২১ জুলাই ২০১৮, শনিবার, ১১:১৬

সড়ক দুর্ঘটনা মামলা

তদন্তেরও পঙ্গুদশা

আলোচিত কোনো মামলারই চার্জশিট হয়নি, ক্ষতিপূরণ পাননি কেউ,মামলা প্রত্যাহারে সমঝোতার চাপ

প্রাইভেটকার চালিয়ে সংসারের খরচ বহন করে আসছিলেন ২৩ বছরের তরুণ রাসেল সরকার। হঠাৎ ঝড়ে তার পৃথিবী এলোমেলো হয়ে যায়। ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে রাসেলের প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দেয় গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাসের চালক। গাড়ি থেকে নেমে কারণ জানতে চান রাসেল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার বাঁ পায়ের ওপর গাড়ি তুলে দেয় ওই বাসচালক। এরপর রাসেলকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কেটে ফেলা হয় বাঁ পা। পঙ্গু হয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কায় রয়েছেন রাসেল। তার পরিবারেও রাজ্যের চিন্তা। রাসেলের চিকিৎসা খরচ তার প্রতিষ্ঠান বহন করলেও দায়ী বাস কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দেয়নি। এমনকি এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তও চলছে ঢিমেতালে। বলতে গেলে তদন্তেরও পঙ্গুদশা। শুধু রাসেলের ঘটনা নয়, সম্প্রতি রাজধানীতে বহুল আলোচিত সাতটি দুর্ঘটনার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। একটি মামলারও চার্জশিট হয়নি। সমকালের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কোনো ঘটনায় ভুক্তভোগীদের মামলা প্রত্যাহারে চাপ পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে সমঝোতার কথা। তাই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে রয়েছে নানা শঙ্কা। কোনো ঘটনায় ভুক্তভোগী ও তার পরিবার দায়ীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাননি।

বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৪৭১ জন নিহত হয়েছেন। ৩৬৮ নারী, ১৬৮ শিশুসহ আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৫ জন। এ সময়ে সারাদেশের জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে ২ হাজার ৩৫৩টি।

সম্প্রতি প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীতে ঘটছে দুর্ঘটনা। এর মধ্যে ৪ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বিআরটিসির দোতলা বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ফুয়াদ (৩৫) নিহত হন। ২ জুলাই সকালে মিরপুরে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) ছাত্র সৈয়দ মাসুদ রানা প্রাণ হারান। ৭ জুলাই বিমানবন্দর এলাকায় ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী আল আমিন আজাদ (২২) নিহত হন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার মামলার তদন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে কর্মকর্তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। অনেক সময় এ-সংক্রান্ত মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে বাদী-বিবাদী কারও পক্ষ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায় না। তখন ধরে নেওয়া হয়, হয়ত তাদের মধ্যে গোপন সমঝোতা হয়েছে।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী শাহ্‌দীন মালিক বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে ২০ বছর ধরে ফৌজদারি মামলা করছেন ভুক্তভোগীরা। কেউ ক্ষতিপূরণের মামলা করছেন না। দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে দুর্ঘটনায় ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন। দু-একটি প্রমাণ হলেও তাতে চালক ও সহকারীর সাজা হয়, বাস মালিকের কিছু হয় না। দুর্ঘটনার জন্য মালিককে যদি মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দেওয়া লাগত তাহলে চালক নিয়োগ দেওয়ার আগে তিনি দশবার ভাবতেন।

মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, বাস মালিকদের পেছনে শক্তিশালী চক্র রয়েছে। চালকের ভুলে দুর্ঘটনা হলেও তাদের চাপে অনেক সময় তদন্ত সঠিকভাবে হয় না।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ আহত-নিহত হলেও অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পরবর্তী 'পদক্ষেপ' দেখার অপেক্ষায় থাকে। বিশেষ করে উভয় পক্ষের মধ্যে কেউ প্রভাবশালী হলে এ ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। সর্বশেষ এ ধরনের নজির দেখা যায় নোয়াখালী-৪ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী ও কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার শিউলির গাড়িতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সেলিম বেপারী নামে একজন গাড়িচালক নিহত হওয়ার ঘটনায়। ১৯ জুন রাতে মহাখালী উড়াল সড়কে বেপরোয়া গতির গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন সেলিম বেপারী। দুর্ঘটনার সময় এমপির ছেলে শাবাব চৌধুরী গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান। এমপি একরামুল করিম চৌধুরী শুরু থেকেই দাবি করেন দুর্ঘটনার সময় তার ছেলে গাড়িতে ছিলেন না। পরে মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতিতে ২০ লাখ টাকায় এ ঘটনার সমঝোতা হয়। এমপির পক্ষ থেকে ২৪ জুন এ অর্থ সেলিম বেপারীর স্ত্রী জায়না বেগমের ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিমাসে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এমপি।

জানা যায়, রাজধানীতে সাধারণত যেসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটে তার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় এ লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বাস, ট্রাক ও পাঠাওয়ের চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে তাদের আচরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা হয়। এ ছাড়া নিজের ও গাড়ির ফিটনেস না থাকলে গাড়িতে উঠতে নিষেধ করা হয়েছে।

ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের ডিসি প্রবীর কুমার রায় বলেন, সাধারণত যেসব কারণে দুর্ঘটনা হয় সে ব্যাপারে ছবিসহ বাসচালকদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন টার্মিনালে তাদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

রাজীব মারা গেলেও তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি :৩ এপ্রিল কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের বাসের প্রতিযোগিতায় হাত হারান তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। রাজীবের খালা জাহানারা বেগম বলেন, পুলিশ এখনও চার্জশিট দাখিল না করায় আমরা হতাশ। ক্ষতিপূরণও মেলেনি। প্রথমে সবাই এগিয়ে এলেও এখন সবাই ভুলতে বসেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার এসআই আফতাব আলী জানান, বিআরটিসি বাসের চালক ওয়াহিদ ও স্বজন পরিবহনের বাসের চালক খোরশেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে দুই বাসের চালকের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। পাল্লা দিতে গিয়েই এ দুর্ঘটনা ঘটে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে। চার্জশিট প্রস্তুতির কাজ চলছে।

এদিকে রাজীবের পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে ৪ এপ্রিল রিট করেন এক আইনজীবী। পরে রাজীবের পরিবারকে কেন এক কোটি টাকা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। পরে ২২ মে রাজীবের দুই ভাই মেহেদী হাসান ও হৃদয় হোসেন আবদুল্লাহকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আতিকুন্নেছার পরিবারকে মামলা প্রত্যাহারে চাপ :২৪ মে আবদুল্লাহপুরে বিআরটিসির বাসের চাপায় আতিকুন্নেছা (৫০) নামে এক নারীর বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়। এ ঘটনায় তার পরিবার চালককে আসামি করে উত্তরা-পশ্চিম থানায় মামলা করে। সেই চালক এখনও গ্রেফতার হয়নি।

আতিকুন্নেছারা স্বামী রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা প্রত্যাহারে চালকের পরিবার ও সরকার দলীয় এক নেতা চাপ দিচ্ছেন। ৭ জুলাই মিরপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে বলেন, 'মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। চালক গরিব মানুষ। মামলা করে লাভ কী।' মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি নন রফিকুল। তিনি জানান, ইতিমধ্যে আতিকুন্নেছার চিকিৎসায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি। ঘটনার পরের দিন হাসপাতালে রোগীকে দেখতে গেলেও পরে বিআরটিসির পক্ষ থেকে আর কেউ খোঁজ নেয়নি। আতিকুন্নেছার বাসা উত্তরায়। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

গ্রেফতার হয়নি মঞ্জিল পরিবহনের চালক :হানিফ ফ্লাইওভারে ১৭ মে মঞ্জিল পরিবহন ও শ্রাবণ সুপার নামে দুটি যাত্রীবাহী বাসের প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে প্রাণ হারান মোটরসাইকেল আরোহী নাজিম উদ্দিন। ঘটনার পরপরই শ্রাবণ সুপার বাসের চালক ওহিদুল ও মঞ্জিল পরিবহনের হেলপার কামালকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে নিহতের পরিবার। ঘটনার দায় স্বীকার করে ওহিদুল ও কামাল ৩০ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার অপর আসামি মঞ্জিল পরিবহনের ওই বাসের চালক নবী এখনও গ্রেফতার হয়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও যাত্রাবাড়ী থানার এসআই কামাল হোসেন বলেন, নবীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এরপরই চার্জশিট প্রস্তুতির কাজ শুরু হবে।

নিহত নাজিমের স্ত্রী সাবরিনা ইয়াসমিন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর ভাড়া বাসা ছেড়ে দুই সন্তানকে নিয়ে শ্যামপুরে বাবার বাসায় উঠেছেন। বড় মেয়ে নুসরাত জাহান মুন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং ছোট মেয়ে ইসরাত জাহান নূরের বয়স দুই বছর। গৃহিণী সাবরিনা বলেন, আয়ের কোনো উৎস নেই। কী করে বাকি জীবন চলবে বুঝতে পারছি না। তিনি আরও জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে কোটি টাকা কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তবে কারও কাছ থেকেই অর্থ সহায়তা পাইনি।

ধারা বদলালেও মেডিকেল সনদের জন্য আটকে আছে চার্জশিট :পঙ্গু হওয়া রাসেল সরকারের ঘটনায় ২৭৯ ও ৩৩৮/ক ধারায় যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করা হয়। রাসেলের ভাই আরিফ সরকার বাদী হয়ে গ্রিনলাইনের চালক কবির হোসেনকে আসামি করে মামলাটি করেন। শুরু থেকে বাদী পক্ষের অভিযোগ ছিল, তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে গ্রিনলাইনের চালক ইচ্ছে করে ঠাণ্ডা মাথায় রাসেলের পায়ের ওপর গাড়ি তুলে পালিয়ে যাচ্ছিল। দু'জন প্রত্যক্ষদর্শী পিছু নিয়ে পুলিশের সহায়তায় গ্রিনলাইনের চালককে আটক করে। ওই ঘটনায় যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা 'হত্যাচেষ্টা'র শামিল বলে গণ্য। তাই শুরুতে যে ধারায় মামলা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা যায়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার ধারা সংযোজন করতে আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়। সেই আলোকে এ মামলায় এখন ৩২৬ ও ৩০৭ ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

রাসেলের ভাই আরিফ সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত ভাইয়ের চিকিৎসায় ১৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। রাসেল যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত সেই পিআর এনার্জি ও পরিবারের সদস্যরা মিলে চিকিৎসার ব্যয় বহন করেছেন। গ্রিনলাইন পরিবহন এক টাকাও দেয়নি। ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তারা এক প্রকার নিঃস্ব।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও যাত্রাবাড়ী থানার এসআই শাহিদ হাসান বলেন, ৩২৬ ধারা যুক্ত হওয়ায় আহতের চিকিৎসা সনদ ছাড়া চার্জশিট দেওয়ার সুযোগ নেই। চিকিৎসা সনদ পেলেই চার্জশিট দেওয়া হবে।

নার্সের পায়ের ওপর বাসের চাকা :ঝুমুর আক্তার রাখি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নার্স হিসেবে কর্মরত। ১৪ জুলাই রাতে ডিউটি শেষে শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির বাসায় ফেরার উদ্দেশে গুলিস্তানে যান। রাত সোয়া ৮টার দিকে গুলিস্তানে মহানগর নাট্য মঞ্চের পশ্চিম-উত্তর পাশে মালঞ্চ ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের একটি বাস তাকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি পড়ে যান এবং ডান পায়ের ওপর দিয়ে বাসের চাকা চলে যায়। থেঁতলে যায় তার পায়ের পাতা। তিনি বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। ১৯ জুলাই অস্ত্রোপচার করে তার ডান পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় বাসটির চালক শাহেদকে আসামি করে পরদিনই পল্টন থানায় মামলা করেন রেখার স্বামী সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে বাসের মালিকপক্ষ কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পল্টন থানার এসআই রহমত আলী বলেন, ১৫ জুলাই অভিযুক্ত চালক শাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাসটিও জব্দ আছে।

তিন মাসেও সুস্থ হননি আয়েশা :৫ এপ্রিল নিউমার্কেট এলাকায় দুই বাসের প্রতিযোগিতার মাঝখানে পড়ে গুরুতর আহত হন গৃহবধূ আয়েশা খাতুন (২৫)। তিনি বর্তমানে সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসাধীন। হাঁটা-চলার মতো অবস্থা তার নেই। কোমরের নিচ থেকে দুই পা পর্যন্ত অবশ হয়ে আছে। তার স্বামী তানভির আহমেদ তাহের জানান, আরও একটি অপারেশন করা লাগবে। চিকিৎসার পেছনে তিন মাস ধরে তার অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। হাইকোর্ট থেকে বাস কর্তৃপক্ষকে রোগীর চিকিৎসার খরচ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। ঘটনার কয়েকদিন পরই বাসের চালক জামিনে বেরিয়ে গেছে। এমনকি মামলার চার্জশিটও দেওয়া হয়নি।

জাবির সাবেক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার নেই :১ জুলাই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে বসুমতি পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র এসএম শাহরিয়ার সৌরভ ওরফে সেজান (২৮) নিহত হন। তিনি মিরপুর ডিওএইচএচের বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে দক্ষিণখানের আশকোনার উদ্দেশে বের হওয়ার পর দুর্ঘটনার শিকার হন। ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি সাহান হক বলেন, এ ঘটনায় মামলার তদন্ত চলছে। চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষ হলেই চার্জশিট দেওয়া হবে।

http://samakal.com/bangladesh/article/18071222