সুরমা নদী সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে বিস্তৃতি ঘটেছে
৬ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার, ১:০১

বন্যায় মানুষ দিশেহারা

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-তিস্তা-ধরলায় পানি বাড়ছেই

ভারতের গজলডাবা ব্যারেজের সবগুলো গেইট খুলে দেয়ায় প্রচÐ গতিতে হু হু করে পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতোমধ্যেই তিস্তা অববাহিকার কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্দশায় পড়েছে লাখো মানুষ। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে ব্রক্ষপুত্র ও যমুনায় পানি বৃদ্ধিতে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে এবং ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে অনেক গ্রাম। বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরে শুরু হয়েছে যমুনার ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনে হুমকিতে পড়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি স্কুল, মাদরাসা ও সেতু। জীবন বাঁচাতে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন অনেকেই।

গজলডোবার ‘গজব’ ব্যারেজের গেইট খুলে দেয়ায় মধ্য আষাঢ়ে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে লালমনির হাট, নিলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর জেলার কয়েকটি উপজেলার শত শত গ্রাম। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের মানুষ পানির মধ্যেই বসবাস করছে। তলিয়ে গেছে ফসলী জমি বীজতলা। গ্রামীন যোগাযোগ ভেঙ্গে পড়ছে, হুমকির মুখে অবকাঠামো।

উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেইট। ইতোমধ্যে নিলফামারীর ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষিটারি ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ। শঙ্করদহ গ্রামের ইছালী চরে বামতীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৫ কিলোমিটার এলাকায়। নিরাপদে সরে যাচ্ছে মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, বন্যা আর ভাঙ্গনের ভয়ে দিশেহারা মানুষ। শুকনো মৌসুমে বাঁধ সংস্কার না করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। লালমনিরহাটে তিস্তার নদীর পানি দোয়ানী পয়েন্টে, রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শত শত চর ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে পানির নীচে।

চট্টগ্রাম থেকে শফিউল আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে জানা গেছে, অতিবৃষ্টিতে উজান থেকে অব্যাহত রয়েছে ঢলের প্রবাহ। উত্তরের তিস্তা ও ধরলা নদী বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেছে। ঢল বানের চাপ কমাতে উজানে ভারত যদি গজলডোবা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেয় তাহলে ভাটিতে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে অতীতের মতো ভয়াবহ। উজানের তীব্র ঢলে কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি বেড়েই চলেছে। তাছাড়া উত্তরাঞ্চলের অন্যতম দুই নদী তিস্তা ও ধরলা বিপদসীমা অতিক্রম করে গতকাল বিকেল নাগাদ। অন্যদিকে উজানের ঢলে আপার মেঘনা অববাহিকায় পানি বৃদ্ধির ফলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপরে আরও বেড়ে গেছে। এতে করে সিলেট বিভাগের বিশেষত নিম্নাঞ্চলে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, দেশের অন্যতম প্রধান অববাহিকার ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য নদ-নদীতে উজানের পানি বৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরের জনপদে ব্যাপক আকারে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। কুড়িগ্রামের ধরলা ও গাইবান্ধায় বৃদ্ধি পাচ্ছে ঘাগট নদীর পানি। বৃহৎ অববাহিকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মেঘনা অববাহিকায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃহত্তর সিলেটের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির মুখে রয়েছে। সুরমা তিনটি স্থানে, কুশিয়ারা তিনটি স্থানে, পুরাতন সুরমা ও সোমেশ্বরী একটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পানি গতকাল আরও বৃদ্ধি পায়।
পাউবো সূত্র জানায়, দেশের নদ-নদীগুলোর ৯৪টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল পানি বৃদ্ধি পায় ৬৯ পয়েন্টে, হ্রাস পায় ২৪টিতে, বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ৯টি পয়েন্টে। বুধবার পানি বৃদ্ধি পায় ৭৭ ও হ্রাস পায় ১৬ এবং বিপদসীমার উপরে ছিল ৯টি পয়েন্টে। বিভিন্ন প্রধান নদ-নদীর প্রবাহ ও পূর্বাভাসে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা এবং আপার মেঘনা অববাহিকার নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি অববাহিকায় নদীগুলোর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানি আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর জনপদের ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ঘাগট নদীগুলোর পানি আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীগুলোর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নিম্নাঞ্চলের কতিপয় স্থানে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।

সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, উজানের পাহাড়ী ঢলে ফের বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নি¤œাঞ্চল। ৮টি পয়েন্টে পানি নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে সর্বনাশ ঘটছে বিশেষ করে গ্রামীন জনপদের। হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামীন অবকাঠামো। বন্যার এ ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তরন নির্ভর করছে ভারত অংশে পাহাড়ী ঢল নিয়ন্ত্রনের উপর। সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, আসাম ও মেঘালয়ে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। বৃষ্টিপাত হবে সিলেট অঞ্চলেও। তাই সুরমা-কুশিয়ারার পানি আপাতত বাড়তেই থাকবে। গত ২৪ ঘন্টায় ভারত অংশে ও সিলেটে তুলনামুলক বৃষ্টিপাত কমলেও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত রয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সিলেটে। সেকারনে সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি ক্রমশ: সমতল বৃদ্ধি ঘটছে। অবনতি-উন্নতির মধ্যে বিরাজ করছে বন্যা পরিস্থিতি। গ্রামীন রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে, কৃষি জমি, বীজতলাও। পাহাড়ী এলাকায় ভূমিধসের শংকা রয়েছে। বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজার হাজার পাথর শ্রমিক। অনেক স্থানে বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে স্কুল-কলেজ। ।

গত জুন মাসের শুরুতে সেই বন্যা ঢলে মৌলভীবাজার ও সিলেটের একাধিক উপজেলা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই দখল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও বন্যার মুখে সিলেট - সুনামগঞ্জ। জুনের শেষ দিকে ব্যাপক বন্যার আশংকা প্রকাশ করেছিল বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র। পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুজ্জামন ভূঁইয়া বলেন, ভারতের অংশে বৃষ্টিপাতের উপর ফলে সৃষ্ট পাহড়ী ঢলের উপর নির্ভর করছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি-অবনতি। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটের ছাতকে ২০০.০ মি:মি, লালাখালে ১২.০ মি:মি, জাফলংয়ে ১১৮.০ মি:মি, সুনামগঞ্চে ৯০.০ মি:মি, সিলেটে ৫৮ মি:মিটার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সুরমা কানাইঘাটে ১৩.৪৬ মিটার, সুরমা সিলেটে ১০.৫৯ মিটার, সুরমা সুনামগঞ্চে ৮.০০ মিটার, সুরমা অমলশীদে ১৫.০১, কুশিয়ারা শ্ওেলায় ১২.৬১ মিটার, কুশিয়ারা শেরপুর-সিলেট ৮.২৭ মিটার, পুরাতন সুরমা সুনামগঞ্জ দিরাইয়ে ৬.৩৭ মিটার, কমলাকান্দা সোমেশ্বরীতে ৬.৫১ মিটার। সমতলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাসও সর্তকীকরন কেন্দ্র তথ্যানুযায়ী উত্তর পূবাঞ্চলের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী সমূহের পানি বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘন্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেট সুনামগঞ্জের নি¤œাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। সিলেটের গোয়াইনঘাটও কানাইঘাট উপজেলা নি¤œাঞ্চল এখন প্লাবিত। টানা বৃষ্টি আর পিয়াইন ও সারী নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী সিলেটের গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, বৃষ্টি তুলনামুলক কম হ্ওয়ায় জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি এলেও, কিন্তু নি¤œাঞ্চলের মানুষের দূর্ভোগ কমছে না। পানিবন্দি হয়ে আছে লাখ লাখ মানুষ। বন্যার পানি বৃদ্ধি হ্ওয়ায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাস্তা সারীঘাট-গোয়াইনঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট তলিয়ে গিয়ে জেলা শহরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়াও জাফলং-গোয়াইনঘাট রাস্তায় পানি উঠে উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ের সাথেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নতুন করে আরও প্রায় ৩ শত হেক্টর জমির ফসল ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে।
খুলনার কয়রা উপজেলা সংবাদদাতা জানান, খুলনার উপকূলীয় জনপদ কয়রা উপজেলার পাউবোর ১৩-১৪/১ ও ১৩-১৪/২ পোল্ডারের বেড়িবাঁধে ২১ টি স্থানে ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে অধিকাংশ বেড়িবাঁধে ফাটল ধরে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারন করার এ সকল এলাকার মানুষ চরম আতংকে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের জোড়শিং,আংটিহারা, গোলখালি, চরামুখা, মেদেরচর,বিনাপানি,উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাববুনিয়া, হরিহরপুর, গাজীপাড়া, কাশিরহাট, হাজতখালি. রত্মারঘেরি, কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা, ঘাটাখালি, হরিণখোলা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, কাছারিবাড়ি, ৬নং কয়রা, ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া, মঠবাড়ি, লোকা, গোবিন্দপুর, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ি,নয়ানি, সরদারঘাট, কাঠালতলা নামক স্থানের বেড়িবাঁধ কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর প্রবল ভাঙনে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষনে এ সকল বেড়িবাঁধের অবস্থা আরো নাজুক আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি জোড়শিং বাজার সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ২ শ ফুট বাঁধ কয়েকদিন আগে শাকবাড়িয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান মিলন,অভিযোগ করে বলেন, অনেক চেষ্টার পর জোড়শিং বেড়িবাঁধ রক্ষায় ঠিকাদার নিযুক্ত হলেও এখনো পর্যন্ত ঠিকাদার কাজ শুরু না করায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধ রক্ষায় দ্রæত পদক্ষেপ নিতে তিনি পাউবো কর্মকর্তাদের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে। উত্তর বেদকাশির গাববুনি বেড়িবাঁধের বেশ কিছু অংশ দফায় দফায় ভেঙে শাকবাড়িয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে বেড়িবাঁধ চিকন হয়ে গেছে। কাশিরহাট বেড়িবাঁধ কপোতাক্ষ নদের প্রবল ভাঙনে বিলীন হয়ে কার্পেটিং সহ প্রায় ২শ ফুট রাস্তার সিংহভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম কোম্পানি বলেন, জরুরী ভিত্তিতে গাববুনি ও কাশিরহাট বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হলে যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। এ ছাড়া কয়রা সদরের গোবরা ¯øুইজ গেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধে কয়েকদিন আগে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় সেখানকার বাঁধের অবস্থা নাজুক আকার ধারন করেছে। কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গোবরা, ঘাটাখালি, হরিনখোলা, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট সহ এখানকার ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি বার বার জানানো সত্বেও তারা কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। বর্ষা মৌসুমে এ সকল বেড়িবাধ সংস্কার করা না হলে প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ ব্যাপারে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার ভৌমিক বলেন, কয়রার দুটি পোল্ডারের বেড়িবাঁধে বেশ কিছু পয়েন্টে নুতন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েকটি স্থানে ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে। বাকি ঝুকিপুর্ন বেড়িবাধ মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন,কয়রার প্রধান সমস্যা বেড়িবাধ ভাঙ্গন। ভাঙ্গনরোধে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরি ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে জানানো হয়েছে।

https://www.dailyinqilab.com/article/140072