নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা শিবিরে অপ্রতুল ত্রাণ সরবরাহের কারণে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তারা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপচেপড়া তুমব্রু খাল পাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এর উপর খাদ্য সংকটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্য সামগ্রীর অভাবে রোহিঙ্গাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বেশকিছু রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হলেও এখনো পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছেন আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।
গত ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্যরেখায় আশ্রয় নেন সাড়ে ৫ হাজার রোহিঙ্গা। তাদের অভিমত, প্রত্যাবাসন শুরু হলে তারা সেখান থেকেই নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন। তবে ত্রাণের অভাবে এখন তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, রেডক্রস গত বছরের আগস্টের পর থেকেই তাদের মাসে দু’বার করে ত্রাণ দিয়ে আসছিল। সর্বশেষ গত ২৯ মে এখানে সবার মাঝে ত্রাণ দেওয়া হয়। এরপর থেকে সংস্থাটি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রোহিঙ্গা শিবিরে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। খাবার সংকটের সঙ্গে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে রোহিঙ্গা শিবিরটি তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাতে হচ্ছে শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের। আরেক রোহিঙ্গা নেতা মৌলভী আরফাত জানান, ঈদুল ফিতরের আগে খাদ্য দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কবে দেওয়া হবে তা-ও কর্তৃপক্ষ বলছে না।
কেন রেডক্রস খাদ্য সহায়তা বন্ধ করেছে তা জানাতে না পারলেও শিবিরের রোহিঙ্গা আবদুল্লাহ ও হাবিবুল্লাহ জানান, ঈদের আগে তুরস্কভিত্তিক একটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থা তাদের শিবিরে কিছু ত্রাণ দিয়েছিল। এরপর থেকেই রেডক্রস খাদ্য সহায়তা বন্ধ রেখেছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘শূন্যরেখার রোহিঙ্গা শিবিরে খাদ্য সংকটের কথা আমিও শুনেছি। ঈদ ছুটির কারণে সহায়তা দিতে হয়তো দেরি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
তবে বান্দরবান রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, ‘খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করার কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। শরণার্থীদের শিবিরে কোনো খাদ্য সংকটও দেখা দেয়নি। খুব শিগগিরই তাদের নিয়মিত খাদ্য সরবরাহের চালান পৌঁছে দেওয়া হবে।’