আমীরে জামায়াত

2023-04-08

ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার এবং মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিককে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং এই মুহূর্তে তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ৮ এপ্রিল এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ৭ এপ্রিল শুক্রবার ঢাকা মহানগরী উত্তরের সাংগঠনিক বসুন্ধরা থানার উদ্যোগে ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যাকাতের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই ইফতার মাহফিল থেকে জনাব সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। ৮ এপ্রিল শনিবার মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে জনাব সেলিম উদ্দিনকে ৫ দিন এবং বাকীদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও রিমান্ড মঞ্জুর চরম অন্যায়, অনভিপ্রেত, অনাকাক্সিক্ষত এবং মৌলিক মানাবাধিকার, ধর্মীয় অধিকার ও সংবিধানের পরিপন্থী। আমরা এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সেই সাথে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রিমান্ড বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ইসলামের ৫টি মৌলিক স্তম্ভের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল যাকাত। ধর্মপ্রাণ ও বিত্তশালী মুসলমানদের যাকাত আদায়ে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন প্রতি বছরই রমযান মাসে আলোচনা সভা, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সচেতন দেশবাসী মনে করে, যাকাতের মতো নিছক একটি ধর্মীয় আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল থেকে ধর্মপ্রাণ বিশিষ্ট নাগরিকদের গ্রেফতার করে জালেম সরকার গর্হিত কাজ করেছে এবং ইতিহাসের নিকৃষ্টতম নজীর স্থাপন করেছে।

সরকার পবিত্র রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোজাদারদের গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। রোজার মাসে মানুষ যখন সিয়াম সাধনা ও আত্ম-শুদ্ধির কাজে ব্যস্ত, ঠিক তখন সরকারের এই গ্রেফতার চরম জুলুম ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিস্ট সরকার মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের ইসলাম বিরোধী মনোভাব নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। বর্তমান জালেম সরকার মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের দিন ঘনিয়ে এসেছে। তাই সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করছে। বর্তমান জালেম সরকারের কাছে দেশের কোনো মানুষই নিরাপদ নয়। গুম, খুন, হয়রানি ও গ্রেফতার যেন সরকারের রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। দেশকে আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

দেশবাসী মনে করে, গ্রেফতার করে এবং হামলা-মামলা দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন দমন করা যাবে না।

সংবিধান স্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতা, মৌলিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র হরণকারী জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে জুলুম-নিপীড়ন বন্ধ করে জনাব সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিককে এবং সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”