আমীরে জামায়াত

2023-06-26

আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও পারিবারিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বিশ্বশান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা এবং দেশ ও জাতিকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযোগী করে গড়ে তুলতে মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জামাল উদ্দীন প্রমূখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, পবিত্র কালামে হাকিমে মাদক নিষিদ্ধের বিষয়টি তিনটি ধাপে এসেছে। এ বিষয়ে সূরা আল বাকারার ২১৯ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘লোকেরা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, এতদোভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ এবং মানুষের জন্য অপকারও, কিন্তু এগুলোতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি’। এরপর সুরা নিসার ৪৩ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমারা যখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাক, তখন তোমারা নামাজের ধারের কাছেও যেও না’। দ্বিতীয় পর্যায়ে সূরা আল মায়েদার ৯০ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, পূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, এগুলো শয়তানের কার্য। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো’। সর্বশেষে ঘোষণায় সূরা আল মায়েদার ৯১ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদিগকে আল্লাহর স্মরণে ও নামাজে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত হবে না?’। তাই মাদকের সর্বগ্রাসী ভয়াবহতা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন ও পারিবারিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। তিনি মাদক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ইসলামে মদকে পুরোপুরি হারাম করা হয়েছে। মাদক মানুষের সৃজনশীলতা ও চিরন্তন শক্তিকে বিলুপ্ত করে হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য করে ফেলে। কোন পরিবারে একজন মাদকাশক্ত থাকলে পুরো পরিবারেই অশান্তি নেমে আসে। মাদক মানুষের বিবেককে লোপ করে। ফলে মানুষ, যেনা-ব্যাভিচার, পাপাচারসহ নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত হয়। মূলত, কেয়ামতের একটি আলামত হলো মাদকের ব্যাপকতা। আর সমাজ ভোগবাদী হওয়া ওঠার অন্যতম কারণ হলো মাদকাশক্তির বিস্তার। আমরা খেয়াল করলে দেখতে পাবো যে, ভোগবাদীরা ব্যাপকভাবে মাদকাশক্ত। তাই মাদকাশক্তি নিয়ন্ত্রণ সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে পরিকল্পিতভাবে মাদকের বিস্তার ঘটানো হয়েছে। সীমিত পরিসরে হলেও ঔষধ ও কোমলপানীয় মাদকের উপস্থিতি রয়েছে। আর এভাবেই নতুন প্রজন্মকে মাদকাশক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার মোকাবেলায় প্রত্যেক নাগরিক কুরআন-সুন্নাহর যথাযথ জ্ঞান অর্জন, মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি, মাদকবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়ন, আর তা কার্যকর করার জন্য প্রশাসনের সকল পর্যায়ে সৎলোকদের নিয়োগ এবং মাদকবিরোধী অভিযান সারা বছরই অব্যাহত রাখা দরকার। তাহলেই মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রোধ করে দেশ ও জাতিকে নিরাপদ করা সম্ভব।