২০ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ১০:২৮

নিত্যপণ্যের মূল্য কমছে না

কুরবানির ঈদ আসতে এখনও এক মাস বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে রাজধানীতে হঠাৎ করেই মসলাজাতীয় পণ্যের বাজার চড়া। মসলাভেদে প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এনিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমছে না। অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডিমের দাম। বর্তমানে পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে ডিমের দাম এক মাসের ব্যবধানে ডজনে বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। মাসখানেক আগে ৭০ টাকার নিচে বিক্রি হওয়া ডিমের ডজন এখন ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে চড়াদামে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম এখনো চড়াই রয়েছে। বিভিন্ন বাজারে কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা। সবজির বাজারেও কিছুসংখ্যক সবজির দাম কমলেও বেড়েছে কয়েকটির দাম।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি করতে দেখা যায় ১৮৫০ টাকা থেকে ২০০০ টাকায়। অথচ কিছুদিন আগেও প্রতিকেজি এলাচ ১৫৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে যা গত সপ্তাহে ছিল ২১০ টাকা। জিরা টার্কি ৪১০ ও ইন্ডিয়ান জিরা ৩১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। টার্কি জিরা গতসপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকায়, ইন্ডিয়ান জিরা বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকায়। আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা থেকে ১১০ টাকা, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে এটি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি দরে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১১০ টাকায় অথচ গত সপ্তাহে এটি বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকার মধ্যে।
এদিকে কমছে না নিত্যপণ্যের দাম। ডিমের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। বৃদ্ধি পাওয়া কাচাঁমরিচসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও কমছে না। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজায় ডিমের ডজন বিক্রি হয় ৬৫-৭০ টাকায়। তবে ঈদের পর ডিমের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। আর শেষ সপ্তাহে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ৫-৭ টাকা। এতে এক ডজন ডিমের দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকায়। খুচরা দোকানে ডিমের দাম আরও বেশি।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়তে মরিচের সরবরাহ কম, যে কারণে দাম চড়াই রয়েছে। গত সপ্তাহে ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম একই রয়েছে। আর এক পোয়ার (২৫০ গ্রাম) হিসাবে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।

মরিচের এমন দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. জব্বার বলেন, বাজারে এখন মরিচের অভাব নেই। তবে দাম একটু বেশি। অবশ্য এখন মরিচের ঝাল বেশি। কারণ এখনকার সব মরিচই বাত্তি (পরিপক্ব)।
একইভাবে বেড়েছে অন্যান্য সবজির দাম। এ বাজারে কাঁচা বাজারে দেখা গেছে, প্রতিকেজি উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০-১৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, প্রতিকেজি শিম ২৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কচুর ছড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি পিস ফুলকপি ৭০ টাকা ও বাঁধা কপি ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

ইয়াছিন আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সবজির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো সবজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সবজি বিক্রেতা মো. আলম বলেন, এখন সবজির ভরা মৌসুম না হওয়ায় পাইকারি বাজারে দাম বেশি। পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে।
মাছের বাজারে প্রতিকেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকায় (আকারভেদে), রুই ২৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, পাঙাস ১৬০ টাকা, শিং ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, কৈ (দেশি) ৮০০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা, পাবদা ৭০০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, ইলিশ (৯০০ গ্রাম) জোড়া ৩০০০ টাকা, ইলিশ (সোয়া কেজি) প্রতিপিস ২৫০০ টাকায়।
এছাড়া প্রতিকেজি মুরগি (বয়লার) ১৮০ টাকা, লেয়ার ২৪০ টাকা, গরুর গোশত ৫২০ টাকা, খাসি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে মোটা স্বর্ণা চালের দাম কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৪৮ টাকা। পাইজাম ৫০ থেকে ৫২ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা দরে।

http://www.dailysangram.com/post/338639