রাজধানীর প্রায় সব কটি বাজারে এখনও ঈদের আমেজ কাটেনি। তাই সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারও রাজধানীর বাজারে ক্রেতাদের ভিড় ছিল না। আবার পণ্যের সরবরাহও ছিল তুলনামূলক কম। এ কারণে বাজেটের পর আবারও অস্থির হয়ে উঠছে চালের বাজার। একটু বাড়তি দামে সবজিও বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে ঈদের আগে যে আলু প্রতি কেজি ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। একই আলু এ সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে ২৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর প্রায় প্রতিটি বাজারে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা দুই টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৫ টাকা কমেছে। এ ছাড়া ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার, মালিবাগ বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা দেখা গেছে।
মালিবাগ বাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মিল মালিকরা ঈদের আগে বলে দিয়েছেন ঈদের পর চালের দাম বাড়বে। তবে এখনও সব ধরনের চালের দাম তারা বাড়াননি। শুধু মোটা চালের দাম বাড়িয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বাজেটের আগে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি কেজি ৪০-৪২ টাকা বিক্রি হয়েছে। সেই একই চাল শুক্রবার বাজারে ৪৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে রোববার নাগাদ বলা যাবে সব ধরনের চালের দাম বাড়বে না কমবে।
এদিকে ঈদের পর রাজধানীর বাজারে মাংসের দাম ছিল স্থিতিশীল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লাম মুরগির দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। পাকিস্তানি মুরগি আকারভেদে ১৫০-৩০০ টাকা, কক প্রতি পিস ১৫০-৩০০ টাকা, লেয়ার প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৪৭০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের চিকেন মার্কেটের মুরগি বিক্রেতা মকবুল হাসান বলেন, পাইকারি মুরগির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগি কম দামে এনেছি। আর বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশ কম। তাই তুলনামূলকভাবে গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৫ টাকা কমেছে।
এদিকে সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের সবজির দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে আলুর দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আবু আলী বলেন, পাইকারি বাজারে আলুর সরবরাহ কম। তাই বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সবজির সরবরাহ কম থাকায় ৫ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি শসা ও গাজর ৫০-৫৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৪৫-৫০ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁপে বাজারভেদে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া পটোল, বরবটি, ঢেঁড়সের কেজি ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রসুন মানভেদে ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে এবং আদা ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। একই বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা মো. শরিফ আহমেদ জানান, বাজারের অবস্থা ভালো বলা যাবে না। মুরগির দাম কিছুটা কমলেও চালের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। বাজেট পাস হওয়ার আগে ব্যবসায়ীরা এক হয়ে চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়েছে। তাই সরকারের এদিকে আবারও ভালোভাবে নজর দিতে হবে।
মাছের বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে। রুই ও কাতলা প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা গত সপ্তাহে একই দামে বিক্রি হয়েছে। বড় আকারের চিংড়ি প্রতি কেজি এক হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ৭০০ টাকা ও ছোট আকারের ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, কই ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সিলভার কাপ ১০০-১২০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০-১৩০, নলা ১২০-১৩০ টাকা ও সরপুঁটি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।