৫ মে ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৯

নির্বাচনের বড় চ্যালেঞ্জ মাঠ প্রশাসনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা

‘নির্বাচনের আগেই প্রশাসনে তিন স্তরে পদোন্নতি!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ২২ এপ্রিল যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জনপ্রশাসনে তিন স্তরে (উপ-সচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব) পদোন্নতি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনে আসতে আগ্রহী শর্ত পূরণকারী অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের নামের তালিকা পাঠাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ তিন স্তরে সাড়ে চারশ’ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে। পদোন্নতির এ উদ্যোগ এমন সময় নেয়া হচ্ছে, যখন এ তিন স্তরে নির্ধারিত পদের বিপরীতে প্রায় দ্বিগুণ কর্মকর্তা রয়েছেন এবং যাদের অনেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে বিনাকাজে দিন কাটাচ্ছেন। আবার অনেকে পদোন্নতির আগের পদে বহাল রয়েছেন, প্রশাসনিক ভাষায় যাকে ইনসিটো বলা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন অনেকটা কাছাকাছি এবং প্রশাসনের এসব স্তরে পদোন্নতি প্রদানের জন্য কোনো শূন্যপদ নেই, তখন নির্বাচনে সহানুভূতি পাওয়ার জন্যই ক্ষমতাসীন দল শূন্যপদ ছাড়াই এ পদোন্নতি দিতে যাচ্ছে কিনা- এসব প্রশ্ন সচেতন জনগণের মনে উঁকি দেয়াই স্বাভাবিক। সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় কেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।

প্রশাসনকে দলীয়করণের মাধ্যমে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় বহাল থাকার উদ্দেশ্যে ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি সরকার প্রয়োজনীয়সংখ্যক শূন্যপদ না থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পর্যায়ে একসঙ্গে সাতশ’র বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে দলীয়করণের যে নজির স্থাপন করে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা যত্নসহকারে অনুসরণ করে। ১৯৯২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পালাক্রমে ক্ষমতায় এসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রয়োজনীয় শূন্যপদ ছাড়াই পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে প্রশাসনে দলীয়করণকে শক্তিশালী করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একদলীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসনকে দলীয়করণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। বলতে গেলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের নির্বাচনী বাজেটের ন্যায় প্রশাসনে আসন্ন পদোন্নতি হবে নির্বাচনী পদোন্নতি।

আমাদের সংবিধান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করলেও কমিশনের পক্ষে এ নির্বাচন পরিচালনা করে মূলত মাঠপ্রশাসন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও কমিশন কর্তৃক জেলা প্রশাসককে (ডিসি) রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ প্রদান একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাই এ দায়িত্ব পালনে তাদেরকে অনেকটা অপরিহার্য করে তুলেছে। প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিবদের মধ্য থেকে ডিসি এবং সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ইউএনও হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে রিটার্নিং অফিসার মাঠপর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের নিয়োগ দেন। এ আদেশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে একজন রিটার্নিং অফিসার তার কর্তৃত্বাধীন এলাকায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার স্বার্থে প্রয়োজনীয় যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি রিটার্নিং অফিসারকে তার দায়িত্ব পালনে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কোনো শর্ত আরোপসাপেক্ষে তিনি রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণে থেকে রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা ভোগ ও কার্যাবলী সম্পন্ন করেন। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এসপি, ওসিসহ পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ডিসি, ইউএনও, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এসপি, ওসি- এসব কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ তাদের পদোন্নতি, বদলিসহ তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকায় ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষে নির্বাচনে তাদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা অনেকটা সহজ হয়। তাই নির্বাচন কমিশন যতই শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ হোক, সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে এবং নির্বাচন পরিচালনাকারী মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ না থাকলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না।
বিগত সাড়ে চার দশকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৯৬-২০০৮ সময়কালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত কয়েকটি সাধারণ নির্বাচন ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়নি। দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পরাজিত হওয়ার কোনো নজির নেই। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ও প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর দু’জন সামরিক শাসক সামরিক ও বেসামরিক পোশাকে ১৫ বছর দেশ শাসন করেন। বেসামরিক পোশাকে রাজনৈতিক দল গঠন করে যে তিনটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন, সেসব নির্বাচনে জয়লাভের জন্য তারা মাঠপ্রশাসনসহ পুরো প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করেন। এসব নির্বাচনের ফল ছিল পূর্বনির্ধারিত। নির্বাচনের ফল আগে থেকেই ছকে বাঁধা থাকায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। মানুষ নির্বাচনের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রায় একক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনেও নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তাছাড়া বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৪-১৬ সময়কালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক কারণে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় না থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এক. ১৯৯২ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি সরকার ২০০৭ সালে অনুষ্ঠেয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের বিজয় সুনিশ্চিত করতে প্রশাসন সাজানোর উদ্যোগ নেয়। নির্বাচনে বিএনপির অনুকূলে ভূমিকা রাখতে পারে প্রশাসনের এমন গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয়, বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনে নিজেদের পছন্দসই লোক রাখতে প্রতিটি পদের বিপরীতে একাধিক বিকল্প কর্মকর্তার তালিকা প্রণয়ন করা হয়, যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হলেও তাদের নিজেদের লোক এসব পদে থাকে। তবে বহুল আলোচিত ১/১১-এর কারণে তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই মাঠ প্রশাসনে ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি প্রভৃতি পদে তাদের ভাবাদর্শে বিশ্বাসী কর্মকর্তাদের তালিকা থেকে নিয়োগ দেবে। নির্বাচন কমিশন এসব পদের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দলবাজির অভিযোগ এনে বদলির প্রস্তাব করলে তৈরি তালিকা থেকে বিকল্প কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে।
দুই. সংসদীয় গণতন্ত্রে জাতীয় সংসদ বহাল রেখে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নজির না থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের গত মেয়াদে (২০০৯-১৩) সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদ বহাল রেখে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান করে। এর অর্থ দাঁড়ায়, ২০১৪ সালের প্রায় একদলীয় দশম সংসদ নির্বাচনে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার তিন-চতুর্থাংশের বেশি আসনে যেসব আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, তারা সবাই একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ক্ষমতায় থাকবেন এবং তাদের অধিকাংশই নির্বাচন করবেন। তাদের মধ্যে মন্ত্রীও রয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও মন্ত্রীদের স্বার্থহানি হয়, এমন অবস্থান নিয়ে মাঠ প্রশাসনের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তিন. মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানেন যে, বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে সরকারই তাদের রক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। তাই নির্বাচন কমিশন কোনো শাস্তি দিলেও শেষমেশ তা কার্যকর হবে না। সঙ্গত কারণে প্রশাসনের যারা বেনিফিশিয়ারি, তারা নিজেদের স্বার্থেই ক্ষমতাসীন সরকারের পরিবর্তন চাইবেন না।
চার. কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবাদর্শে বিশ্বাসী। তারা মনে-প্রাণে চান, একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করুক। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে এ কর্মকর্তারা মাঠ প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ওপর যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, তা অনেকটা জোর দিয়ে বলা যায়। বাস্তব অবস্থার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের এসব ক্ষমতাবান কর্মকর্তার প্রভাবমুক্ত হয়ে মাঠ প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা কঠিন হবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পথে কোনো দলবাজ কর্মকর্তা বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যত হুশিয়ারি দেন না কেন, নির্বাচনকালীন মাঠ প্রশাসন কোনো পক্ষ নিয়ে কাজ করলে নির্বাচন কমিশন তা প্রতিহত করতে পারবে না। তবে কমিশন কয়েকটি ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হলে অবস্থার অনেক উন্নতি হতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- এক, একাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তাদের অধীন অধিদফতর, পরিদফতরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, বদলি ইত্যাদির ওপর কমিশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুই. মাঠ প্রশাসনের যেসব দলবাজ কর্মকর্তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, কমিশনের নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই- এমন পদে তাদের বদলির ব্যবস্থা নিতে হবে। তিন. কমিশন নির্বাচনকালীন মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে উদ্বুদ্ধ করবে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করে মাঠ প্রশাসন যে সুনাম অর্জন করেছিল, তা স্মরণ করে দিয়ে হৃতগৌরব পুনরুদ্ধারে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। চার. নির্বাচন পরিচালনার ব্যাপারে কমিশন সরকারি দলসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাদের পূর্ণ সহযোগিতা চাইবে। অবশ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ
নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি দরকার।
সরকারের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা, নিবন্ধিত বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণ এবং নির্বাচন কমিশন এবং মাঠ প্রশাসনের দক্ষতা ও নিরপেক্ষতায় একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হোক- এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক সচিব, কলাম লেখক
latifm43@gmail.com

https://www.jugantor.com/todays-paper/sub-editorial/45267