২১ এপ্রিল ২০১৭, শুক্রবার, ৮:৩৪

চবিতে ছাত্রলীগের তাণ্ডবে ৫ পুলিশসহ আহত ৩০

পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত এক ছাত্রলীগ নেতাকে জোর করে পরীায় অংশ নেয়াতে গিয়ে চবিতে তাণ্ডব চালিয়েছে শাসক দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। এক দিকে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং অন্য দিকে রেললাইনের ফিশপ্লেট তুলে নিয়ে বন্ধ করে দেয় ট্রেন চলাচল। গতকালের এ ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হয় বলে জানা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ কর্তৃপ গতকালের পরীা স্থগিত করতে বাধ্য হয়।
ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পরীায় অংশগ্রহণ করানোকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং শহীদ মিনার এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্রলীগ কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। এরপর ছাত্রলীগের কর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে পিছু হটে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। পুলিশ তালা খুলে ফের লাঠিপেটা শুরু করলে তারা সরে যায়।
ইত্যবসরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হতে চট্টগ্রাম শহরে চলাচলকারী শাটল ট্রেনও বন্ধ করে দেয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
গতকালের সংঘর্ষে আহত পাঁচ পুলিশ সদস্যের মধ্যে এএসআই মহসীন আলী, কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ইমাম হোসেন ও শরিফুল ইসলাম রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছেÑ গত অক্টোবরে শৃঙ্খলাজনিত কারণে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও চবি ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার শাকিলকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ নয়া দিগন্তকে জানান, বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম পরীা (কোর্স নং-৪০১) গতকাল শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ দিকে পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. ইউনুস ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহিষ্কৃত এক ছাত্রকে পরীা দিতে দেয়ার জন্য আমাদের কাছে আসে। তাদেরকে আমরা জানাই, এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিলেই কেবল সে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ সময় পরীা কেন্দ্রের বাইরে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এসে জড়ো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সাথে আলোচনা করে শুরুতে তারা চলে যায়। কিছুণ পর আবার তারা সেখানে আসে এবং পরীার্থীদের হলে ঢুকতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিভাগীয় অ্যাকাডেমিক কমিটির জরুরি সভা ডেকে গতকালের পরীা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেনÑ পরবর্তী পরীাগুলো যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/213795