৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, রবিবার, ১০:৫২

গ্যাস সংযোগ না পেয়ে উৎপাদনে যাচ্ছে না এক হাজার শিল্প মালিক

উৎপাদনের প্রধান নিয়ামক গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন না এক হাজার শিল্প মালিক। আবেদন করেও তারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাচ্ছেন না। এদিকে ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করেও উৎপাদনে না থাকায় ব্যাংকের সুদ দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। পৃথক পৃথক কোম্পানির কাছে মোট আবেদন জমা পড়েছে এক হাজার ৬ টি।
সম্প্রতি গ্যাস সংযোগের এই নৈরাজ্য নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উপস্থাপিত শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগের আবেদনের সর্বশেষ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টের সূত্র অনুযায়ী শিল্প খাতে নতুন গ্যাস সংযোগের আবেদন করেও ১ হাজার ৬ জন উদ্যোক্তা গ্যাস সংযোগ পাননি। এসব প্রতিষ্ঠানের গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩৩৭ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদন শুরু করতে পারছেন না।
সূত্র জানায়, গ্যাস সংযোগের অনিষ্পন্ন আবেদনের তালিকার প্রথমেই রয়েছে তিতাস গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। এ বিতরণ সংস্থাটির আওতায় ৬৭৩ জন উদ্যোক্তা আবেদন করেও গ্যাস সংযোগ পাননি। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দৈনিক ২০১ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাসের চাহিদার আবেদন করা হয়েছিল। এর পরই রয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে করা ১৫২টি আবেদনে গ্যাসের চাহিদা ছিল দৈনিক ১১৮ এমএমসিএফ। কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অনিষ্পন্ন আবেদন ৩২টি, যেখানে চাহিদা ছিল দৈনিক ছয় এমএমসিএফ। আর পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস সংযোগ কোম্পানির কাছে অনিষ্পন্ন আবেদন রয়েছে ৯১টি, যেখানে গ্যাসের চাহিদা ১২ এমএমসিএফ। জালালাবাদ গ্যাস ট্র্যান্সমিশন কোম্পানিতে অনিষ্পন্ন আবেদনের সংখ্যা ৫৩। এতে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৪৫ এমএমসিএফ। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডে নতুন গ্যাস সংযোগ চেয়ে আবেদনের সংখ্যা পাঁচ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ (এনডিসি) বলেন, উপদেষ্টা মহোদয় সভা ডাকলে এবং তিনি বললে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। এদিকে কারখানা স্থাপন করেও গ্যাসের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না একাধিক শিল্প গ্রুপ। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, এতে মূলধনী যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়া ছাড়াও ব্যাংক ঋণের সুদও বাড়ছে। আবার গ্যাসের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় আগ্রহ থাকলেও নতুন শিল্প স্থাপনের সাহস করছেন না অনেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আনুমানিক ৬ হাজার ২৭০টি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দৈনিক প্রায় ৪৬০ এমএমসিএফ গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
শিল্পে গ্যাস সংযোগের বিষয়ে পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, শিল্পে গ্যাস দেয়ার সদিচ্ছা সরকারের রয়েছে। কোথাও কোথাও দেয়াও হচ্ছে। তবে গ্যাসের ঘাটতি থাকায় এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। তাই সচেতন অবস্থান থেকে উচ্চপর্যায়ের কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ দেয়া হচ্ছে। চূড়ান্ত না হলেও গ্যাস দেয়ার ক্ষেত্রে কো-জেনারেশন, বিকল্প জ্বালানির মতো শর্ত জুড়ে দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশে উৎপাদিত মোট গ্যাসের ৪২ শতাংশ ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এর বাইরে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার হয়। এছাড়া শিল্পে ১৭, আবাসিকে ১১, সার কারখানায় ৭ ও সিএনজিতে ব্যবহার হয় ৬ শতাংশ গ্যাস।
http://www.dailysangram.com/post/270501-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%89%E0%A7%8E%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95