৭ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:৪৭

১৭শ’ পণ্যের কনটেইনার রেখে ৫ জাহাজের বন্দর ত্যাগ

অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রফতানি পণ্যের ১ হাজার ৬৯৮টি ইইউএস (টুয়েন্টি ফিট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিটস) কনটেইনার না নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে গেছে ৫টি জাহাজ। প্রাইভেট আইসিডিতে রাখা এসব রফতানি পণ্য কনটেইনারে ভরে সময়মতো বন্দরে পৌঁছাতে না পারায় দুই দিনে ৫টি জাহাজই বন্দর ত্যাগ করে। এর ফলে বিপুল অংকের ক্ষতির মুখে পড়েছেন রফতানিকারকরা। এসব পণ্যের ৮০ ভাগই তৈরি পোশাক। তবে পাট ও চামড়াজাত পণ্যও রয়েছে। সময়মতো পণ্য জাহাজে তুলতে না পারায় রফতানি আদেশ বাতিলের শঙ্কায় রয়েছেন রফতানিকারকরা। এ ঘটনা রফতানি বাণিজ্যের জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ নিয়ে সোমবার কথা হয় বাংলাদেশ কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদারের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে জানান, রোববারের পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় কোনো রফতানি কনটেইনার প্রাইভেট আইসিডি থেকে বন্দরে পৌঁছানো যায়নি। আগের দিনও সড়কে পরিবহন কম ছিল। এর ফলে রোববার সকালে একটি এবং সোমবার সকালে ৪টি জাহাজ প্রায় ১৭শ’ কনটেইনার না নিয়েই বন্দর ত্যাগ করে। রোববার সকালে ছেড়ে যায় ও ই এল শ্রাবণ। পণ্যবাহী ২০৯ কনটেইনার নেয়ার কথা ছিল এ জাহাজের। একইভাবে সোমবার সকালে বন্দর ত্যাগ করে আরও ৪টি জাহাজ- মেরিন তারাবা, বিএলপিএল গ্রেস, ও ই এল মালয়েশিয়া এবং টিআর আরামিস। এগুলোতে ১ হাজার ৪৮৯টি কনটেইনার নেয়ার কথা ছিল। বন্দরে অবস্থানের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর জাহাজগুলো বন্দর ছেড়ে যায়। বর্তমানে রফতানি পণ্যের প্রায় ৯০ ভাগই চট্টগ্রামের ১৬টি আইসিডি হয়ে বন্দরে যায়। রফতানি পণ্য প্রথমে প্রাইভেট আইসিডিতে এনে কনটেইনার বোঝাই করা হয়। পরে শুল্কায়নসহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে এগুলো বন্দরে নিয়ে জাহাজে তোলা হয়। হরতাল ধর্মঘট কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতায় ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-লরি বন্ধ থাকলে কনটেইনার বন্দরে পৌঁছাতে না পারার কারণে জাহাজ ধরতে পারে না।

বিকডা সচিব রুহুল আমিন জানান, শুধু যে রফতানি কনটেইনার আটকা পড়েছে তা নয়, গত দুই দিনে আড়াই হাজার আমদানি পণ্যের কনটেইনারও বন্দর থেকে আইসিডিতে আনা যায়নি। ফলে বন্দরে বেড়ে গেছে কনটেইনারের চাপ। তিনি জানান, বন্দর কিংবা প্রাইভেট আইসিডিতে কনটেইনার নির্ধারিত সময়ের বেশি আটকা পড়লে বাড়তি চার্জ গুনতে হয়। এতে আমদানি-রফতানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে রফতানিকারকরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন, কেননা অর্ডারমতো পণ্য পৌঁছাতে না পারলে অর্ডার বাতিলের শঙ্কা থাকে। তবে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় সোমবার সকাল থেকে বন্দর থেকে সড়কপথে সারা দেশে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। বন্দরে রফতানি পণ্যবোঝাই ট্রাক-কাভার্ডভ্যানও প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, তবে বিপুল সংখ্যক ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি একসঙ্গে পণ্য আনা-নেয়া করতে হুড়োহুড়ি শুরু হওয়ার বন্দরের প্রবেশমুখে দেখা দিয়েছে গাড়ি যানজট। এতে স্বাভাবিক পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে পণ্যবাহী গাড়ি। তবে স্বাভাবিক হতে আরও কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/77907