১ জুন ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৮

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রী দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে। যত্রতত্র পার্কিং, সড়কজুড়ে অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়ি, সীমাহীন যানজট, তদারকির অভাব এসব কারণে এই ব্যস্ততম মহসড়কে যাত্রী দুর্ভোগ অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। নগরীর বহদ্দারহাট থেকে হজরত শাহ্ আমানত রহ: সেতু পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ছয় লেন ও সেতু থেকে আনোয়ারা ক্রসিং পর্যন্ত সেতু সংযোগ সড়কটি চার লেনের কাজ বর্তমানে দৃশ্যমান হয়ে উঠলেও পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এবং বিআরটিএ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট থানা ও উপজেলা প্রশাসন থাকলেও চোখের সামনেই সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র পার্কিং, সড়কের সোল্ডার দখল করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের গ্যারেজ ও অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তোলায় যানজটে নাকাল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যাত্রীরা।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চট্টগ্রাম-নগরীর বহদ্দারহাট থেকে এক কিলোমিটারের মাথা, রাহাত্তারপুল, কালমিয়া বাজার, ফুলতলা, চাক্তাই রাস্তার মুখ থেকে গোলচত্বর হয়ে হজরত শাহ্ আমানত রহ: সেতুর চট্টগ্রাম প্রান্ত, পশ্চিম পটিয়া কর্ণফুলী গোল চত্বর, মইজ্যারটেক, সিডিএ আবাসিক এলাকা, কলেজ বাজার, মাজার গেট, চার রাস্তার মাথা, আনোয়ারা ক্রসিং, শান্তিরহাট, মনসা চৌমহনী, মনসা বাদাম তলা, শাহ্ আমানত রহ: সিএনজি রিফুইলিং স্টেশন, গৈরালার টেক, এবাদতখানা, আমজুরহাট, কাগজীপাড়া, ইন্দ্রোপোল লবণ শিল্প এলাকা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিস এলাকা, পটিয়া সরকারি হাসপাতাল এলাকা, পুরনো সিও অফিস, মুন্সেফ বাজার এলাকা, পোস্ট অফিস মোড় ও পটিয়া আদালত এলাকা, পটিয়া থানার মোড় এলাকা, রাহাত আলী ও পটিয়া স্কুল এলাকা, পটিয়া ডাক বাংলো মোড়, বাসস্টেশন এলাকা থেকে শ্রীমাই পোল পর্যন্ত, কমল মুন্সির হাট, খরনা, চন্দনাইশের রওশনহাট, বাদাম তল, জোয়ারা রাস্তার মাথা, খানহাট, কলেজ গেট, কলঘর, বুলার তালুক, বাগিচাহাট, খান বটতল, কসাইপাড়া, দেওয়ানহাট, দোহাজারী পৌর সদরের ফুলতলা, হাসপাতাল এলাকা থেকে সাঙ্গু ব্রিজ পর্যন্ত, সাতকানিয়ার বিওসির মোড়, মৌলভীর দোকান এলাকা, কেরানীহাট গরু বাজার, কেরানীহাট বান্দরবান সড়ক মোড়, সাতকানিয়া রাস্তার মাথা, চারাবটতল এলাকা, হাসমতের দোকান এলাকা, মিঠা দীঘি, লোহাগাড়ার ঠাকুর দীঘি, পদুয়া তেওয়ারীহাট হয়ে রাজঘাটা, আমিরাবাদ, বাসস্ট্যান্ড থেকে চুনতি হয়ে কক্সবাজার জেলা সদর পর্যন্ত প্রায় অর্ধসহস্র স্পটে সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র পার্কিং সড়কের সোল্ডার দখল করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের গ্যারেজ ও অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তোলায় যানজটে নাকাল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের যাত্রীরা। মাঝে মধ্যে এমন অবস্থা হয় যে, এক ঘণ্টার পথ দুই থেকে দেড় ঘণ্টাও লেগে যায় গন্তব্যে পৌঁছতে।

চন্দনাইশ উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপাল কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, রাস্তা প্রশস্ত হলে কি হবে, সড়কের পাশে অবৈধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহন ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হাটবাজার তুলে দেয়া না হলে সড়কে যানজট লেগেই থাকবে।
সড়কে যানজট প্রসঙ্গে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: মুসা বলেন, সড়কের দুই পাশের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নিয়মিত মনিটরিং করা গেলে তিনি মনে করেন মহাসড়কে কোনো যানজট থাকবে না। হজরত শাহ্ আমানত রহ: সেতুর উভয় প্রান্তে ছয় লেন ও চার লেন সড়ক উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোছাইন কনস্ট্রাশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবু সাহদাত সায়েমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম ও পটিয়া প্রান্তে চার ও ছয় লেন সড়ক দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। সড়ক এখন ৮০-৮২ ফুট প্রশস্ত হয়েছে, কাজেই অবাধে যানবাহন চলাচল করতে পারে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নিত্যযানজট প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে সড়কে দুই পাশ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, হাটবাজার ও অবৈধ যানবাহন পার্কিং তিনি বলেন যানজটবিহীন নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থপনা গড়ে তুলতে হলে সবার সাথে সমন্বয় দরকার।


 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/321701