৩০ মে ২০১৮, বুধবার, ৯:৫১

এডিপি বাস্তবায়নে কাজ সম্পাদন নয় অর্থ ব্যয় উৎসবে পরিণত হয়েছে

 বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে বছরের শুরুতে কচ্ছপ গতিতে চলে প্রকল্পের কার্যক্রম। বছরের শেষে এসে শুরু হয় তোড়জোড়। যেকোনোভাবে কাজ শেষ করে অর্থ খরচ করা। টাকা খরচ করা যেন এক ধরনের উৎসবে পরিণত হয়। কাজ নয় ব্যয় চলে রকেট গতিতে। কাজ কতোটুকু হয়েছে সেটা মূখ্য নয় ব্যয় কতোটুকু হয়েছে সেটাই মূখ্য হয়ে পড়ে। তারপরও ব্যয় হচ্ছে না এডিপির বরাদ্দকৃত অর্থ। বছরের শেষে এসে বরাদ্দ কাঁটছাট করতে হচ্ছে। বর্তমান সরকারের ১০ বছরে এডিপির বরাদ্দ বেড়েছে ৫ গুণেরও বেশি। কিন্তু বাস্তবায়নের হার বাড়েনি। এডিপি বাস্তবায়ন না হওয়া এখন বাংলাদেশের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েক বছরের এডিপি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১০ বছরে এডিপির আকার বেড়েছে পাঁচগুণেরও বেশি। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের মূল এডিপি ছিল ৫৫ হাজার কোটি টাকা, সংশোধিত এডিপিতে কাটছাঁট হয়ে আকার দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মূল এডিপির আকার ছিল ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শুরুতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এডিপি বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। বছর শেষে মূল এডিপির আকার একই রাখা হয়।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ছিল এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের শেষে এসে এডিপি সংশোধন করা হয়েছে। এ বছর সংশোধিত এডিপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরও কাঁটছাটের বাইরে নেই। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আকার ছিল এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের শেষে এসে এডিপি সংশোধন করা হয়েছে। এ বছর সংশোধিত এডিপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চূড়ান্ত এ অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। পরিকল্পনালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়নের হার ৩৮ দশমিক ০১ শতাংশ। যা টাকার অঙ্কে ৬২ হাজার ৩৭২ কোটি। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ।
সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে বরাদ্দ কমেছে। সরকারের নিজস্ব তহবিলের (জিওবি) অপরিবর্তিত বরাদ্দ রয়েছে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। বৈদেশিক সহায়তার মূল বরাদ্দ ছিল ৫৭ হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে কমেছে চার হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। সংশোধিত বরাদ্দ ৫২ হাজার ৫০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ২১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। মূল এডিপিতে প্রকল্প ছিল এক হাজার ৩০৮টি। কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে ৩৫০টি বেড়ে প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৫৮টিতে। এছাড়া, সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দহীনভাবে সংযুক্ত অনুমোদনহীন প্রকল্প রয়েছে এক হাজার ২৭টি। বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির সুবিধার্থে অনুমোদন ও বরাদ্দহীনভাবে ২৬৮টি প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। পিপিপির (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) প্রকল্প রয়েছে ৩০টি। এছাড়াও ৩০০টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এনইসি সভায়।

বর্তমান সরকারের গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের অবস্থা খুবই নাজুক। আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদের মধ্যে এ অর্থবছরে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। অর্থবছরের শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি বছর শেষে এসে রকেট গতিতে রুপ নেয়। রীতিমতো অর্থ ব্যয়ের উৎসব চলে। অর্থ ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোট ব্যয়ের অর্ধেকই হয়েছে শেষ তিন মাসে। গত অর্থবছরের শেষের দিকে উন্নয়নে বাড়তি অর্থ ব্যয় হলেও শতভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। উল্টো বিগত অর্থবছরে এডিপির বাস্তবায়ন গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে আসে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত অর্থবছর এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শুরুতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে এসে এডিপি সংশোধন (আরএডিপি) করা হলেও বরাদ্দ কমানো হয়নি। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মূল বরাদ্দ ঠিক রেখে ১ লাখ ১০ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত আরএডিপিতে সরকারি তহবিলের বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা করা হয়। এছাড়া বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দ রাখা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল ৪৫ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল এডিপিতে ১২০৬টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৯টি বিভিন্ন উন্নয়ন সহায়তা খাত অন্তর্ভূক্ত ছিল। এতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৯৯৬ কোটি টাকা। বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে বছরের শেষে দিকে এসে এডিপির বরাদ্দ কাঁটছাট করতে বাধ্য হয় সরকার। মূল বরাদ্দ থেকে কর্তন করা হয় ৭ হাজার ৯১ কোটি টাকা। সে হিসাবে সংশোধিত এডিপির পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল।
গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিও (এডিপি) সংশোধন করা হয়। অর্থবছরের বাজেটে পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন মূল এডিপির আকার ছিল ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বলা হয়, এ অর্থের মধ্যে স্থানীয় উৎস থেকে জোগান দেয়া হবে ৫০ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আর প্রকল্প সাহায্য বাবদ আসবে বাকি ২৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ২০৪টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার ১৪টি, কারিগরি প্রকল্প ১৬৯টি এবং জাপান উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের (জেডিসিএফ) প্রকল্প ২১টি। এ ছাড়া সংশোধিত এডিপিতে সবুজ পাতায় বরাদ্দবিহীনভাবে সংযুক্ত অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের সংখ্যা ৬০৫টি। আর বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প ছিল ৩৫৬টি।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের মূল এডিপিতে ১১৬০টি উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল। এতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে বছরের শেষে দিকে এসে এডিপির বরাদ্দ কাঁটছাট করতে বাধ্য হয় সরকার। মূল বরাদ্দ থেকে কর্তন করা হয় ৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। সে হিসাবে সংশোধিত এডিপির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এডিপির ৩৩ শতাংশ বা ২১ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।
২০১২-১৩ অর্থবছরের মূল এডিপি ছিল ৫৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে কাঁটছাট হয়ে এডিপির আকার দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল যথাক্রমে ৩৮ শতাংশ।
২০১১-১২ অর্থবছরে মোট ৪৬ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ঘোষণা করা হয়। এতে সরকারের নিজস্ব সম্পদ থেকে ২৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রকল্প সাহায্য হিসাবে ধরা হয় ১৮ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল সংশোধিত বরাদ্দের ৩৪ শতাংশ।

২০১০-১১ অর্থবছরে মূল এডিপি ছিল ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ বছরও কাঁটছাট করা হয় এডিটির পরিমাণ। সংশোধিত এডিপি নির্ধারণ করা হয় ৩৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
২০০৯-১০ অর্থবছরে মূল এডিপি ছিল ৩৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ বছরও মূল এডিপি থেকে ২ হাজার কোটি টাকা কাঁটছাট করা হয়। সংশোধিত এডিপি নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
এডিপি বাস্তবায়নের হারে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে গত আট বছর পর আবারও এডিপি বাস্তবায়নের হার ৯০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির (আরএডিপি) ৯২ দশমিক ৭২ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছিল। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার ছিল ৯১ শতাংশ। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট বরাদ্দের ৯৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছিল এডিপি বাস্তবায়নে। এর পরের অর্থবছরগুলোতেও ৯০ শতাংশ ছিল এডিপি বাস্তবায়নের হার। ২০০৯-১০ অর্থবছর ৯১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়। এর আগে ২০০৮-০৯ এডিপি অর্থবছরে বাস্তবায়নের হার দাঁড়ায় ৮৬ শতাংশে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৮২ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল। আর এ সবগুলো সংশোধিত বরাদ্দের পর। অর্থাৎ সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

এডিপি বাস্তবায়ন কাঙ্খিত না হওয়ার পেছনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্যকর তদারকির অভাবকেই দায়ী করেছেন পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলছেন, অবশ্যই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্যকর তদারকি ছিল না। সবকিছু শুধু মুখে বললে হবে না কাজে প্রমাণ করতে হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এডিপির বাস্তবায়ন শুধু টাকার অঙ্কে বিচার করলে হবে না। যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তা সঠিকভাবে হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। অন্যদিকে যারা বাস্তবায়ন করতে পারছে না, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে।

এমতাবস্থায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের ধীর গতির বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের সুপারিশ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- সময় মতো অর্থছাড় না হওয়া, জমির অধিগ্রহণে বিলম্ব, দক্ষ প্রকল্প পরিচালকের অভাব, বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব, কর্মকৌশল গ্রহণে সরকারের ধীর গতি, ক্রয়কাজে জটিলতা, যোগ্য পরামর্শক প্যানেল না পাওয়া, সংশ্লিষ্ট উন্নয়নসহযোগীর সম্মতি পেতে দেরি, পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়ে মূল্যায়নে জটিলতা, ঋণ নেগোশিয়েশন না হওয়া, সঠিক সময়ে বাস্তবসম্মত ক্রয় পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও অনুসরণ না করা, দরপত্র আহ্বান ও কন্ট্রাক্ট অ্যাওয়ার্ড কাজে বিলম্ব, ভৌত কাজের ডিজাইন ও রেট শিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ না করা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা কর্তৃক যথাযথ পরীবিক্ষণের অভাব, প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন এবং বাস্থবায়নোত্তর আইএমইডির মনিটরিং প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে গুরুত্ব না দেয়া, সময়মতো প্রকল্পের পিসিআর না পাওয়া ইত্যাদি।
এদিকে ভোটের বছরের কথা মাথায় রেখে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে পরিবহন খাত। এই খাতে এবার বরাদ্দ থাকছে ৪৫ হাজার ৪৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। এর মধ্যে ৫ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা থাকছে পদ্মা রেল লিংক প্রকেল্পের জন্য। আর পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প পাচ্ছে ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা এবং দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্পে ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য এই এডিপি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার মূল এডিপির সঙ্গে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নের ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে। এই এডিপি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। আর বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার যোগান পাওয়া যাবে। প্রস্তাবিত এই এডিপির আকার চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। তিনি বলেন, আমাদের উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২০৩০ সালের কথা মাথায় রেখে। কারণ ওই বছর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের শেষ বছর।

http://www.dailysangram.com/post/332338