১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শুক্রবার, ৫:৩৯

আ’লীগের পরামর্শেই সার্চ কমিটিতে তালিকা!

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পরামর্শেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের জন্য নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছিল ১৪ দলের শরিকরা। আর এ তালিকাই সার্চ কমিটির কাছে জমা দিয়েছিল তারা। সরাসরি অথবা জোটের বিশ্বস্ত নেতাদের মাধ্যমে শাসক দলের পক্ষ থেকে শরিকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়। এ নিয়ে শরিক দুই রাজনৈতিক দল ন্যাপ ও জাসদের (আম্বিয়া) অভ্যন্তরে কিছুটা মতবিরোধও দেখা দেয়। এ কারণে শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদ শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পরামর্শ গ্রহণ না করে তাদের নিজস্ব তালিকা সার্চ কমিটির কাজে জমা দেয়। যদিও তাদের তালিকা থেকে নতুন ইসিতে কেউ স্থান পাননি। তবে একটি ছাড়া ১৪ দলের শরিক অন্য সবগুলো রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকে সিইসি ও কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের কারও সঙ্গে এ নিয়ে (সার্চ কমিটিতে জমা দেয়া নাম) তার কোনো আলোচনা হয়নি। আওয়ামী লীগের কারও সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানেন না। তবে শরিকরা একে অপরে এ নিয়ে আলোচনা করলেও করতে পারেন।
জাসদ (আম্বিয়া) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ‘ভেন্টিলেশন’ হয়েছে। কি ‘ভেন্টিলেশন’ তা বলব না। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আওয়ামী লীগের দেয়া নাম তারা কেন গ্রহণ করেননি? জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কমিটি হয়তো বা মনে করতে পারে এটার জন্য একটা প্রক্রিয়া কমপ্লিট হওয়া দরকার ছিল। যেটা পুরোপুরি হয়নি বলে তারা মনে করেছেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে বর্তমানে ১৩টি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৯টি। এগুলো হল- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাসদ (ইনু), ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাপ, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন ও জাসদ (আম্বিয়া)। এর মধ্যে একমাত্র জাসদের (আম্বিয়া) তালিকা থেকে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে কোনো ব্যক্তি মনোনীত হননি। অথচ ১৪ দলের বাকি ৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকায় সিইসিসহ অন্য তিন কমিশনারের নাম ছিল।
জানা গেছে, সার্চ কমিটিতে নাম জমা দেয়ার বিষয় নিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২৯ জানুয়ারি। ওইদিন বৈঠক চলার সময় ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফলে নাম চূড়ান্ত না করে ওই বৈঠক মুলতবি করা হয়। পরের দিন অনুষ্ঠিত মুলতবি বৈঠকে নাম চূড়ান্ত করে পরের দিন ৩১ জানুয়ারি সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন। তবে এ নিয়ে জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া এবং জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তারের সঙ্গে তার আলোচনা হয় বলে জানান।
সার্চ কমিটির কাছে জমা দেয়ার জন্য ন্যাপও একই ধরনের ঘরোয়া বৈঠক করেন। সেখানে তারা দশটি নাম চূড়ান্ত করেন। এতে তারা আওয়ামী লীগের পরামর্শ গ্রহণ করেন। তবে শেষ মুহূর্তে ৫টি নাম জমা দেয়ার সময় নিজেদের নাম বাদ দেয়া হয়। এ নিয়ে বর্তমানে দলটির অভ্যন্তরে অসন্তোষ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন।
http://www.jugantor.com/first-page/2017/02/10/99774/%E0%A6%86%E2%80%99%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9A-%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95