কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তারেকের মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে সুস্থ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে তার পরিবার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
তরিকুলকে তত্ত্বাবধায়ন করা চিকিৎসক ডা. সাঈদ আহমেদ জানান, তরিকুলের ডান পা মারাত্মকভাবে ভেঙেছে। ওর পিঠের এক্স-রে করিয়েছি আমরা। কোমরের ঠিক উপরে মেরুদন্ডের হাড় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ভেঙে গেছে বলা যায়। ভারী কিছুর আঘাতে এমনটি হয়েছে। অপারেশন করার প্রয়োজন হবে কিনা সেটা রিপোর্ট হাতে এলে জানা যাবে। তবে দীর্ঘসময় তাকে চিকিৎসা নিতে হবে।
তরিকুল জানান, কোমরের ঠিক উপরের জায়গায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছেন তিনি। ক্রমে তা বাড়ছে। একটু নড়াচড়া করলেই মনে হচ্ছে কেউ ভারী কিছু দিয়ে সেখানে আঘাত করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের হাতুড়ির আঘাতে মেরুদন্ডের হাড়টি ভেঙেছে বলে ধারণা তরিকুল ও তার সহপাঠীদের।
এদিকে গত ২ জুলাই হামলার পর পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থেকেও তরিকুলের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। শরীরজুড়ে প্রচন্ড ব্যাথা। বাম পায়ে বড় কোনো আঘাত না থাকলেও ডান পা নড়াচড়া করলে পুরো শরীর ব্যাথা করছে। হাসপাতালের বেডে উঠে বসতেও পারছেন না তরিকুল। বর্তমানে তিনি রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় রয়েল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তরিকুল বলেন, শরীরে খুব ব্যথা। মেডিসিন নিচ্ছি নিয়মিত। প্লাস্টার খোলা হয়েছে, আমার ডান হাটুর নীচে থেকে একদিকে হেলে গেছে। মনে হচ্ছে আমি কোনোদিনও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারব না। মেরুদন্ডের হাড়েও খুব ব্যথা। বসতে পারছি না। কোমরের ঠিক উপরের দিকে ব্যাথা। অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করছি।
হাসপাতালে তরিকুলের সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার পর তরিকুলকে রয়েল হাসপাতালে আনা হয়। এখানে অনেকগুলো পরীক্ষা করানো হয়েছে। সবগুলোর রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। মেরুদন্ডের হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এজন্য দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রয়োজন হবে তার।
গত ২ জুলাই বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রাবির প্রধান ফটকের সামনে পতাকা মিছিল বের করলে সেখানে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। তারা রামদা, হাতুড়ি, লোহার পাইপ, বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় তরিকুলকে।
