২৪ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৪:৩০

ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ

তিন বছরের প্রকল্প এখন ১০ বছরে

নতুনভাবে ১৬টি স্টেশন অন্তর্ভুক্তিতে আইএমইডির আপত্তি ; স্টেশন অন্তর্ভুক্তিসহ প্রকল্প সংশোধনে সম্মতি পরিকল্পনা মন্ত্রীর

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন বাংলাদেশের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকার প্রতিটি উপজেলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি। কিন্তু এই প্রকল্পটি নির্ধারিত তিন বছরে তো দূরের কথা, বাড়তি পাঁচ বছরেও শেষ করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ১০ বছরে নেয়া হচ্ছে। জমি না পাওয়ার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেরি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়। পরিকল্পনা কমিশনের আইএমইডি নতুনভাবে ১৬টি স্টেশন অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প সংশোধনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। তবে নতুনভাবে ২১টি স্টেশন অন্তর্ভুক্তিসহ প্রকল্প সংশোধনে পরিকল্পনা মন্ত্রীর সম্মতি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ৫৫০টি উপজেলা বা জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে একটি করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত ৫৫০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের মধ্যে ডিসেম্বর ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২০২টি নির্মাণ করা হয়েছিল। অবশিষ্ট ৩৪৮টি স্টেশন নির্মাণের জন্য চারটি প্রকল্প নেয়া হয়। ১৪৭ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫টি স্টেশন স্থাপনের জন্য ২০১১ সালে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। যেখানে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এসব স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হবে।

অন্য প্রকল্প থেকে এই প্রকল্পের আচরণ আলাদা হতে পারেনি। চার দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয় এই প্রকল্পের। ব্যয় প্রায় ১৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হলো। কাজের কাজ কিছুই হলো না। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ আরো চার দফায় বৃদ্ধি করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেনে নেয়া হলো। এখন ২০১৮ সালের জুনে এসে আবারো সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সেটা আরো দুই বছর।

পরিকল্পনা কমিশনের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ চলমান অবস্থায় জমি অধিগ্রহণজনিত জটিলতার কারণে প্রকল্পের আওতাভুক্ত ২৫টি ফায়ার স্টেশনের মধ্যে ছয়টি স্টেশনের কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী সংস্থা। নতুনভাবে আরো ২১টি স্টেশন অন্তর্ভুক্তি, রেট শিডিউল পরিবর্তন, বিভিন্ন টাইপের স্টেশনের ফ্লোর এরিয়া বৃদ্ধি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও জমির মূল্য বৃদ্ধির কারণে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংস্থা। আইএমইডির মতামত অনুযায়ী নতুনভাবে ১৬টি স্টেশন অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্পটি সংশোধন করা যাবে না। অন্য দিকে নতুনভাবে ২১টি স্টেশন অন্তর্ভুক্তিসহ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনের বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রীর সম্মতি রয়েছে বলে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ বলছে।

বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রতিনিধি মূল্যায়ন কমিটিকে জানান, প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদে জমি অধিগ্রহণ করতে না পারা এবং শিডিউল রেট পরিবর্তনসহ আনুষঙ্গিক কারণে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। পাশাপাশি ২০০৮ সাল পর্যন্ত নির্মিত স্টেশনগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী। সেগুলোকে সংস্কার করা প্রয়োজন।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, দেশের অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। তারা এও বলছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি। সংশ্লিষ্ট সংস্থার সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা যথাযথভাবে প্রণয়ন ও সে মোতাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করাও জরুরি। পাশাপাশি স্টেশনগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণের ভিত্তি হালনাগাদ নীতিমালা সংশোধিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে হবে। লগ-ফ্রেমও যথাযথভাবে প্রণয়ন করতে হবে।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/335585