২৪ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৫:০৮

খোঁড়াখুঁড়ি আর বৃষ্টিতে দুর্ভোগ

তীব্র দাবদাহের পরে স্বস্তি ফিরেছে রাজধানীতে। আবহাওয়া অফিস বলছে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল। গতকালের কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও দুর্ভোগ বেড়েছে অনেকাংশে। একদিকে চলছে উন্নয়ন কাজের খোঁড়াখুঁড়ি আর অন্যদিকে বৃষ্টি। এতে করে পুরো নগরীতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নগরজীবনে চলে আসে সীমাহীন দুর্ভোগ।

কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি জমেছিল। থৈ থৈ পানিতে যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচলে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। থেমে থেমে যানবাহন চলাতে প্রায় প্রতিটা সড়কেই যানজট লেগেছিল।

কর্মদিবস থাকায় অফিসমুখী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরে পানি ঢুকে বেহাল হয়ে পড়ে জনজীবন। ড্রেনের ময়লা পানি অধিকাংশ সড়কের উপরে চলে আসে। সরজমিন নগরীর, কমলাপুর, পীরজঙ্গি মাজার, মতিঝিল আইডিয়াল, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনের সড়ক, বাসাবো, মাদারটেক, গোড়ান, সিপাহীবাগ, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী, মুগদা, মতিঝিল, মানিকনগর, বঙ্গভবন, গুলিস্তান, ওয়ারী, জয়কালী মন্দির, টিকাটুলি, নাজিম উদ্দিন রোড, পুরান ঢাকার একাধিক এলাকা, রামপুরা, ধানমন্ডি, মানিকমিয়া এভিনিউ, আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর, কালশী, মোহাম্মদপুরসহ আরো বেশকিছু এলাকায় বৃষ্টিতে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিল।

কমলাপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূল সড়কে নির্মাণ কাজ চলছিল। তাই সড়কের অধিকাংশ স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। বেশ কিছু স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে পানি ঢুকে যানবাহন চলাচল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। কমলাপুর স্ট্রেশনগামী সিএনজিচালক আলম বলেন, টানা ২ মাস ধরে এই সড়কে নির্মাণ কাজ চলছে। একদিকে ধীর গতিতে কাজ অন্যদিকে বৃষ্টি। সবমিলিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল অনেকটা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। সায়মা হোসেন নামের এক নারী জানান, বৃষ্টি হলেই এই সড়ক দিয়ে চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। রিকশা চালকদেরও ডাবল ভাড়া দিতে হয়। রাজারবাগ এলাকায় ৬ নম্বর বাসের চালক রহিম মিয়া বলেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য রাজারবাগ-মালিবাগ সড়কে দুর্ভোগের শেষ ছিল না। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর সড়ক মেরামত করে দেয়া হয়েছে। তারপরও হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। আনোয়ার হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, সবকিছুই ঠিক আছে কিন্তু পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

রাজধানীর অধিকাংশ সড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে। আর এই উন্নয়ন কাজের জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে করে অনেক সড়ক ছোট হয়ে গেছে। ছোট সড়কে এমনিতেই যানবাহন চলাচলে বেগ পেতে হয়। তার উপর আবার বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে সবকিছু। কোথায় গর্ত কোথায় ভালো তা বুঝার কোনো উপায় নাই। তাই অনেক যানবাহন ও পথচারীকে এরকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চলতে হয়েছে। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে ট্রাফিক পুলিশকে যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয়। এদিকে নিম্নাঞ্চলে বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ঘরের ভেতরে পানি থাকায় রান্না ছাড়াও প্রয়োজনীয় অনেক কাজকর্ম সারতে পারেননি অনেকে। গোড়ান এলাকায় রহিমা নামের এক নারী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে ঘরে। আর পানি ঢুকলে নিত্যদিনের কোনো কাজই আর সারা যায় না। একই এলাকার আরেক বাসিন্দা রফিক বলেন, বৃষ্টি হলে সড়কের উপর অনেক পানি জমে যায়। অনেকটা ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়। রিকশা দিয়ে কোথাও যেতে হলে ডাবল ভাড়া দিয়েও যাওয়া সম্ভব হয় না।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=127243