৯ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ৩:৫৪

চিংড়ি রফতানিতে আয় কমেছে

আন্তর্জাতিক বাজারে অসম প্রতিযোগিতা ও দেশের বাজারে উৎপাদন কমাসহ নানা কারণে সংকটে পড়েছে দেশের চিংড়ির রফতানি বাজার। এর ফলে ধারাবাহিকভাবে কমছে হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনাখ্যাত এ খাতের রফতানি আয়। গেল তিন বছরেই চিংড়ির রফতানি আয় কমে চলেছে। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরেও কমেছে সাড়ে আট শতাংশের মতো।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফিশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সূত্র জানায়, গত চার বছরের হিমায়িত চিংড়ি রফতানির নি¤œমুখী রয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪৭ হাজার ৬৩৫ টন চিংড়ি রফতানির বিপরীতে ৫৫ কোটি ডলার আয় হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে রফতানি কমতে থাকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪৪ হাজার ২৭৮ টন চিংড়ির বিপরীতে ৫১ কোটি ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪০ হাজার ২৭৬ হাজার টন চিংড়ি থেকে ৪৫ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৯ হাজার ৭০৬ টন চিংড়ি রফতানি করে ৪৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় হয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে এ খাতের আয় আরও চার কোটি ডলার কমে ৪০ কোটি ৪৭ লাখ ডলারে নেমে আসে। ইপিবির সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শেষ হওয়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ আয় এ বছর ৪৫ কোটি ডলারের চিংড়ি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। কিন্ত লক্ষ্যের চেয়ে ৯.১৮ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের চেয়ে আট দশমিক ৩৭ শতাংশ কম আয় হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতের আয় কমার প্রধান কারণের একটি হচ্ছে প্রতিযোগী দেশগুলো কম দামের চিংড়ি উৎপাদন করে বাজারে কম দামে সরবরাহ করছে। এতে এদেশের বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। মূলত গলদা ও বাগদা চিংড়ি এদেশের ব্যাপক চাষ হয়। এটি মানেও উন্নত, দামও বেশি। কিন্তু এদেশের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিযোগী ভারত ও ভিয়েতনাম বিকল্প জাত ভেনামি চাষ করে। রফতানিকারকরা জানান, ভারত ও ভিয়েতনামে অত্যাধিক পরিমাণে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদন হয়। বাগদা চিংড়ির চেয়ে ভেনামি চিংড়ির উৎপাদন খরচ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম হয়। ফলে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির রপ্তানি মূল্য যেখানে প্রতি পাউন্ড সাত ডলার, সেখানে ভেনামি চিংড়ি রপ্তানি হয় ৫ ডলারে। পাউন্ডে পার্থক্য দুই ডলার। পাউন্ডে দুই ডলার কম হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা ভেনামির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যার কারণে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির চাহিদাও কমছে। এর বিকল্প হচ্ছে দেশে বাগদার উৎপাদন খরচ কমানো অথবা এদেশে ভেনামি চিংড়ি চাষ শুরু করা। তবে, বাংলাদেশে ভেনামি চিংড়ি উৎপাদনে সরকারিভাবে অনুমতি না থাকায় উৎপাদনও করতে পারছে না চাষিরা। ভেনামি চাষে পরিবেশের ক্ষতি হবে এমন আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে

https://www.dailyinqilab.com/article/140714