৮ জুলাই ২০১৮, রবিবার, ৯:২৯

চলতে ফিরতে দেখা

একদল অবিবেচকের কাহিনী

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী

গত কয়েক দিনে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা একদল অবিবেচকের অমানবিক কর্মকাণ্ড দেখলাম। তারা নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের ওপর যে মধ্যযুগীয় বর্বরতা নিয়ে হামলা চালাল, তার নজির শুধু তারাই। এর আগে গত এপ্রিলে এই ছাত্রদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছিল। শুধু তারাই নয়, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল পুলিশ বাহিনী। খুব কাছে থেকে পুলিশের টিয়ার শেলে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিক। সে আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নয়টি কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্রুত পরীক্ষা নেয়া। এর সাথে রাজনীতি ছিল না। অন্য কারো সাথে তাদের বিরোধও ছিল না। এটা তো খুব স্বাভাবিক যে, একজন শিক্ষার্থী যথাসময়ে পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে চাইবে, প্রবেশ করতে চাইবে কর্মজীবনে। কিন্তু ছাত্রলীগ ও পুলিশ তাদের যেভাবে মারধর করল সেটা কল্পনার অতীত ছিল। কিন্তু আমরা কল্পনা করতে পারি বা না পারি, বাংলাদেশ এখন এমনি মগের মুল্লুক।
গত প্রায় তিন মাস ধরে শিক্ষার্থীরা একটি নতুন আন্দোলন করছে। সে আন্দোলন হলো কোটা সংস্কার। সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ চাকরি দেয়া হয় কোটার ভিত্তিতে। ফলে মেধাবীরা ক্রমেই চাকরি জীবন থেকে পিছিয়ে পড়ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল এই ৫৬ শতাংশ কমিয়ে এনে তাকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক। সে দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন দেশের শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী সমাজ এবং সমাজের সচেতন লোক। কিন্তু তাতে কোনো ফায়দা হয়নি। সরকার কোটা সংস্কারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জারিই রেখেছিল। কিন্তু আন্দোলন থেমে থাকেনি। শত নির্যাতন সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে গেছে। সে আন্দোলন শুধু ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়কেন্দ্রিক ছিল না, আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ছাত্রদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছিল। তাতে তারা মোটেও দমে যায়নি। কোটা সংস্কারের দাবি অব্যাহত থাকে

http://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/331061/