১৭ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪২

আবারো প্রমাণ হলো আ’লীগের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়

খুলনা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি, নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে সিল মারা, সকাল ১১টার মধ্যেই দেড় শতাধিক কেন্দ্রে ভোট শেষ হয়ে যাওয়া, বিরোধী নেতাকর্মীদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ যে তাণ্ডব চলেছে ততে আবারো প্রমাণিত হলো ক্ষমতাসীনদের অধীনে কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। খুলনার ভোট ডাকাতি ও তাণ্ডবের ঘটনায় বিদেশীরাও হতভম্ব। ভোট ডাকাতির ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

সূত্র মতে, চলতি বছরের শেষের দিকেই সংসদ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের আগে দলীয় প্রতীকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনটি ক্ষমতাসীন ও বিরোধী জোটসহ সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিদেশীরা এ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এ কারণে খুলনায় কেমন ভোট হয়, তার প্রতি দৃষ্টি ছিল সবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একপেশে আচরণ এবং ক্ষমতাসীনদের তা-বের কারণে শুরু থেকেই যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত তাই প্রমাণিত হলো। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের জালভোটের মহোৎসব দেখেছেন দেশবাসী। ভোট শুরুর আগে কেন্দ্র দখল, ব্যালট বই ছিনতাই করে নৌকায় সিল মারা, বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, কেন্দ্র থেকে মারধর করে বের করে দেয়া, হামলা, ভাঙচুর কিছুই বাদ যায়নি খুলনা সিটির নির্বাচনে। এবারই প্রথম আওয়ামী লীগের নারী কর্মীরাও কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারার নতুন রেকর্ড তৈরি করেছেন। যা স্বাধীন বাংলাদেশে ইতিহাসে এর আগে এমনটি কেউ দেখেননি বা শোনেনওনি। খুলনার আওয়ামী লীগের নারী কর্মীরা সেটাই করে দেখিয়েছেন।

তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সরকারি দলের বিজয়ী মেয়র, নির্বাচন কমিশন (ইসি), রিটার্নিং কর্মকর্তা ও খুলনার পুলিশ কমিশনার- সবাই একই সুরে সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, ‘সুষ্ঠু, সুন্দর ও চমৎকার ভোট হয়েছে’। তবে গণমাধ্যমের সুবাদে খুলনাসহ পুরো দেশবাসী ‘চমৎকার’ ভোটের প্রকৃত রূপ দেখেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন হলো- সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোটও কি তাহলে খুলনার মতো ‘চমৎকার’ হবে? তারা বলছেন, সেই আশঙ্কা তৈরি হওয়াও অযৌক্তিক নয়। কারণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময়ই ক্ষমতাসীন দলের আনুগত্য প্রদর্শন করে আসছে। র্যা ব ও বিজিবি ছিল অনেক নিষ্ক্রিয়। আর ইসির তো নিজস্ব কোনো জনবল নেই, ক্ষমতাও নেই। সরকারের ইচ্ছার উপরই নির্ভশীল থাকে ইসি। সুতরাং সরকার না চাইলে ইসির পক্ষে যে কিছুই করার থাকে না- তা আরেকবার খুলনায় প্রমাণিত হয়েছে। গাজীপুরেও হয়তো আরেকবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটবে।
তবে এ মুহূর্তে সিটি নির্বাচনগুলো ইসির অস্তিত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সেই সাথে আওয়ামী লীগের অধীনে চলতি বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে- এরই বাস্তব নমুনা বা সিম্বল হিসেবেই দেখছেন দেশবাসী ও বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। বিদেশীরাও খুলনার নির্ভাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অধীনে কেমন নির্বাচন হবে তা প্রত্যক্ষ করলো।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহবান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। গতকাল বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহবান জানান। ঢাকা সফররত ইউএসএআইডির প্রশাসক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় বার্নিকাটসহ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। ভোটে যে বলপ্রয়োগ হয়েছে, ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেয়া হয়েছে এসব ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ নির্বাচনের জন্যই এটি করা জরুরি।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে একশর বেশি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে নতুন করে ভোট নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। এক্ষেত্রে নিস্ক্রীয় ভূমিকা ছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। ভোট ডাকাতিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। আর তালুকদার আব্দুল খালেকের ক্যাডাররা বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট বই ছিনতাই করে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়েছে।

স্থানীয় ভোটাররা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নারী কর্মীরাও এবার ভোট ডাকাতিতে মুখ্য ভ’মিকা পালন করেছে। দিনভর ক্ষমতাসীনদেও কেন্দ্র দখলে নারী কর্মীরাও ছিল সক্রিয়। ৩১নং ওয়ার্ডের লবনচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি দখল কওে নারী কর্মীরা নৌকায় সিল মারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা একটার দিকে এই কেন্দ্রের একটি বুথে হঠাৎ কয়েকজন নারী ঢুকে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে নেন। পরে তারা মেয়র পদে নৌকা ও কাউন্সিলর পদের পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বক্স ভরে রেখে চলে যান। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ‘কয়েকজন মহিলা বুথে ঢুকে বলেন- কেউ কোনো কথা বলবেন না। কিছুক্ষণ পর তারা ব্যালট পেপারে সিল মেরে বক্সে ভরে চলে গেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোট শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগেই ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্র দখলে নিতে থাকে। ভয়ভীতি দেখিয়ে বিএনপির এজেন্টদেও বের কওে দিতে থঅকে। সকাল পৌনে ৮টায় ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থী নজররুল ইসলাম মঞ্জুর পোলিং এজেন্ট সেলিম কাজীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তিনি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করার জন্য ঢুকতে গেল তাকে পিটিয়েছে সরকারি দলের সমর্থকেরা। আহত সেলিমকে প্রথমে খুলনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে ভর্তি না করে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে মো. জাহিদুল ইসলাম নামের এক ভোটার কেন্দ্র থেকে বেরিয় অভিযোগ করেন, তাকে নৌকা মার্কার ব্যালটে সিল মারার জন্য জোর করা হয়েছে। তিনি রাজি না হলে তাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রের বুথের ভেতর সরকারদলীয় মেয়রপ্রার্থীর সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে সব ভোটারদের। সূত্রমতে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক যে কেন্দ্রে গেছেন সেই কেন্দ্রেই জাল ভোটের মহোৎসব চলেছে। নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরানি বহুমুখী মাদ্রাসা কেন্দ্রে এক ব্যক্তি তার দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বের হচ্ছেন। বাবা-ছেলের দুজনের হাতের আঙুলে ভোট দেওয়ার সময় লাগানো অমোচনীয় কালি দেখে তাদের অনুসরণ করেন সংবাদকর্মীরা। একপর্যায়ে ভোট দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ছেলেও ভোট দিয়েছে।’ দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেটি বলে, ‘নৌকায় ভোট দিয়েছি। টিপু আঙ্কেলকে ভোট দিয়েছি (আওয়ামী লীগের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আলী আকবর টিপু, প্রতীক ঠেলাগাড়ি)। খুলনা সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের রূপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট। এ কেন্দ্রে ভোট দিতে না পারা একজন বয়স্কা হাসিনা বেগম। ভোট দিতে না পারার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ভোট দিতে কেন্দ্রে ঢুকলে আমাকে ধাক্কা মেরে বের করে দিয়েছে কতগুলো ছেলে। ছেলেগুলো বলেছে, আপনি বয়স্ক মানুষ, কষ্ট করে ভোট দেয়া লাগবে না। আমরাই দিয়ে দিয়েছি।’ একই ধরনের অভিযোগ করেছেন হাজার হাজার ভোটার।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মেয়র পদপ্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু। বামপন্থী এই প্রার্থী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও আনেন। কাস্তে প্রতীকের প্রার্থী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন কষ্ট করলাম। আমার জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থার শুরুতেই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম, আমরা কালো টাকামুক্ত, অবৈধ অস্ত্র পেশিশক্তিমুক্ত, ধর্মের ব্যবহারমুক্ত একটি নির্বাচন চাই। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে এলো আমরা দেখলাম, এই অপশক্তিগুলো আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আমাদের গণতান্ত্রিক শক্তিকে একদম শেষ করে দিল। যার বাস্তবতা দৃশ্যমান হলো ভোটের দিনে।

ডবশ্লেষকরা বলছেন, খুলনা সিটিতে যেভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে াততে যে ক্ষমতাসীনদেও অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় তা আবারো প্রমাণিত হলো। সবার অংশগ্রহণে দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের যে দাবি উত্থাপিত হয়েছে তা আরো জোরালো হলো। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা চলমান সংকট নিরসনে আলোচনার মাধ্যমে সবদলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান। আন্তর্জাতিক মহলও দেশের চলমান সংকট নিরসনে সংলাপের পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরকার যেভাবে এগুচ্ছে তাতে ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের ন্যায় আরেকটি নীল নকশার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। সরকারি দল যেভাবে বিভিন্ন কেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকায় সশস্ত্র অবস্থান নিচ্ছে, যেভাব্ েকেন্দ্র দখলে নিয়েছে তাতে কোন ভদ্র ভোটার জীবন বাজি রেখে ভোট দিতে যাবেনা। নির্বাচনের আগেই যেভাবে এজেন্টদের জীবননাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে তাতে অনেক কেন্দ্রে সরকার বিরোধী প্রার্থীরা এজেন্টই দিতে পারবেনা। এছাড়া ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে পারবেন কি-না তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় বাড়ছে। এই আতংক আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে সরকারি দলের সশস্ত্র অবস্থান, হামলা এবং নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থানীয় নির্বাচনে যেভাবে সরকার ও তাদের দল নীতিবাচক ভূমিকা রাখছে তাতে জাতীয় নির্বাচনে যে এর চেয়েও বেশী প্রভাব থাকতো তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনই (ইসি) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট ডাকাতির সুযোগ করে দিচ্ছে। প্রথমত সেনা মোতায়েন না করায় সরকারি দল বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠে। পুলিশ-র্যা বসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দলীয় হওয়ায় তাদের দ্বারা কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করা যায়না। তারা বলেন, পুলিশ ও র্যাশবের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিরা যেভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে যে তাদের উপর কোনো আস্থা নেই তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু সেনা বাহিনী নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে, তাই তাদের উপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। কিন্তু তাদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কারণে আগামী নির্বাচন গুলোও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে ইসি পুনর্গঠনের আওয়াজ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফখরুল বলেন, যদি সেনাবাহিনী থাকত, তাহলে খুলনা নির্বাচনের এই দশা হতে না। জয়-পরাজয় আলাদা কথা। কিন্তু প্রতিপক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না, তার এজেন্টদেরকে বের করে দেবে। এটা নির্বাচন হতে পারে না, এটা নির্বাচন নয়। ইসি পুনর্গঠনের দাবি তুলে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আমাদের এই নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের হামলার কারণে, পুলিশি নির্যাতনের কারণে আমাদের নেতা-কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেননি। প্রত্যেকটি কেন্দ্রের সামনে সন্ত্রাসীরা বুকে নৌকা লাগিয়ে ছিল, সাধারণ ভোটারদেরও আসতে দেওয়া হয়নি।

http://www.dailysangram.com/post/330721