সরকারি বরাদ্দের ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার প্রাথমিকের ৩০ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে একটি করে টিফিন বক্স দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। এসব টিফিন বক্সের গায়ে অর্থায়নে সরকারদলীয় চিফ হুইপ ও স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজের নাম লেখা রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এন এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তিনি (আ স ম ফিরোজ) সব সময় পানি দিয়ে দই পাততে চান। এর প্রমাণ নিজে কোনো টাকা না দিয়েও অর্থায়নে তাঁর নাম লেখানো।
জানতে চাইলে চিফ হুইপ ও সাংসদ আ স ম ফিরোজ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি টিফিন বক্সে তাঁর নাম লিখতে বলেননি। যাঁরা লিখেছেন, তাঁদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার পরামর্শ দেন তিনি।
যদিও গত ১৮ এপ্রিল টিফিন বক্স বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। নিজে টাকা না দিলেও প্রতিটি টিফিন বক্সের গায়ে অর্থায়নে আ স ম ফিরোজ ও স্লিপ ফান্ডের নাম লেখা রয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ২৩৫টি বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে বিনা মূল্যে একটি করে টিফিন বক্স দেওয়া হবে। এর ব্যয় বহন করা হচ্ছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দের স্লিপ ফান্ড ও বিশেষ বরাদ্দের টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের টাকা থেকে। মোট ব্যয় হবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান যথাযথভাবে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই ৩০ লাখ টাকার ওই কাজ একটি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিয়েছেন। তবে বর্তমানে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে কর্মরত মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেছেন, উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বক্সগুলোয় চিফ হুইপের নাম লেখা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ৩০ লাখ টাকার কাজ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে করার কোনো সুযোগ নেই। আর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল হক জানান, খোলা ডাকের মাধ্যমে টিফিন বক্স কেনা হয়েছে।
এ ঘটনায় আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের চাঁদপুরের ঠিকানা বরাবর গত ১৭ মে ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান। ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এতে দরপত্র ছাড়া অবৈধ পন্থায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে টিফিন বক্স ক্রয় ও বিতরণ, প্রধানমন্ত্রীর ছবি না দিয়ে চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের নাম লেখা ও হাটবাজার ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়।