২১ মে ২০১৮, সোমবার, ১০:১৬

তরুণরা কি হতাশ হবে

সালাহউদ্দিন বাবর

গত প্রায় দশ বছরে নতুন ভোটার হয়েছে বিরাটসংখ্যক তরুণ। দেশের রাজনীতির যে হাল তাতে নতুন এই ভোটাররা স্বেচ্ছায় ভোটযুদ্ধে অংশ নেবেন সে ভরসা কম। দেশের রাজনীতিতে যে বাকযুদ্ধ, তাতে কদাকার যে পরিবেশ, সে পরিপ্রেক্ষিতে নতুন দিনের এই যুবসমাজ ভোটযুদ্ধে অংশ নিতে কতটা উৎসাহী হবে, তা নিয়ে রাজনীতিকদের ভাবা উচিত। তারা দিনবদলের একটি আশা নিয়ে সমাজে হাজির হয়েছে। তারা রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ভবিষ্যতে সুন্দর আশা ভরসার কথা শুনতে চায়। কিন্তু এখন যে বাকযুদ্ধ তাতে তারা উৎসাহী নয় বরং অরুচিকর বলে মনে করে। এই তরুণরা নতুন ভাবচেতনায় স্নাত। এরা যদি রাজনীতিতে উৎসাহী না হয় তবে দেশে তরুণ নেতৃত্ব রাজনীতিতে, সমাজে আসবে কিভাবে। রাজনীতির পালাবদল ঘটবে কেমন করে। এখন যারা সমাজ ও রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের অগ্রসর উত্তরসূরিদের পথ করে দিতে হবে, যাতে তারা নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ করতে পারে এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনার সুযোগ তারা পায়। সমাজের যে ক্লেদ এখন জমা হয়ে আছে তা বর্তমান নেতাদেরই দূর করতে হবে। যাতে তরুণরা এই ক্লেদ দেখে পিছু না হটে।
২০১৪ সালে নতুন ভোটারদের নির্বাচনে অংশ নেয়া তো দূরের কথা পুরনো ভোটাররাই ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি। এ জন্য আক্ষেপ রয়েছে ক্ষোভ রয়েছে। গণতন্ত্র পিছু হটেছে। এর ফলে দেশে যে সরকার ক্ষমতায় তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে, তারা জনপ্রতিনিধিত্বশীল নয়। ভবিষ্যতে যাতে এমন ত্রুটির পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য ক্ষমতাসীন দল ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান অনুযায়ী শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। ভোট দেয়া নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সে অবাধে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তা প্রয়োগ করবে। প্রত্যেকে তার ভোট দেয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কিন্তু পরিবেশ এখন তেমন নয়। প্রভাবশালীরা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তারা পেশিশক্তি প্রয়োগ করে ভোটকে ছিনতাই করে নেয়। ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, ভোটাররা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রের কাছে যেতে সাহসী হয় না। এমন পরিবেশ গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়। কিন্তু নির্বাচন যারা পরিচালনা করে, সেই কমিশনকে এমন পরিস্থিতিতে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যায়। তাই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট দিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। অথচ এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে নানা তালবাহানা করতে দেখা যায়।

নবীন ভোটারদের এই গণতান্ত্রিক চর্চায় সম্পৃক্ত করতে রাজনৈতিক দলকে ভূমিকা রাখতে হবে। সবাই ভাবতে পারেন তারা নবীনদের ভোট পাবেন। কিন্তু আজকের তরুণরা সহজে বিনা বিশ্লেষণে কোনো কিছু কাছে টেনে নেবে না। তারা দেখবে নতুন দিনের কি বার্তা রাজনীতিক শোনান। আর শুধু মুখের প্রতিশ্রুতিতে তাদের মন ভুলবে না। যারা ভোট চাইবেন তারা কেন ভোট পেতে পারেন। তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। তারা রাজনৈতিক দলগুলোর অতীত বর্তমান বিবেচনা করবে। নবীনদের ভবিষ্যৎ রচনার জন্য কি উপাত্ত রাজনৈতিক সংগঠনগুলো হাজির করেছে। অতীত দিনের আবেদন এখন তাদের কাছে মূল্যহীন। এই নবীনেরা প্রবীণদেরও ভোটের সিদ্ধান্ত তৈরি করতে প্রভাব ফেলবে। প্রবীণ বোঝেন তারা অতীতে বঞ্চিত হয়েছেন। আর বঞ্চনা নয়, তাদের প্রজন্মরা কি ভাবছে তার মূল্য তাদের কাছে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সবাই গণতন্ত্রের কথা, ভোটের কথা বলবে। কিন্তু অতীতে এই রাজনীতিকরা গণতন্ত্র নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে কী ভূমিকা রেখেছে, হালে তাদের আচরণ কতটা গণতান্ত্রিক জনবান্ধব সে হিসাব তরুণরা করবে। আর যদি তরুণরা সব কিছু দেখেশুনে হতাশ হয় তবে দেশের ভবিষ্যৎ মঙ্গলজনক হবে না।

দেশে এখন চরম বেকারত্ব চলছে। পৃথিবীর যেসব দেশের বেকারত্ব আশঙ্কাজনক, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। প্রতিনিয়ত দেশের হাজার হাজার শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত যুবক কাজের জন্য প্রবেশ করে কিন্তু তাদের জন্য তেমন সংখ্যক কাজ সৃষ্টি হয় না। কর্মসংস্থানের জন্য যে দেশী বিদেশী বিনিয়োগ হচ্ছে না অর্থনৈতিক মন্দার কারণে। দেশে পুঁজির অভাব রয়েছে। তেমনি রয়েছে স্থিতিশীল পরিবেশের অভাব, শিল্পের জন্য অবকাঠামো তৈরি হয়নি, নেই পর্যাপ্ত জ্বালানি। শিল্পবান্ধব নীতির অভাব রয়েছে। রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ব্যাংকগুলো থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা শিল্পে বিনিয়োগ করেনি। এর ফলে ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দেয়ার আর্থিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। সব মিলিয়ে দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক হতাশাজনক অবস্থা সৃষ্টি হয়ে আছে। যারা নির্বাচনের সময় গালভরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়ে ক্ষমতায় যান, তারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের এবং তাদের অনুগত কিছু ব্যক্তির ভাগ্য বদল করেন। সাধারণ মানুষ যে দুঃখকষ্টে দিনাতিপাত করে তাদের কিছু হয় না। এ দিকে ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে দেশের উন্নয়নের নানা কাহিনী শোনা যায়। সাধারণ মানুষের আয় থেকে ব্যয়ের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় তারা ভালো কিছু উপলব্ধি করতে পারছে। দেশে তরুণরা অবশ্যই এটা উপলব্ধি করে, কেননা তারা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল। লোক ভোলানোর কিছু কাজ অবশ্য করা হয়েছে কিন্তু তা থেকে সাধারণ মানুষের ও বেকার যুবকের কোনো কল্যাণ হয়নি।

এটা আগেই বলা হয়েছে যে, বিপুলসংখ্যক তরুণ এবার ভোটের রাজনীতিতে এসেছে। তাদের সমর্থনের ওপর কোনো দলের জয়-পরাজয় অনেকটা নির্ভর করবে। বিরোধী দল এই সুযোগে নবীন ভোটারদের সরকারের বিপক্ষে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবে। শুধু তুলে ধরলেই যে নতুন ভোটারদের মন তুষ্ট করা সম্ভব হবে, এমন নয়। তরুণ ভোটাররা জানতে চাইবে সরকারের বিপক্ষে তাদের কী কথা রয়েছে। আর সে কথা কতটা যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য বিরোধীপক্ষ নতুন কী আশার বাণী শোনাচ্ছে। নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তিমনস্ক। তারা জানতে চায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের জন্য কতটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তারা হাতে কতটা কাজ পাবে। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে বড় বিষয় হবে দুর্নীতি ও কর্মসংস্থান। তরুণরা বেকারত্বের গ্লানি থেকে মুক্তি চায়। মধ্যবিত্তের পরিবারের ছেলে তাদের শেষ সামর্থ্য দিয়ে পড়াশোনা শেষে যখন কর্মের জন্য আসে তখন তার একমাত্র চাহিদা কাজ। তার পড়াশোনার খরচ জোগাতে গিয়ে পরিবার নিঃস্ব, তারা সে সময় সন্তানের কাছে আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে পাওয়ার জন্য। তরুণ সমাজের মতো দেশের সাধারণ মানুষের চাহিদা রয়েছে, তারা চান খেয়ে পরে ভালো থাকতে। তাদের রোজগার বাড়–ক পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকুক; এর চেয়ে বড় কোনো আশা তাদের নেই।

বোদ্ধা সমাজ ভাবছে দেশের গণতন্ত্রের যে বিপর্যয় এখন চলছে, আগামী নির্বাচনে তার কী হাল হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কেবলই উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু গণতন্ত্র ব্যতিরেকে যে উন্নয়ন হতে পারে না, সম্পদের সুষম বণ্টন সম্ভব নয়, সে কথা তারা বলে না। তাদের কাছে অন্ন বস্ত্রের চাহিদার পাশাপাশি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার, একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয়ব্যবস্থা, সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের অগ্রগতি বোদ্ধাসমাজ জানতে চায়। ২০১৪ সালের পর যে অবস্থা গণতন্ত্রের হয়েছে তার কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। গণতন্ত্র অর্থ শুধু ভোটই নয়, এটা একটা সাংস্কৃতিক আচার-ব্যবহারে এর প্রতিফলন ঘটা চাই। সমাজে বহু মত ও পথ রয়েছে, রয়েছে ভিন্ন চিন্তাধারা। এর প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। এরা যাতে নিজেদের মতের চর্চা করতে পারে তার প্রতি নজর রাখতে হবে। ২০০৯ সাল থেকে মানবাধিকারের অগ্রগতি অতি চমৎকার বলে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। একটি সুস্থ সমাজে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন আশা করা হলেও বেসরকারি প্রতিবেদনে তার সমর্থন মেলে না।

হত্যা গুম নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। গুমের ব্যাপার নিয়ে সমাজে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা এ নিয়ে তেমন তৎপর নয়। এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে তারা কোনো গরজও অনুভব করে না। সমাজে এবং রাষ্ট্রপর্যায়ে জবাবদিহিতার ঘাটতিজনিত কারণে সুশাসনের অভাব ঘটছে এবং অনিয়ম দুর্নীতি বিস্তৃত হচ্ছে। সংবাদপত্র ও সংবাদমাধ্যম একটা গুমট অবস্থার মধ্যে সময় অতিবাহিত করছে। জবাবদিহিতার অনুপস্থিতির কারণে বিভিন্ন সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল অঙ্কের অর্থ লোপাট হচ্ছে। আসলে এখন যে দিকেই তাকানো যায়, সেখানে অনিয়ম। শৃঙ্খলা বিধানের উপায়গুলো যে হারিয়ে গেছে। সর্বত্র একটু খোঁজখবর নেয়ার প্রয়াস নিলেই হতাশায় সব কিছু ঘোর হয়ে আসে।

প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে সেই সাথে অন্ন বস্ত্র কর্মসংস্থানের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে বর্ধিত চাহিদার সাথে বাড়ছে না সুযোগ। সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় যা কিছু সামান্য অগ্রগতি হচ্ছে, সেটা হচ্ছে স্বউদ্যোগে, সরকার বা প্রশাসনের ভূমিকা নিতান্ত কম। কিন্তু উদ্যোক্তারা উৎপাদন বৃদ্ধিতে এগিয়ে এলেও রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার ঘাটতি রয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগ এক কদম অগ্রসর হলে সরকারের যেখানে দুই কদম অগ্রসর হওয়া উচিত। বাস্তবে সেখানে মৌখিক আশ্বাসও পাওয়া যায় না। রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা রয়েছেন তাদের লক্ষ্য কেবলই ক্ষমতা কতটা দীর্ঘ ও একচ্ছত্র করা যায়। তাদের কোনো প্রতিপক্ষ যেন সৃষ্টি হতে না পারে। কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনা যে উপকারী, তা ভেবে দেখা হয় না। মনে করা হয়, সমালোচকরা তাদের মিত্র নয় এবং কেবলই তাদের পতন চায়। গণতান্ত্রিক সহিষ্ণুতার প্রচণ্ড অভাব রয়েছে। আশঙ্কা প্রকাশ করার অবকাশ রয়েছে, এই অসহিষ্ণুতা না একপর্যায়ে সহিংসতায় পৌঁছে যায়। পারস্পরিক হানাহানির সূচনা করে।

জনগণের ভোগান্তি নিয়ে এখন কেউ ভাবছে, অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হয় না। বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের মাথায় এখন সম্ভবত জনভোগান্তির বিষয়টি নেই। তারা এখন আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েই বেশি চিন্তাভাবনা করছে। তবে নির্বাচন কেমন হবে তা নিয়েও তাদের কোনো বক্তব্য নেই। ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় তারাই আবার গদিতে বসবেন এই বার্তাই তারা দিচ্ছেন। তাই আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের স্বরূপটা কী হবে, তা কারো কাছেই স্পষ্ট নয়। অথচ এর স্বরূপটি উপলব্ধি করার জন্য দেশে ও দেশের সবাই উদগ্রীব। কারণ, গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, তা এক কথায় কোনোভাবেই জনমতের প্রতিফলন নয়। ক্ষমতাসীনরা ভিন্ন আর কোনো দলই তাতে অংশ নেয়নি। সেই প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর একটা ধারণা করা হয়েছিল যে, সত্বর সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। সেই অপ্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচনে যাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল তারাই এখন ক্ষমতায় রয়েছে। এখন আগামী একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার জন্য সব মহল থেকে দাবি উঠে আসছে। কিন্তু এ জন্য কতগুলো পূর্বশর্ত রয়েছে। সে ব্যাপারে ক্ষমতাসীনরা এর বিপরীত অবস্থানে রয়েছে। আর সে অবস্থান থেকে তারা সরে আসবে তার এমন কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। যদি আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হয় তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক মারাত্মক দুর্যোগের মুখে গিয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে নামকাওয়াস্তে একটি নির্বাচনের মতো ২০১৪ সালের একটি সিভিল গভর্নমেন্ট ক্ষমতায় আসবে। গত পাঁচ বছর ধরে দেশের মানুষ যেমন তাদের ভোটাধিকার হারা হয়ে আছে। আগামীতে সেই অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বলয়ে বাংলাদেশ একটি ত্রুটিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে, তা সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সার্বিকভাবে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আশা করা হয়েছিল খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ভূমিকা আশাবাদ সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু সে আশা ভেস্তে গেছে। অনিয়ম, কারচুপি, কেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদানের মহোৎসব চলেছে খুলনায়। অনেক ভোটার তাদের ভোট দিতে না পারায় ক্ষোভে দুঃখে আহাজারি করে ফিরে গেছেন বাসায়। আগামী জাতীয় সংসদ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে সব আশা উবে গেল। গণতন্ত্র কি বারবার পিছু হটবে। নির্বাচনে যাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়ে থাকুন না, নিশ্চয়ই তিনি তৃপ্তিবোধ করবেন না।

http://www.dailynayadiganta.com/post-editorial/10674