২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ১০:১৮

এক বছরের ব্যবধানে ৪৬ প্রতিষ্ঠানের মুনাফা কমবে ৬ হাজার কোটি টাকা

এক বছরের ব্যবধানে ৪৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিট মুনাফা কমে যাবে। পাঁচ হাজার ৮৫৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসব প্রতিষ্ঠানে নিট মুনাফা হয়েছে ৯ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা। সেখানে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসব প্রতিষ্ঠানের নিট মুনাফা প্রাক্কলন করা হয়েছে তিন হাজার ৬০৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এই মুনাফা কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়েছেÑ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং বিদেশ থেকে বেশি দাম দিয়ে এলএনজি গ্যাস আমদানি করে তা এখানে কম দামে বিক্রি করে। এই কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন(বিপিসি) আগামী অর্থবছরে লোকসান গুনবে।
এসব সরকারি প্রতিষ্ঠানে যে শুধু নিট মুনাফাই কমে যাবে তা-ই নয়, একই সাথে সরকারকে তাদের দেয় লভ্যাংশের পরিমাণও প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। যেমন চলতি অর্থবছরে এসব প্রতিষ্ঠান লভ্যাংশ দিয়েছিল দুই হাজার ৩৫ কোটি টাকা, সেখানে আগামী অর্থবছরে এই লভ্যাংশের প্রাক্কলন করা হয়েছে এক হাজার ২৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের মনিটরিং সেল থেকে প্রকাশিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছেÑ ‘লাভ-লোকসান পরিস্থিতি যে কোনো করপোরেশনের আর্থিক বিশ্লেষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় সব সম্পদ ও ঋণ সরকার অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক যোগান দেয়া হয়ে থাকে। সুতরাং এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সম্পদের ওপর মুনাফার হার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি।’ এতে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ প্রাক্কলিত অর্থবছরে মোট বিনিয়োগের ওপর শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ পরিচালন লোকসান প্রাক্কলন করা হয়েছে। কিন্তু বিগত দুই অর্থবছরে এই প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসান নয়, বরঞ্চ মুনাফা করেছিল। যেমন ২০১৭-১৮ সংশোধিত অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর পরিচালন মুনাফা ছিল শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং এর আগের অর্থাৎ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিনিয়োগের ওপর পরিচালন মুনাফা হয়েছিল দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ।
বাজেট সংক্ষিপ্তসারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অ-আর্থিক পাবলিক করপোরেশনগুলোর (৪৬টি) কর-উত্তর নিট মুনাফা ছিল ৯ হাজার ৩৩৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ সংশোধিত অর্থবছরে কর-উত্তর নিট মুনাফা বৃদ্ধি পেয়ে ৯ হাজার ৪৬৩ কোটি ২৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে ২০১৮-১৯ প্রাক্কলিত অর্থবছরে কর-উত্তর নিট মুনাফা হ্রাস পেয়ে তিন হাজার ৬০৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।
লভ্যাংশ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লভ্যাংশ হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি না পাওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লোকসানের সম্মুখীন হবে। তাই এ বছর প্রতিষ্ঠানটি কোনো লভ্যাংশ প্রদান করবে না।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এসব সরকারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিপিসিকে আগামী অর্থবছরে বিপুল ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন পড়বে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/327683/