৪ আগস্ট ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৬

পরিবহন সঙ্কটের প্রভাব বাজারে

পরিবহন সঙ্কটে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় রাজধানীর কাঁচাবাজারে দাম বেড়েছে বেশির ভাগ পণ্যের। বিশেষ করে পচনশীল পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতা। প্রতি কেজি সবজির দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা। আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ, মুরগি, পেঁয়াজ প্রভৃতি নিত্যপণ্য।

বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে ঝিঙা, ধুন্দল, কাঁকরোল, করলা প্রভৃতি বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। এসব সবজির দাম এখন ৪০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটোলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুরমুখী, কচুর লতি, বরবটি, চিচিঙা প্রভৃতি। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায় এবং আলু আগের মতোই ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

খুচরা বাজারে গতকাল শুক্রবার প্রতিটি লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটোর কেজি ১০০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচকলার হালি ২৪ থেকে ২৮ টাকা, লেবুর হালি ১২ থেকে ৩০ টাকা এবং শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। ধনেপাতার কেজি ২০০ টাকা। শাক বিক্রি হয় ১০ থেকে ২৫ টাকা আঁটি দরে।
টানা মওসুমি বৃষ্টিও সবজির দাম বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে জানান বিক্রেতারা। তারা জানান, অনেকেই সবজিবোঝাই পরিবহন আনতে ভয় পাচ্ছেন। যে কারণে চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ কম। ফলে দাম বেড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
কাওরানবাজারের ব্যবসায়ী সোলায়মান এ প্রসঙ্গে বলেন, বাজারে এখন সব সবজিই পাওয়া যাচ্ছে, তবে সরবরাহ কিছুটা কম। যে কারণে দাম কিছুটা বেশি। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বেশ কিছু তে নষ্ট হয়ে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে সবজির দাম বেড়ে গেছে।

বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের মতোই ১০৫ থেকে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে ডিমের ডজন। সাদা বয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগের সপ্তাহেও মুরগির দাম এমন ছিল বলে জানান তারা। তাদের বক্তব্য, চাহিদার তুলনায় ডিমের সরবরাহ কম থাকায় ডিমের দাম বেড়ে গেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ঢাকায় প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজের দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে ছিল ১৮ থেকে ৩২ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা চীনা রসুন কেজিতে গড়ে ১০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশী রসুনের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। প্রতি কেজি দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টি ও নানা কারণে কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে সবধরনের মাছের। বাজারে গতকাল মাঝারি আকারের একেকটি ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ থেকে ১২৫০ ও ১৩৫০ টাকায়, রুই-কাতলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/338657