৭ মে ২০১৮, সোমবার, ১০:০৪

এসএসসিতে ভাটার টানে রেকর্ড

নয় বছরের মধ্যে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নিম্ন ফলাফল হয়েছে। গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশে। গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার বেড়েছে। গতকাল প্রকাশিত ফলাফলে বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বোর্ডগুলোর তথ্যমতে, ২০১১ সালের পর এবার সর্বনিম্ন ফলাফল হয়েছে। ২০১১ সালে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ১৬ শতাংশ।

২০১২ সালে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। ২০১৩ সালে পাসের হার ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ দশমিক ৩ শতাংশ। এ ৯ বছরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক পাস করে ২০১৪ সালে। এ বছর পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। পরের বছর ২০১৫ সালে ৪ শতাংশ কমে পাশের হার দাঁড়ায় ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০১৬ সালে পাসের হার ১ শতাংশ বাড়ে। এ বছর পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটে পাসের হারে। প্রায় ৮ শতাংশ কমে পাসের হার দাঁড়ায় ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশে। বোর্ড ও মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাতা মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনায় পাসের হারে ছন্দপতন হচ্ছে। এটি সার্বিক শিক্ষার মানের উন্নতির সূচক।

গতকাল সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেয়ার পর দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ছাড়া সকল সূচকে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। এবার ১০টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন। শতকরা পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭। জিপিএ- ৫ পেয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল এক লাখ চার হাজার ৭৬১ জন। গত বছরের চেয়ে জিপিএ-৫ বেড়েছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ জন। গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবারও পাসের হার কমেছে, এবারো পাসের হার কমেছে। তবে দেখা দরকার মূল্যায়নটা সঠিক হয় কিনা। আমাদের শিক্ষার মানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থী বাড়ছে। সবাই ফেল করছে তা নয়। শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ইতিবাচক দিক হলো পাসের হার কমেছে। আমরা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছি। মূল্যায়নে সমতা আনার জন্য এই পরিবর্তন। শিক্ষকরা যাতে ভালো করে খাতা দেখেন, ভালো করে না দেখেই যেন নম্বর না দেন। সেদিক থেকে ভালো করে খাতা দেখার ফলে পাসের হার কমেছে।

আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীন এবার ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ জনের মধ্যে পাস করেছে ১২ লাখ ৮৯ হাজার ৮০৫ জন। পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪০ ভাগ। গত বছর পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ২১ ভাগ। গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমেছে এক দশমিক ৮১ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ দুই হাজার ৮৪৫ জন। গত বছরের চেয়ে চার হাজার ৮৮১ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে ৮১ দশমিক ৪৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১ হাজার ৫৮৫ জন। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ৩৯ ভাগ। রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ০৭ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৭০ ভাগ। কুমিল্লা বোর্ডে ৮০ দশমিক ৪০ ভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ছয় হাজার ৮৬৫। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৫৯ দশমিক শূন্য তিন ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ৪৫০ জন। যশোর বোর্ডে ৭৬ দশমিক ৬৪ ভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে নয় হাজার ৩৯৫ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক শূন্য চার ভাগ। চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে আট হাজার ৯৪ জন। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৯৯ ভাগ। এবছর বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭১ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ৪৬২ জন। গতবছর পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ২৪ ভাগ। সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ১৯১ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ২৬ ভাগ। দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৬২ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ৭৫৫ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৯৮ ভাগ। গত বছরের চেয়ে কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার বেড়েছে। অন্যান্য বোর্ডে গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমেছে। এর কারণ জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুই বছর ধরে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা নেয়ার ফলে কুমিল্লা বোর্ড এ জায়গায় এসেছে বলে মনে করি। তারপরেও আরো কী কী বিষয় হতে পারে তা আমরা জেনে জানাতে পারবো। ফলাফলে সমতা আসছে, সবাই কাছাকাছি আছে। একটা ভিত্তি তৈরি হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিভাগভিত্তিক আটটি সাধারণ বোর্ডে পাসের শীর্ষে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা। এ বিভাগে পাসের হার ৯৩ দশমিক তিন শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। মানবিক বিভাগে পাসের হার ৬৯ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে। এ বিভাগের ৯৭ হাজার ৭৮০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ব্যবসায় শাখা বিভাগে তিন হাজার ৭৪৬ জন ও মানবিক বিভাগের এক হাজার ৩১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা বেশি পাস করেছে। ১০টি বোর্ডে ছাত্রদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭১ ভাগ। আর ছাত্রীদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৭৭ ভাগ। অর্থাৎ ছাত্রদের চেয়ে দুই দশমিক ১৪ শতাংশ ছাত্রী বেশি পাস করেছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে ছাত্ররা ছাত্রীদের চেয়ে এগিয়ে। ৫৫ হাজার ৭০১ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর ৫৪ হাজার ৯২৮ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৯ ভাগ। অর্থাৎ পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে পাঁচ দশমিক ৩১ শতাংশ কম পাস করেছে। তবে উভয় বোর্ডে গতবারের চেয়ে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। কারিগরি বোর্ডে এ বছর চার হাজার ৪১৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল চার হাজার ১৭৮। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন হাজার ৩৭১ জন। গতবছর পেয়েছিল দুই হাজার ৬১০ জন। বিদেশে আটটি কেন্দ্রে ৪৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৪২২ জন পাস করেছে। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৭৮ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯০ জন। এ বছর সারা দেশে এক হাজার ৫৭৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ২৬৬টি। গত বছরের চেয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করা ৬৯২টি প্রতিষ্ঠান কমেছে। এ বছরও ১০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করেনি। গত বছর এ ধরনের ৯৩টি প্রতিষ্ঠান ছিল। গত বছরের চেয়ে শতভাগ ফেল কলা ১৬টি প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। এরমধ্যে মাদরাসা বোর্ডে ৯৬টি। গত ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরুর পরে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১২টি বিষয়ের এমসিকিউ প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে। এতে অন্তত ৫ হাজার শিক্ষার্থী সুবিধা পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা করা হয়েছে। সুবিধাভোগীর বিরুদ্ধ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এদের সবাইকে খুঁজে বের করছি। কেউ রেহাই পাবেন না। প্রথমত ওই সময় ধরা পড়েছে অনেকে। ১৫৭ জন জেলে আছে, ২৫টি মামলা নিয়ে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের ছাত্র জীবন, শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এর বাইরেও খাতা দেখার মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহাবুবুর রহমান, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ফল পুনঃনিরীক্ষা: রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে। ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেয়া হবে। আবেদনে সম্মত থাকলে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ণঊঝ লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে। যেসব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে। একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।
ফল খারাপের নেপথ্যে: ফলাফল খারাপের কারণ হিসেবে বেশ কিছু কারণে চিহ্নিত করেছেন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। প্রথমত মানবিকে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও বাণিজ্যের চেয়ে খারাপ ফল করেছে। তারপর সব বোর্ডে ইংরেজি ও গণিতের খারাপ ফলাফল। এছাড়া মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ফল অন্যান্য বছরের চেয়ে খারাপ হয়েছে। এর প্রভাব সার্বিক ফলাফলে পড়েছে। তবে সাধারণ ৮টি বোর্ডের গণিত ও ইংরেজিতে খারাপ ফলে সবচেয়ে প্রভাব পড়েছে। চলতি বছর শুধু কুমিল্লা বোর্ড ছাড়া সব বোর্ডের গণিতের ফল খারাপ হয়েছে। এজন্য প্রশ্ন কঠিন হওয়াকে দায়ী করছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন, ইংরেজি প্রথমপত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তুলনামূলকভাবে কঠিন হয়েছে। তবে দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় ভালো হওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা কাভার করলেও এর একটা প্রভাব এখানে পড়েছে। আর গণিতের প্রশ্ন তুলনামূলক একটু কঠিন হয়েছে। এবার অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ায় সব বোর্ডের এর প্রভাব পড়েছে।
বোর্ড চেয়ারম্যানরা বলছেন, গত দুই বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলাফল করেছে কুমিল্লা বোর্ড। গত বছর এ বোর্ডের পাসের হার ছিল ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশ। এবার ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ বোর্ডের পাসের হার ফলাফলকে একটা ব্যালেন্সে দাঁড় করিয়েছে। গত বছরের মতো এবারো কুমিল্লা বোর্ড খারাপ করলে সব বোর্ডের পাসের হার আরো ৫-৬ শতাংশ কমে যেত।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানান, এবার পাসের হার কমার আরেকটি অন্যতম কারণ কারিগরি ও মাদরাসা উভয় শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার কমা। তবে উভয় বোর্ডেই জিপিএ ৫-এর সংখ্যা বেড়েছে। কারিগরি বোর্ডে এ বছর জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ৪ হাজার ৪১৩, গতবার ছিল ৪ হাজার ১৭৮। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ২২৬ জন। একইভাবে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও বেড়েছে। এ বছর মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৩৭১ জন শিক্ষার্থী, গত বছর পেয়েছিল ২ হাজার ৬১০ জন। অর্থাৎ জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে ৭৬১টি। চলতি বছর এ বোর্ডের ফল খারাপ হওয়ার পেছনে গণিত ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এ দুই বিষয়ে ফল খারাপ হওয়ার বোর্ডের সার্বিক ফলে ফলাফল খারাপ হয়েছে। মাদরাসা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালে গণিতের পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এবার সেই পাসের হার ৮০ দশমিক ২৯ শতাংশ। এবার গণিতের পাসের হার কমেছে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। একই অবস্থা কম্পিউটার বিজ্ঞানে। এ বিষয়ে গত বছর পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এবার ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে সেই পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ ব্যাপারে মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম সাইফুল্লাহ বলেন, গণিতের প্রশ্নটা একটু কঠিন হওয়ায় এবার এ বিষয়ে ফল খারাপ হয়েছে। তবে অন্যান্য বিষয়ে ফলাফলের ধারাবাহিকতা রয়েছে।

 

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=116305