তিলগ্নে অন্যায়-অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশেকে রক্ষা করেছে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নানাভাবে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন সেসব পরিবার জাতির বোঝা নয়, তারা জাতির সম্পদ। এসব পরিবারকে সম্মান দিতে হবে এবং মর্যাদা দিতে হবে। মুক্তির এই আন্দোলনে শহীদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে একজনকে চাকুরী দিয়ে সম্মানিত করতে হবে। আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাদের বীর বলে আখ্যায়িত করে পাঠ পুস্তকে সন্নিবেশিত করতে হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মোঃ শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল সহঃ পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আমীর ডঃ মোঃ কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খ,ম, আব্দুর রাকিব, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এনামুল হক, এ্যড. আ,স,ম সায়েম, অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন, মওলানা হাবিবুর রহমান, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য আসম মামুন শাহিন প্রমুখ।