ড. মাহবুব উল্লাহ। ফাইল ছবি
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, রবিবার, ৯:৪৭

চিন্তা আছে, সুচিন্তা নেই

ড. মাহবুব উল্লাহ্

শিশু-কিশোরদের ‘নিরাপদ সড়ক’ আন্দোলনের পর থেকে সরকার সড়ক যোগাযোগকে নিরাপদ করে তোলার উদ্দেশ্যে নানামুখী পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট, চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করা ইত্যাদি।
আন্দোলনের পর মুহূর্তেই দেখা গেল বিআরটিএ’র কার্যালয়ে যানবাহনের ফিটনেস সনদপ্রাপ্তি ও নবায়ন, চালকদের লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য হাজার হাজার মানুষের ভিড়। সংবাদপত্রের খবর থেকে জানা গেছে, প্রতি ৩০ সেকেন্ডে গাড়ির ফিটনেস সনদ প্রদান করা হয়েছে। একই কথা হয়তো সত্য চালকদের লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেও।

এর পাশাপাশি চলেছে আইনকানুন মেনে গাড়ি চালানোর সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নানামুখী প্রচারণা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সভা করা হয়েছে কীভাবে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা যায়। ছাত্র-কিশোরদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের পরেও দেখা যাচ্ছে সড়কপথে মৃত্যুর মিছিল থামছে না।
সড়কপথে যাতায়াত নিরাপদ করার উদ্দেশ্যে মন্ত্রিসভায় নতুন আইনের খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে। এসব সত্ত্বেও গত ঈদুল আজহার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। আহতের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ। সড়কপথে দুর্ঘটনা সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্যও পাওয়া যায় না।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যও পাওয়া যায় না। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যের সঙ্গে পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের গরমিল লক্ষ করা যায়। পুলিশ সূত্র থেকে জানানো হয়েছে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করার জন্য কত লোককে বিশেষ করে গাড়ির চালকদের ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির মালিকদের জরিমানা করে কী পরিমাণ অর্থ আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও বাসচালক ও হেলপারদের নিষ্ঠুরতা কমছে না। গাড়ির আরোহীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে চলন্ত গাড়ির চাকার নিচে পিষ্ট করে হত্যা করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা আইন ভঙ্গকারী একজন বাসচালককে শনাক্ত করে তার মোটরসাইকেলকে অনুসরণ করার নির্দশ দেয়ার পর চালক মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ কর্মকর্তার ওপর বাসটি চাপা দিয়েছে। এত বড় দুঃসাহস কী করে চালক দেখাতে পারল সেটাই এখন সর্বমহলের আলোচনার বিষয়।
বাংলাদেশে সড়কপথে গাড়ি চালায় এমন চালকের সংখ্যা পঞ্চাশ লাখের কম হবে না। শ্রেণীগতভাবে এরা শ্রমিক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। ইতিহাসে শ্রমিক শ্রেণীকে আধুনিক সভ্য সমাজের নেতৃত্বদানকারী শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এ মর্যাদা শ্রমিক শ্রেণীর সদস্যরা অর্জন করেছে তাদের সংগ্রামী চরিত্র ও মানবিকতা বোধের জন্য।
কিন্তু বাংলাদেশের পরিবহন শ্রমিকরা কেন এত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার কারণ বুঝতে আমাদের দেখতে হবে এ শ্রেণীটিকে কারা চরিত্রের দিক থেকে দূষিত করে তুলেছে। নিরেট সত্য কথা হল, অতীতে পাকিস্তান বা ব্রিটিশ শাসনামলে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের যে সংগ্রামী ও রাজনৈতিক চরিত্র ছিল, তাতে বাংলাদেশোত্তরকালে ক্রমান্বয়ে ধস ও অধঃপতন ঘটেছে। শ্রমিক শ্রেণী ও সর্বহারাদের সম্পর্কে কমিউনিস্ট মেনুফেস্টোতে লেখা হয়েছিল, ‘শৃঙ্খল ছাড়া আমাদের আর কিছু হারাবার নেই, আমরা জয় করতে পারি সমগ্র বিশ্ব।’

বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে ক্ষমতার প্রলোভন, রাজনৈতিক পেশিশক্তি হিসেবে তাদের ব্যবহার এবং শাসক গোষ্ঠীর লাঠিয়ালে পরিণত করা ইত্যাদি অনৈতিক ও শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থবিরোধী দুষ্ট চিন্তা ছড়িয়ে দেয়ার ফলে এ শ্রমিক শ্রেণী তার অকৃত্রিম সর্বহারা চরিত্র হারিয়েছে। এছাড়া এদেশে সম্পদের খুদে মালিকদের বৈশিষ্ট্যও শ্রমিক শ্রেণীকে শ্রমিক শ্রেণীর চরিত্র ধারণ করতে বাধা হিসেবে কাজ করছে। এ কথার মানে এই নয় যে, এদেশে খুদে সম্পদের মালিকানার বিপরীতে বিশাল বিত্তশালী শ্রেণী নেই।
কথাটি হল সম্পদের মালিকানা বিন্যাস শ্রমিক শ্রেণীকে প্রকৃত শ্রমিক শ্রেণী হয়ে ওঠার পর থেকে এক বিশাল প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। এক অর্থে এ শ্রেণীটিকে বলা যায়, লুম্পেন প্রলেতারিয়েত। আবার লুম্পেন প্রলেতারিয়েতের বিপরীতেও রয়েছে লুম্পেন বুর্জোয়া শ্রেণী।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে লুম্পেন চরিত্রের ব্যাপক বিস্তার যেভাবে লক্ষ করা যায়, ঠিক একইভাবে বুর্জোয়া শ্রেণীর মধ্যেও বড় অংশটি লুম্পেন চরিত্রের। সমাজ বিন্যাসে এবং ক্ষমতা কাঠামোতে লুম্পেনদের প্রাধান্য একদিকে যেমন গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে, অন্যদিকে তেমনি সমাজতন্ত্রের সম্ভাবনাকেও সুদূরপরাহত করে তুলেছে। জার্মানিতে হিটলারের অভ্যুদয়ের পেছনে লুম্পেন প্রলেতারিয়েতরা ঝটিকা বাহিনীর ভূমিকা পালন করেছে।
এদেশে একদিকে যখন পার্লামেন্টে সরকারি দল ও বিরোধী দল একাকার হয়ে যায়, অন্যদিকে তেমনি পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করতে দেখা যায়। এরকম আর্থ-সামাজিক বিন্যাসে শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে প্রলেতারিয়েত কালচার গড়ে উঠতে পারে না।
তাই পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে অনেক সময় যখন অবাঞ্ছিত আচরণ লক্ষ করা যায়, তার জন্য দায়ী অপরাধী শ্রমিকটি নয়, বরং যে আর্থ-সামাজিক বিন্যাসের ওপর ওরা দাঁড়িয়ে আছে তাকে দায়ী করতে হবে। একটি আমূল সামাজিক পরিবর্তন কিংবা রূপান্তর ছাড়া খুব ভালো কিছু আশা করা যায় না।
আমাদের দেশের বুর্জোয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থাটি যদি সত্যিকার অর্থে বুর্জোয়া হয়ে উঠতে পারত, তাহলেও অনেক সামাজিক ব্যাধি থেকে আমরা মুক্ত হতে পারতাম। এদেশে চেতনার কথা বহুজন বহুবার উচ্চারণ করেছেন এবং করে চলেছেন। কিন্তু চেতনার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না।
দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা যায়, মানুষের চেতনা নির্ভর করে তার বস্তুগত অবস্থানের ওপর। এ বস্তুগত অবস্থানের ভিত্তিটা পুরোপুরি পরিবর্তন না করতে পারলে চেতনার ক্ষেত্রেও আশানুরূপ পরিবর্তন হবে না।

সম্প্রতি ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার জন্য এবং সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার জন্য কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা এসেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাসড়কে ভটভটি, নসিমন, অটোবাইক ও ভ্যানগাড়িসহ নানা ধরনের ক্ষুদ্র ও কম গতিসম্পন্ন যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা।
আমরা কেন ভুলে যাই, এ ধরনের যানবাহনগুলো উদ্ভাবন করেছে আমাদের দেশেরই কারিগর ও যন্ত্রীরা। এদের আধুনিক ও উন্নত ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান নেই। এগুলোর উদ্ভব ঘটেছে গ্রামীণ অর্থনীতির বাণিজ্যিকায়নের ফলে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল আড়তে বা গঞ্জে পরিবহন করা এবং গ্রামের মানুষদের যাতায়াতে সময় সাশ্রয় করার জন্যই এ ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা হয়। অনস্বীকার্য যে এগুলো দুর্ঘটনাপ্রবণ। কিন্তু প্রয়োজনীয় বটে।
এ ধরনের যানবাহন গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার করেছে। আধুনিক সভ্যতা বলতে যা কিছু বোঝায়, তার মূলে রয়েছে গতিবেগের সঞ্চার এবং সময় সাশ্রয়। বাষ্পচালিত জাহাজ, রেলগাড়ি, উড়োজাহাজ এবং বুলেট ট্রেনসহ সব ধরনের দ্রুতগামী যান অর্থনীতির চাকায় গতির সঞ্চার করেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক নেটওয়ার্ক এমন যে, ক্ষুদ্র যানবাহনগুলো গ্রামীণ সড়ক থেকে মহাসড়কে না উঠলে কাঙ্ক্ষিত সার্ভিস দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ভৌগোলিকভাবে দেশটি ক্ষুদ্র। কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বিশাল। অর্থনীতির আকারও বাড়ছে।

অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষের জীবিকায়নে রিকশাসহ উল্লিখিত ক্ষুদ্র যানবাহনগুলোর ভূমিকা বিশাল। দেশে যে আন্তঃজেলা সড়ক ও মহাসড়ক গড়ে তোলা হয়েছে তাতে ক্ষুদ্র যানবাহনের জন্য পৃথক কোনো লেনের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনা অনিবার্য হয়ে ওঠে।
তাই উল্লিখিত ক্ষুদ্র যানবাহনগুলো মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করলে এক ধরনের বিপদ থেকে হয়তো রক্ষা পাওয়া যাবে; কিন্তু অন্য ধরনের বিপদ এসে হাজির হবে। আর তা হল অর্থনীতির বেগ শ্লথ হয়ে যাওয়া। আসল সমাধান ক্ষুদ্র যানবাহনগুলোর জন্য সড়ক-মহাসড়কে পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা।
এ চিন্তা সড়ক-মহাসড়ক তৈরি করার সময়ই করা উচিত ছিল। অন্যদিকে এসব যানবাহনের যান্ত্রিক ত্র“টি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ও উদ্ভাবন অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বড় ত্র“টি হল প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এ শিক্ষা খুব কাজে আসে না।
আমার জানা নেই, এদেশের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী কী উদ্ভাবনা উপহার দিয়েছে। তবে সাধারণ কারিগরদের উদ্ভাবনাকে মানসম্পন্ন করার জন্য কিছু করা হয়েছে বলে দৃশ্যমান নয়। এছাড়া সড়ক-মহাসড়কে ক্ষুদ্র যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করতে গেলে অতিরিক্ত বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
এমনিতেই এদেশে সড়ক অবকাঠামো খাতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয়ের পরিমাণ ভারত, চীন এবং ইউরোপের অনেক দেশের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি। সঙ্গত কারণেই সন্দেহ হয় এর জন্য দায়ী দুর্নীতি। এ দুর্নীতিতে একটু লাগাম টেনে ধরতে পারলে এবং সময়মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা করা হলে এ খরচের মধ্যেই ক্ষুদ্র যানবাহনগুলোর পৃথক লেনে চলাচলের ব্যবস্থা করা যেত। মহাসড়কে চলতে গিয়ে দু-একটি স্থানে খুব সীমিত আকারে পৃথক লেন দেখেছি।
প্রয়োজন সমগ্র দেশে এ রকম ব্যবস্থা। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য ফিলিং স্টেশনগুলোকে ‘নো-হেলমেট’, নো-পেট্রল’ নীতি অনুসরণ করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু এ পলিসি কোন্ প্রণোদনার কারণে ফিলিং স্টেশনগুলো বাস্তবায়িত করবে? কারণ ফিলিং স্টেশনগুলো যত পেট্রল বিক্রি করতে পারবে ততই তাদের জন্য মুনাফা।

এখন যদি তারা এ বাড়তি দায়িত্ব পালন করে তাহলে তাদের ব্যবসার খরচ কিছু হলেও বাড়বে। আবার অন্যদিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করতে গেলে রাষ্ট্রের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক দায় বর্তাবে। কেউ হয়তো বলবেন, এটি সার্বক্ষণিক না করে দৈবচয়ন ভিত্তিতে করা হলে অত খরচ হবে না।
যাই হোক, যে কোনো পলিসি গ্রহণের আগে সার্বিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন সেটি হল, দ্রুততম সময়ে সুপ্রশিক্ষিত চালক সৃষ্টি করা। প্রয়োজনের তুলনায় এদেশে পঞ্চাশ শতাংশ দক্ষ চালক আছে কিনা সন্দেহ।
আরেকটি নতুন চিন্তা হচ্ছে, রাজধানীর সড়ক থেকে লেগুনা তুলে দেয়া। এ সিদ্ধান্তেরও নানারূপ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এগুলোকে বড় সড়ক থেকে নামিয়ে ক্ষুদ্র সড়কে ধাবিত করার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। এ চিন্তাও গভীরতর করা প্রয়োজন। এ ধরনের বাহনের জন্যও প্রয়োজন সব দিক থেকে প্রশিক্ষিত চালক।
এর অভাব প্রায়ই লক্ষ করা যায়। প্রশিক্ষিত চালক সৃষ্টি করার জন্য দেশব্যাপী ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটগুলোকে প্রশিক্ষক ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দিয়ে সজ্জিত করা প্রয়োজন, যেগুলো প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হবে। সরকারি ও বেসরকারি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউটগুলো যাতে দ্রুত এ পথে অগ্রসর হয় তার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন।

ভবিষ্যতে এসব ইন্সটিটিউট থেকে সনদপ্রাপ্তরা ছাড়া যাতে অন্য কেউ যানবাহন চালাতে পারবে না তার ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এসব ইন্সটিটিউটগুলোও আমাদের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সনদ বিক্রির আখড়ায় পরিণত হতে পারে সে শঙ্কা থেকেই যায়।
এর জন্য প্রয়োজন হবে শক্তিশালী রেগুলেটরি ব্যবস্থা। তবে মনে রাখতে হবে রেগুলেটরি ব্যবস্থাও অনেক সময় অকেজো হয়ে পড়ে। কারণ রেগুলেটেডরা রেগুলেটরদের ক্যাপচার করে ফেলে। এরকম ক্যাপচার যাতে না হতে পারে তার জন্য প্রয়োজন নিñিদ্র আইনের শাসন। আজ এদেশে আইনের শাসনের বিপুল ঘাটতি লক্ষ করা যায়।
নিশ্ছিদ্র আইনের শাসনের জন্য চাই দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকারের মূলে আছে নির্মল নৈতিক অবস্থান এবং একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সসম্পন্ন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। কিন্তু এ রকম গণতন্ত্রের অতি ন্যূনতম শর্ত ভালো নির্বাচন ব্যবস্থা ছাড়া একেবারেই সম্ভব নয়। সে রকম নির্বাচন কি আমরা আমাদের জীবদ্দশায় দেখতে পারব?
ড. মাহবুব উল্লাহ : অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ

https://www.jugantor.com/todays-paper/sub-editorial/88332