১৮ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ৪:৪০

রডের দাম প্রতি টনে ১৫ হাজার সিমেন্ট বস্তাপ্রতি ৪০-১০০ টাকা বেড়েছে

দেশে রড সিমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। গত এক বছরের ব্যবধানে প্রতি টন রডের দাম বেড়েছে ১৫ হাজার টাকা। আর সিমেন্টের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৬০ থেকে ১০০ টাকা। রড সিমেন্টের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। দাম বাড়ার চিত্র চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া যেন সরকারের আর কোনো কিছুই করার নেই। নির্মাণ সামগ্রীর প্রধান এ দুটি উপাদানের দাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্মাণ শিল্পের সাথে জড়িতরা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক কোম্পানি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছে। এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীরা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও এ খাতের সাথে জড়িত লাখ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। সরকারের সাথে ব্যবসায়ীদের সমঝোতার সুযোগ আছে, কিন্তু শ্রমিকদের তো কাজ না করলে খাবার জুটবে না। ফলে সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা গেছে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এমএস রড ৬০ গ্রেড প্রতিটন বিক্রি হয়েছিল ৫৩ হাজার ৫০০ থেকে ৫৪ হাজার ৫০০ পর্যন্ত। আর এমএস রড ৪০ গ্রেড প্রতিটন বিক্রি হয়েছিল ৪৩ হাজার থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে। এক বছরের ব্যবধানে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে রডের দাম। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে রডের দাম বাড়ায় চলতি মাসে এমএস রড ৬০ গ্রেড প্রতিটন বিক্রি হচ্ছে ৬৬ হাজার থেকে ৬৮ হাজার টাকায়। আর এমএস রড ৪০ গ্রেড প্রতিটন বিক্রি হচ্ছে ৫৭ হাজার থেকে ৫৮ হাজার টাকায়। টিসিবির হিসাবেই একবছরে বেড়েছে টনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা। যা গত এক বছরে বেড়েছে যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ ও ২৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বাস্তবে রাজধানীর কোনো কোনো বাজারে এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রড।

দেশে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এমএস রড ও ইস্পাত সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেউলিয়া হওয়ার সম্মুখীন। ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এমন অভিযোগ করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই)। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তাদের দাবি মার্কিন ডলারের দাম ও রড তৈরির কাঁচামালে খরচ ৩ শতাংশ বেড়েছে। এই অজুহাতে ২৫ শতাংশ দাম বাড়ানো অযৌক্তিক। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হয়নি। এরপরও কয়েক দফা বেড়েছে রডের দাম।
জানা যায়, অন্যান্য খাতের ন্যায় এখাতও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এবং বাজার নজরদারির অভাবে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে হু হু করে বেড়েছে রডের দাম। মূলত গত বছরের ডিসেম্বর থেকে রডের দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর প্রতিমাসে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে রডের দাম। সবচেয়ে বেশি বাড়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে। বিশ্ববাজারে রড তৈরিতে ব্যবহৃত কাচা মালের দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে একমাসে বাড়ানো হয় টনপ্রতি ৯ হাজার টাকা। সব মিলে মার্চ মাস শেষে এসে ৬০ গ্রেড প্রতিটন রডের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ থেকে ৭২ হাজার টাকায়। আর ৪০ গ্রেড রড বিক্রি হয় প্রতিটন ৫৭ হাজার থেকে ৭৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। সাত আট মাসের ব্যবধানে ব্যবসায়ীরা সব রকম রডের দাম টনপ্রতি ১৯ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেয়। আর সরকার তা দেখে না দেখার ভান ধরে। রডের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির খবরে যখন সকল মহল থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ আসতে থাকে তখন সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকে বসেন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেও তেমন সফলতা আসেনি। সরকারের দুই মাসের প্রচেষ্টায় দাম কমেছে মাত্র তিন থেকে চার হাজার টাকা। প্রতি টন রডে ১৯ হাজার টাকা বাড়িয়ে চার হাজার টাকা কমনো তামাশা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা অতি দ্রুত রডের দাম কমাতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় সামাজিক বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

দাম বাড়ার ব্যাপারে রড ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি ২০১৮-৭-১৯ অর্থবছরের বাজেটে তাদের কিছু প্রস্তাবনা ছিল কিন্তু তা মানা হয়নি। এ কারণে রডের দাম বাড়াতে তারা বাধ্য হয়েছেন। রডের দাম এখন কিছুটা কমলেও আগামী শীত মৌসুমে তা বেড়ে যাবে বলে মনে করেন ইস্পাত খাতের উদ্যোক্তারা।
তবে বাজেটে দুটি কাঁচা মালে শুল্ক ছাড় দিলেও তাতে রডের দামে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ খাতের রাসায়নিক ফেরো এলয়ের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫ শতাংশ কমিয়েছেন। অন্যদিকে স্পঞ্জ আয়রনের সুনির্দিষ্ট শুল্ক টনপ্রতি ২০০ টাকা কমিয়ে ৮০০ টাকা করেছেন। এ সুবিধার ফলে টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কমতে পারে। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের দাবি, কাঁচামালের মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাংকঋণের সুদের উচ্চহার এবং চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্বই রডের মূল্যবৃদ্ধির কারণ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অটো-রিরোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও আনোয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানোয়ার হোসেনও একমত পোষণ করে বলেন, বাজেটে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি বলেছেন, বর্তমানে পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। প্রতি টন রডের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় এখন ৭৩-৭৪ হাজার টাকা।
গত এপ্রিলে রডের দাম যখন ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন রড উৎপাদন খরচের একটি হিসাব তৈরি করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসে প্রতি টন রডের উৎপাদন খরচ ছিল ৫৭ হাজার ৭৫৮ টাকা।

এদিকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির কারণে গ্যাসের দাম বাড়লে রডের উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মো. মাসাদুল আলম বলেন, প্রতি টন রডে গ্যাসের দাম বাবদ ব্যয় হয় ৭ হাজার টাকার মতো। এখন শিল্পে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৭ টাকা। নতুন যেসব সংযোগ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে প্রতি ইউনিটের দাম ১৪ টাকা ৯০ পয়সা ধরা হচ্ছে। এতে প্রতি টন রডের উৎপাদন ব্যয় ৭ হাজার টাকার মতো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
দেশের নির্মাণখাতের উদ্যোক্তাদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) অভিযোগ অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি চক্র পরস্পর যোগসাজশ করে রডের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএসিআইয়ের সভাপতি মুনীর উদ্দিন আহমেদ একটি তথ্য তুলে ধরে বলেন, ২৭ মার্চ সকালে টন প্রতি এমএস রডের দাম ছিল ৬৩ হাজার টাকা আর ওই দিন বিকালে টন প্রতি রডের দাম দাঁড়ায় ৭২ হাজার টাকা। এতেই প্রমাণ হয়, একটি চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রডের দাম বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশের এমএস রড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এককভাবে কোনো নিয়মনীতি না মেনে অস্বাভাবিক এবং অব্যাহতভাবে রডের দর বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টনপ্রতি রডের দর ছিল ৪৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার। কিন্তু এই কয় মাসে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে রডের মূল্য। কাঁচামালের দাম, পরিবহণ খরচ, ডলারের দাম, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধি ও চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস বিলম্বের কারণে রডের দাম সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ শতাংশ বাড়তে পারে; কোনো অবস্থাতেই ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে না। আবার রডের সিন্ডিকেটের দেখাদেখি সিমেন্ট কোম্পানিগুলোও ব্যাগপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু রডের মূল্য বৃদ্ধিতে তাদের ২৫ শতাংশ লোকসান হচ্ছে জানিয়ে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। আমরা আশা করছি, সরকার অতি দ্রুত পিপিআর অনুযায়ী আমাদের প্রাইস এডজাস্ট ক্লজ-২৭.৯ কার্যকর করবেন।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, গত এক বছরে বিভিন্ন কোম্পানির ৫০ কেজি ওজনের সিমেন্ট বস্তা প্রতি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কোনো কোনো কোম্পানি সিমেন্ট আর বেশি বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় ঠেকেছে। ৬ মাস আগে কয়েকটি কোম্পানির সিমেন্ট প্রতি বস্তা বিক্রি হতো ৩৬০ থেকে ৩৯০ টাকায়। বর্তমান বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
বিএসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী এ পেশার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ জড়িত। নির্মাণসামগ্রীর দর বাড়ার ফলে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে প্রচুর জনবল কর্মহীন হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই কর্মহীন হয়ে পড়বে লাখ লাখ নির্মাণ শ্রমিক। এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। কেননা ব্যবসায়ীরা কাজ বন্ধ করে দিলে সরকারের সাথে তাদের সমঝোতার সুযোগ আছে, কিন্তু শ্রমিকদের তো কাজ না করলে খাবার জুটবে না। ফলে সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি গৃহায়ন শিল্পের নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনও করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। তারা রড সিমেন্টের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, রড সিমেন্টের মূল্যবৃদ্ধি শুধু আবাসন খাতকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, এর সঙ্গে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের ব্যয়ও বাড়াবে, উন্নয়ন কাজকে বাধাগ্রস্ত করবে।

রিহ্যাবের নেতারা বলেন, হঠাৎ করে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক আবাসন ব্যবসায়ী নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ করে দিতে চাইছেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। দুর্ভোগে পড়বেন ক্রেতারা। বড় ক্ষতির মুখে পড়বে আবাসন খাত। তারা বলেন, বর্তমানে সিমেন্টের ওপর কোনো ধরনের কর আরোপ করা হয়নি। তাহলে এই মূল্যবৃদ্ধি কেন? রড-সিমেন্টের দাম আগের অবস্থায় না ফিরলে ফ্ল্যাটের দাম ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে ইংলিশ রোড ঘুরে রড ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রডের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে তারা বলেন, রডের দাম বাড়ার কারণে আমাদের বিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুধু এখানে নয় রাজধানীর অধিকাংশ রড ব্যবসায়ীরা একই কথা জানিয়েছেন। তারা বলেন, ব্যবসার অবস্থা ভালো না। আমাদের আশঙ্কা বিক্রি আরও কমে যেতে পারে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একজন ঠিকাদার বলেন, উন্নয়ন কাজে টেন্ডার শিডিউলে যে দাম ধরা হয়েছিল নির্মাণ সামগ্রির দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এখন নতুন শিডিউল না করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এ জন্য কাজও বন্ধ রাখা হয়েছে।
কঞ্জুমার এসোসিয়েশন ক্যাবের বলছেন, বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে রডের দাম বাড়ানো হচ্ছে। ফলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে যারা অবকাঠামো নির্মাণ করছে তাদের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। যারা বাড়িঘর তৈরি করছে তাদেরও ব্যয় বাড়ছে। আর ভাড়াটিয়াদের এর ভার বহন করতে হবে। তাই সরকারের উচিত দাম বৃদ্ধির বিষয়টি এখনই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া। যাতে করে রড ও সিমেন্টের দামে লাগাম টানা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিডব্লিউ রিসার্চ প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ সিমেন্ট মার্কেট রিপোর্ট ২০১৭’ অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে সিমেন্টের ব্যবহার ৩৫ শতাংশ। ব্যক্তি উদ্যোগে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার ৪০ শতাংশ। আবাসন খাতে ২৫ শতাংশ। দাম বাড়ার প্রভাব পড়বে এই তিনটি খাতে।

বর্তমানে দেশে সিমেন্ট উৎপাদন করছে ৩৫টি কোম্পানি। এগুলো হলো শাহ সিমেন্ট, বসুন্ধরা সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, হোলসিম সিমেন্ট, সেভেন সার্কেল সিমেন্ট, ইউনিক সিমেন্ট (ফ্রেশ), আনোয়ার সিমেন্ট, টাইগার সিমেন্ট, ইস্টার্ন সিমেন্ট, মির সিমেন্ট, আকিজ সিমেন্ট, মেট্রোসেম সিমেন্ট, উত্তরা সিমেন্ট, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ছাতক সিমেন্ট, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, রয়েল সিমেন্ট, আরামিট সিমেন্ট, এনজিএস সিমেন্ট, ডায়মন্ড সিমেন্ট, এস আলম সিমেন্ট, মোস্তফা হাকিম, কনফিডেন্স সিমেন্ট, মেঘনা সিমেন্ট, মংলা সিমেন্ট, দুবাই বাংলা সিমেন্ট, অলিম্পিক সিমেন্ট (অ্যাংকর), আমান সিমেন্ট, দোয়েল সিমেন্ট, আলহাজ সিমেন্ট, সালাম সিমেন্ট ও পদ্মা সিমেন্ট।

http://www.dailysangram.com/post/338269