৯ জুন ২০১৮, শনিবার, ৮:১৯

মুরগির বাজারে অস্থিরতা

বেড়েছে বেগুন ও মরিচের দাম

বাজেট প্রস্তাবের আগ থেকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা এবার রাজধানীতে লক্ষ করা যায়নি। চাল, ডাল, তেল ও চিনিসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদ সামনে রেখে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ২০ টাকা বাড়তিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। মাছ, পেঁয়াজ, রসুনসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

কারওয়ান বাজারের চিকেন মার্কেটের মুরগি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুরগির পাইকারি বাজার কাপ্তান বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণে খুচরা বিক্রেতাদের বেশি দামে মুরগি কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ১০-১৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি মুরগি আকারভেদে ৩৫০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজানের শুরু থেকে মুরগির দাম বাড়তি। আর ঈদকে কেন্দ্র করে আবার নতুন করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম অনেক বেশি। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারে আমিষের চাহিদা পূরণে মুরগির ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু পণ্যটির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুনের দাম কমলেও শুক্রবার কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, আড়তে কাঁচা মরিচের সংকট আছে। এ কারণে পাইকারি বিক্রেতারা চাহিদার তুলনায় কম বিক্রি করছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আড়তে বেগুনের কোনো সংকট নেই। তবুও রমজানের শেষদিকে হঠাৎ করে বেগুনের দাম বেড়েছে। এ কারণে বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

শুক্রবার ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রসুন মানভেদে ১০০-১১০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়েছে। আদা ১১০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার প্রতি কেজি শসা ও গাজর ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চিচিঙ্গা ৪০-৪৫ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁপে বাজারভেদে প্রতি কেজি ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া পটোল, বরবটি, ঢেঁড়স কেজি ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রানা মিয়া বলেন, ধীরে ধীরে কমে আসছে পেঁয়াজসহ সব ধরনের সবজির দাম। আমদানি প্রচুর হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের দামটা কমে এসেছে। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি। এ কারণে কম দামে এনে কম দামে বিক্রি করছি।
একই বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. জাহিদ বলেন, শুক্রবার বাজারের অবস্থা ভালো। তবে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া অন্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল। তাই একটু স্বস্তিতে আছি। তবে সরকারের উচিত এমনভাবে সব সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এতে সাধারণ মানুষ একটু হলেও কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।

মাছের বাজারেও স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি কেজি রুই ও কাতল ২৩০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহেও একই দামে মাছ বিক্রি হয়েছে। বড় আকারের চিংড়ি প্রতি কেজি ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের ৭০০ টাকা ও ছোট আকারের ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, কই ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সিলভার কাপ ১০০-১২০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০-১৩০ টাকা, নলা ১২০-১৩০ টাকা ও সরপুঁটি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রাজধানীতে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৫০ টাকা ও খাসির মাংস ৭২০-৭৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/57959