নিরাপদ সড়কের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে স্লোগানমুখর শিক্ষার্থীরা। ছবি: আবদুস সালাম
৩ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৩২

‘অবাধ্য ট্রাফিক-ব্যবস্থাকে বশে আনতে রাস্তায় স্কুলছাত্ররা’

ঢাকার রাস্তায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। এসব খবরে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কথা উঠে এসেছে। জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশজুড়ে চলা শিক্ষার্থী বিক্ষোভ পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।’ খবরে বলা হয়েছে, হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতকে সাধারণত দুর্নীতিগ্রস্ত, অনিয়ন্ত্রিত ও ভয়ংকর বলে মনে করা হয়।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় ছাত্র বিক্ষোভ হচ্ছে। ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে গত রোববার জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছুসংখ্যক বাস ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। এই অবরোধ-বিক্ষোভের ফলে রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সিনহুয়া।

এএফপি বলছে, দুই শিক্ষার্থী নিহতের খবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ঢাকা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে এবং কর্তৃপক্ষ আন্দোলন পরিহার করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার আরজি জানিয়েছেন। কয়েক দিন ধরে ঢাকায় গড়ে ১০টি স্থানে রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটছে। এতে করে সীমাহীন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে অবরোধের কারণে অনেককে হেঁটে ও বৃষ্টিতে ভিজে গন্তব্যে যেতে হলেও অখুশি ছিলেন না কেউ। অনেকেই শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন।
নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগের বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছর। সরকারের এক মন্ত্রীর করা মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জেরে তাঁর পদত্যাগ দাবি করছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা নিরাপদ সড়কের দাবি তুলেছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিতে প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশে ছাত্ররা রাস্তায়, স্কুল বন্ধ’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলের ইউনিফর্ম পরা পড়ুয়ারা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ঢাকার জনজীবন অচল করে দেয়। ব্যস্ত রাজধানীর অবাধ্য ট্রাফিক-ব্যবস্থাকে বশে আনতে রাস্তায় নেমেছে স্কুলছাত্ররা। মন্ত্রীর গাড়ি উল্টো পথে আসায় আটকে ঘুরিয়ে দিয়েছে তারা। লাইসেন্স না থাকায় পুলিশের গাড়িও থামিয়ে দিয়েছে তারা।
এএফপির করা প্রতিবেদনের বরাত দিয়েই খবর প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, কাতারের গালফ টাইমস, মালয়েশিয়ার দ্য স্ট্রেইটস টাইমস ও ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম র্যাপলার।

http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1545806/