আমীরে জামায়াত

2023-09-10

যশোর শহর, পূর্ব ও পশ্চিম সাংগঠনিক জেলার আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আল্লামা সাঈদী (রাহিঃ) এর মত আমাদেরকে সাহসী কুরআন প্রচারক হতে হবে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

আল্লামা সাঈদী (রাহিঃ) এর মত আমাদেরকে সাহসী কুরআন প্রচারক হতে হবে। ঘরে ঘরে কুরআনের পাঠক তৈরী করতে হবে। কুরআন বুঝে বুঝে পড়তে হবে আর সেই সাথে কুরআনের রাজ কায়েমের চেষ্টা করতে হবে। আল্লামা সাঈদী যেমন কুরআনের কথাগুলো সাহসের সাথে হৃদয়গ্রাহী ও আকর্ষণীয় করে মানুষের মাঝে তুলে ধরেছেন সেভাবে আমাদেরকেও তুলে ধরতে হবে।

গতকাল সন্ধ্যা ৭ টায় জামায়াতে ইসলামী যশোর শহর, পূর্ব ও পশ্চিম তিনটি সাংগঠনিক জেলার আয়োজনে যশোর পূর্ব শাখার আমীর মাস্টার নুরুন্নবীর সভাপতিত্বে ও যশোর শহর শাখার আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুলের পরিচালনায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহিঃ) এর জীবন ও কর্মশীর্ষক ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীর লক্ষ্য ছিল সমাজ ও রাষ্ট্রে কুরআনের শাসন কায়েম করা। এ জন্য তাঁকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তার মাহফিলে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারী করেছে। সন্ত্রাসীরা তার তাফসীর মাহফিলে হামলা করেছে। আয়োজক কমিটি মাহফিল বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ভয় না পেয়ে ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করে মাহফিল বাস্তবায়ন করে গেছেন। তার জীবনের শেষ ১৩ বছর কারাগারে কেটেছে। বন্দি অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মহান রব তাঁকে শহীদি মর্যাদা দান করুন, আমীন।

তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদী যেমন কুরআনের জন্য জেল, জুলুম, নির্যাতন সহ্য করে সাহস ও ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করেছেন, তেমনি কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। কুরআন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে দূরে থাকা যাবে না। এ পথে শত বাধা-বিপত্তি আসবে কিন্তু পিচ পা হওয়া যাবে না। আমাদের জন্য একমাত্র অনুসরনীয় ব্যক্তি রাসূল মুহাম্মদ ((সাঃ)। তিনি নির্ভীক চিত্তে দীনের দাওয়াত দিয়েছেন। হক্ব ও বাতিলের সামনে তিনি ছিলেন অটুট। আল্লাহর রাসূল (সা.) কে অনুসরণ করে আমাদেরকেও সাহসের সাথে দীনের দাওয়াত দিতে হবে।

তিনি বলেন, শোক ও ভক্তি দেখাতে গিয়ে এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যাতে শিরক ও বিদআতে পরিণত হয়। এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। আল্লামা সাঈদী ২ টার্ম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি দেশ জাতি এবং মুসলমানদের পক্ষে এবং অন্যায় আবিচারের বিরুদ্ধে সংসদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সাঈদী আজ দুনিয়াতে নেই কিন্তু আরো হাজার হাজার সাঈদী আছে যারা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দিনরাত চেষ্টা করে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন বলেন, বিশ্ব বরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে পরিচয় করে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি পঞ্চাশটির অধিক দেশে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। ইসলাম ভুলে যাওয়া শত সহস্র মুসলিম তাঁর ওয়াজের মাধ্যমে ইসলামের সঠিক পথে এসেছেন। শতশত অমুসলিম তার দাওয়াত গ্রহণ করে শান্তির ধর্ম ইসলাম কবুল করেছেন। মহান রব তাঁকে শহীদ হিসেবে কবুল করে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মাকাম দান করুন, আমীন।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক গোলাম আযমের জ্যেষ্ঠ পুত্র জনাব মামুন আল আযামী বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ওয়াজের প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মত। তাঁর ওয়াজ শুনে ইউরোপ-আমেরিকার বহু ব্যবসায়ী মদসহ হারাম পণ্যের ব্যবসায় পরিত্যাগ করেছেন। বহু মানুষ নিজেদেরকে প্রাক্টিসিং মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস পেয়েছেন। ইসলামিক সার্কল অব নথ আমেরিকা (ইকনা) সর্ব প্রথম তাঁকে ‘আল্লামা’ উপাধিতে ভূষিত করে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তৃতা করে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও যশোর জেলার সাবেক আমীর মাওলানা আজিজুর রহমান, বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক ড. খলিলুর রহমান মাদানী, আল্লামা সাঈদীর পুত্র পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এড. গাজী এনামুল হক, যশোর পশ্চিম জেলার আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান এবং কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা মঈন উদ্দীন।