২৪ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ৪:২৭

কারণ দর্শানোর নোটিশ ৪ এজেন্সিকে

হজযাত্রার শুরুতেই অনিয়ম

হজযাত্রার শুরুতেই অনিয়ম শুরু করেছে বেসরকারি এজেন্সিগুলো। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বারবার হজের বিভিন্ন নিয়মকানুন সম্পর্কে জানানো হলেও তা মানছে না অনেক এজেন্সি। এ বছর হজযাত্রীদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ভাড়া করা বাড়ি বা হোটেলের ঠিকানা ও মোয়াল্লেম নম্বর সংবলিত স্টিকার পাসপোর্টে সংযুক্ত করে সৌদি আরবে পাঠানোর নিয়ম করা হয়। কিন্তু চারটি এজেন্সি এ নিয়ম অমান্য করে তাদের ২২৮ জন হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই হজযাত্রীরা। এ ছাড়া হজে যাওয়া স্বামী-স্ত্রী একই বাড়িতে থাকার নিয়ম থাকলেও তাও মানেনি একটি এজেন্সি। এসব ঘটনায় সৌদি সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সৌদি হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু নতুন নিয়ম করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানোর আগেই তাদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ভাড়া করা বাড়ি বা হোটেলের ঠিকানা ও মোয়াল্লেম নম্বরসংবলিত স্টিকার হজযাত্রীর পাসপোর্টে সংযুক্ত করে দিতে হবে। বিষয়টি যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য বাংলাদেশ ধর্ম মন্ত্রণালয় একাধিকবার হজ এজেন্সিগুলোকে নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কয়েকটি এজেন্সি এ নিয়ম প্রতিপালন না করেই তাদের হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠিয়েছে বলে জানা যায়।

গত ১৪ জুলাই থেকে বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। এরপর বেরসকারি এজেন্সিগুলো তাদের হজযাত্রীদের পাঠাতে শুরু করে। কিন্তু সৌদিতে হজযাত্রীরা যাওয়ার পর দেখা যায়, গত ১৬ ও ১৮ জুলাই চারটি এজেন্সি এ নিয়ম পালন না করেই তাদের হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর মেসার্স আকবর ওভারসিজ (লাইসেন্স নম্বর ৬১৬) গত ১৬ জুলাই এসভি ৩৮৫৭ নম্বর ফ্লাইটে তাদের ৮৯ জন হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু হজযাত্রীদের পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম ও বাড়িসংক্রান্ত তথ্যের কোনো স্টিকার ছিল না। একইভাবে ওই দিন এসভি ৩৮২৬ নম্বর ফ্লাইটে ঢাকার পুরানা পল্টনের মোবাস্বেরা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস (লাইসেন্স নম্বর ১০৫৫) তাদের ৪৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু তাদের পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম ও বাড়িসংক্রান্ত তথ্যের কোনো স্টিকার লাগানো হয়নি। গত ১৮ জুলাই জয়পুরহাটের আল সেকেন্দার ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স নম্বর ১৪৬৬) এসভি ৮০৭ নম্বর ফ্লাইটে তাদের ২২২ জন হজযাত্রী পাঠায়।

এর মধ্যে ৯০ জন হজযাত্রীর তথ্য ই-হজ সিস্টেমে প্রি-অ্যারাইভাল ডাটা আপলোড না করে মদিনায় পাঠিয়েছে। এ ছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে হজে মাহরাম পুরুষ এক বাড়িতে থাকতে হয়। কিন্তু দেখা যায়, ক্যাসক্যাড ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস (লাইসেন্স নম্বর ৭১৩) এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে শেফালী বেগম নামে এক মহিলা হাজী এবং তার স্বামী তোজাম্মেল হককে মক্কায় পৃথক বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব এস এম মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় ওই সব হজযাত্রী চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন। এ ছাড়া নিয়ম লঙ্ঘন করায় সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এতে দেশের ভাবমর্যাদাও ক্ষুণœ হয়েছে। এ জন্য ওই চারটি এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/335592/