সিরিয়ায় ব্যাপক গণহত্যায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “সিরিয়ায় ব্যাপক গণহত্যায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নির্বিশেষে সেখানে মানুষ গণহত্যার শিকার হচ্ছে। সিরিয়ার যুদ্ধবাজ সরকার ও বৃহৎ শক্তিবর্গ মানবাধিকার লংঘন করে সে দেশে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এ গণহত্যার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই।
সে দেশের সরকার ২০১৩ সাল থেকেই সে দেশে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে ব্যাপক গণহত্যা চালাচ্ছে। ৫৫ লক্ষাধিক লোক বাড়ী-ঘর ছেড়ে বিভিন্ন দেশে গিয়ে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছে এবং ৭৬ লক্ষাধিক লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তারা ক্ষুধার যন্ত্রণায় ও বিনা চিকিৎসায় আবার কেউবা মারণাস্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছে। এ পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৭০ হাজারের অধিক লোক নিহত হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হচ্ছে না। তারা আজ বিশ্বের বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলোর অপরাজনীতির দাবা খেলার শিকার হয়ে নৃশংসভাবে মৃত্যু বরণ করছে। তাদের দেখার ও তাদের কথা শুনার কেউ নেই।
অথচ বর্তমানে পৃথিবীতে মুসলমানের মোট সংখ্যা প্রায় পৌণে দুইশত কোটি। কিন্তু নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের উদ্ধারের জন্য কেউই এগিয়ে আসছে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আন-নিসার ৭৫ নং আয়াতে ঘোষণা করেছেন, “তোমাদের কী হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়ছো না, যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে, হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নিয়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরি করে দাও।”
সিরিয়ার ঘৌটাসহ সারা দেশেই এক ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে। সেখানে সরকারী বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে এবং বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করে ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে মানুষকে হত্যা করছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সিরিয়ায় সরকারী বাহিনীর স্থল ও বিমান হামলায় ৭ শত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮৫ জন শিশু ও ১০৯ জন নারী রয়েছে। নারীরা ত্রাণ সামগ্রী নিতে গিয়ে ত্রাণকর্মীদের দ্বারা ধর্ষিতা হচ্ছে। এ সব ঘটনা থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে, সিরিয়ায় কী ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। এ গণহত্যা বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তাই অবিলম্বে সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি জাতিসংঘ, ওআইসি এবং আরব লীগসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং পারমানবিক শক্তিধর বৃহৎ শক্তিগুলো ও সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”