গভীর রাতে ঢাবি হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ : নয়া দিগন্ত
২১ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ১২:৪৩

কোটা সংস্কার আন্দোলন

ঢাবিতে মধ্যরাতে ছাত্রীদের হলছাড়া

বাধা উপক্ষা করে বিক্ষোভ; প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় হওয়া এবং ছাত্রী নির্যাতনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান ইশাকে মারধর ও জুতার মালা পরানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে ছাত্রীদের হলছাড়া করেছেন প্রাধ্য অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান। ছাত্রী নিপীড়নকারী ইশার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘটনায় সন্দেহভাজনদের ডেকে এমন হয়রানির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ সময় ছাত্রীদেরকে ডেকে হলত্যাগে বাধ্য করা, মুঠোফোন জব্দ, অজ্ঞাতনামা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি এবং অভিভাকদের ফোন দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভোর পর্যন্ত হলের সামনে বিক্ষোভ করেন কোটা আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এ সময় তারা ছাত্রী নির্যাতন বন্ধ এবং হল প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ানার পদত্যাগ দাবি করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় গঠিত হলের ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধেও সাক্ষাৎকার গ্রহণের নামে ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ করা হয়।
এ দিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ভয়ভীতি, হুমকি ধমকির মাধ্যমে অন্তত ২০ শিার্থীকে হল ছাড়তে বাধ্য করে প্রশাসন। প্রত্যদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, হলছাড়া হওয়া শিার্থীদের সংখ্যার ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ সংখ্যা সর্বনি¤œ ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হবে বলে আন্দোলনকারী এবং হল অফিস সূত্রে জানা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে সোয়া ১২টার পর্যন্ত সময়ে অভিভাবক ডেকে ৫ ছাত্রীকে হলছাড়া করেছে প্রশাসন।
সর্বশেষ হল থেকে বের করে দেয়া ছাত্রীদের মধ্যে পাঁচজনের পুরো পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে। তবে প্রশাসনের নির্দেশে দ্রুত স্থান ত্যাগ এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অনেকেই মিডিয়ার সামনে কথা বলতে রাজি না হওয়ার কারণে বাকিদের বিস্তারিত পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
গভীর রাতে ছাত্রীদের স্বজনদের ডেকে এনে হল থেকে বিতাড়নের মাধ্যমে স্বজনেরা এক ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। সরেজমিন দেখা যায়, অনেকের বাবা, ভাই কিংবা অন্য স্বজনেরা এসে শিার্থীদের হল থেকে নিয়ে যাচ্ছেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হল গেটে দেখা যায় রিমির বাবা ফারুক হোসেন এবং চাচা কামরুল আহসানকে। তারা জানান, সাড়ে ৮টার দিকে হল থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়েছে যে, রিমি হলের থাকতে পারবে না। তাকে এসে নিয়ে যেতে হবে। ঝড়বৃষ্টির রাতে না গিয়ে সকালে গেলে হয় না? এমন প্রশ্নের জবাবে ফোনকারী বলেন, এুনি নিয়ে যেতে হবে।
ভুক্তভোগীর বাবা ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মাঝরাতে এভাবে একটি মেয়েকে কোনো কারণ ছাড়াই হল থেকে বের করে দেয়া নিষ্ঠুর বর্বরতা ছাড়া কিছুই নয়। আমার মেয়েকে কী কারণে গভীর রাতে হল থেকে বের করে দেয়া হলো আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে কাছে এর কারণ জানতে চাই। সে তো কোনো রাজনীতি করেনি।
এর আগে রাত ১২টার দিকে অন্তি নামে আরেক শিার্থীকে বাসায় নিয়ে গেছেন তার ভাই।
এ ছাড়া ওই হলে অন্তত ২০ জন ছাত্রীর মোবাইল জব্দসহ তাদের রুমে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ। নাম প্রকাশ না করার শথর্তে এক ছাত্রী জানান, এ সময় কয়েকজন ছাত্রী হল থেকে স্বেচ্ছায় বেরিয়ে যেতে চাইলে কর্তৃপ তাদের হলের মধ্যে শান্ত থাকতে বলেছেন।
এ দিকে মধ্যরাতে অভিভাবক ডেকে হলের ছাত্রীদের বের করে দেয়ায় শিক্ষার্থীসহ বিশিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে। হঠাৎ করে রাতের বেলায় কেন এ হলছাড়া করা।
তদন্ত কমিটি নিয়ে প্রশ্ন : সুফিয়া কামাল হলে ছাত্রী লাঞ্ছনাসহ ১১ এপ্রিলের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। কমিটি ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ থেকে ইশাকে অব্যাহতি দিয়ে উল্টো ২৬ ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। অথচ ইশা কর্তৃক ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি ও হয়রানির রেকর্ড বের হলেও সেই ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তা ছাড়া যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের অভিযুক্ত সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে হল প্রশাসন তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য শিক্ষার্থীদের। হলের তদন্ত কমিটি ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ২৪ জনের সাথে আরো দুইজন যোগ করে ২৬ জনের একটি অভিযুক্তদের তালিকা করে বলে জানা যায়। কিন্তু ছাত্রলীগের প্রতিবেদনের বেশ কিছু তথ্যই অসত্য বলে দাবি করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক খালেদা হোসেন মুন। তার দাবি ঘটনার রাতে একজন দেশের বাইরে ছিলেন, এক ছাত্রী ডাক্তারের পরামর্শে বেডরেস্টে ছিলেন, আরো কয়েকজনের নাম এবং বিভাগ ঠিকমতো উল্লেখ করা হয়নি। তাই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এ তদন্তকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যেখানে তথ্যই সঠিক নয় সেখানে তদন্তকে কিভাবে সঠিক বলা যায়।
তাই প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির আদলে হয়েছে কি না তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মনে প্রশ্ন দানা বেঁধেছে।
ছাত্রীদের বের করে দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ : হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকিসহ মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানান। বিক্ষোভকালে তারা ‘আমার বোন বাইরে কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বোনের ওপর হামলা কেন প্রশাসন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। সেখানে তারা ভোর ৪টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রীদের বের করার প্রতিবাদ জানিয়ে হাসান আল মামুন বলেন, ছাত্রীরা কোনো অপরাধ করে থাকলে প্রশাসন নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ছাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হল থেকে বের করে দিচ্ছে এটা এক ধরনের ধৃষ্টতা।
নুরুল হক নূর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই রাতের আঁধারে হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসনের কাছে ছাত্রীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আশ্বাস ভঙ্গ করে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমানের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় পরিষদের পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ধর্মঘটের ডাক দেন যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।
এ দিকে ছেলেদের হলগুলো থেকে বের হতে না পারলেও রোকেয়া হলের মেয়েরা প্রতিবাদে হলের মধ্যেই বিক্ষোভ করেন।
আন্দোলন বানচালে ছাত্রলীগের অবস্থান : এ দিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে টিএসসি, মধুর কেন্টিন, কার্জন হলসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ছাত্রলীগের অবস্থান দেখা যায়। হলে হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য হুমকি-ধমকির অভিযোগ পাওয়া যায়।
প্রশাসনের বক্তব্য : ছাত্রীদের বের করে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে বিষয়টি শুনেছি। তবে কী কারণে তাদের হল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে প্রভোস্টই ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে প্রভোস্টের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঘটনার রাতে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্রীদের বের করে দেয়া হয়নি। এ অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো গুজব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একটি দুষ্টচক্র গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে। গতকাল শুক্রবার তিনি বলেন, অপতথ্য ছড়ানোয় ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছে দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারী ছাত্রকে হলে ঢুকতে দেয়নি ছাত্রলীগ : এ দিকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী ছাত্রকে হলে ঢুকতে দেয়নি ছাত্রলীগ। ভুক্তভোগী ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ইয়াসিন আরাফাত অন্তর ঢাবির স্যার এ এফ রহমান হলের শিার্থী। সুফিয়া কামাল হলের সামনের বিােভ ও প্রতিবাদ শেষে ভোর সাড়ে ৪টায় ফেরার সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে ফটক থেকেই ফেরত পাঠায় বলে প্রত্যদর্শীরা জানান।
ইয়াসিন আরাফাত জানান, প্রতিবাদ করে ফেরার পর ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে ডাকেন। বিােভে কেন গেলাম, তা জানতে চান। হলে উঠলে কোনো অনাকাক্সিত পরিস্থিতির দায়িত্ব নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। এ ছাড়া নানা হুমকি দেয়া হয়। আমাকে চলে যেতে বলা হয়। আমাকে রুমে রাখার জন্য রুমমেটকে শাসানো হয়। তবে হল প্রশাসন এবং ছাত্রলীগের দাবি তারা এ বিষয়ে জানেন না।
ছাত্রলীগের বাধা উপো করে বিােভ : কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বের করার ঘটনায় বাধা উপো করে প্রতিবাদ জানিয়ে বিােভ মিছিল করেছে শিার্থীরা। এ সময় কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্য অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
এর আগে বিােভ কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিসিএস লিখিত পরীার প্রস্তুতি নিয়ে পরীার্থীদের সাথে কথা বলার ঘোষণা দেন। সেই অনুযায়ী তারা বিকেলে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেয়। ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য একটি রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয়। পরে আন্দোলনকারীরা এলে তারা সরে দাঁড়ান। বিােভ সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করেন। গত কয়েক দিন থেকে হঠাৎ করে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে আনুষ্ঠানিক যাতায়াতের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। এর আগে অন্তত গত তিন বছরে তাদের সেখানে দেখা যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আন্দোলনকারীদের চিহ্নিত এবং তাদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই তাদের এখানে আগমন। উল্লেখ্য, এর আগে কোটা আন্দোলনকারীদের সংবাদ সম্মেলনসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা এখান থেকে দেয়া হতো।
গতকাল ছাত্রলীগ নেতাদের একরকম বাধা উপেক্ষা করে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হয়। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিােভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি টিএসসি, শাহবাগ হয়ে আবার টিএসসি স্মৃতি চিরন্তন, মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর ও রাশেদ খান।
নুরুল হক নূর বলেন, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারীদের হল থেকে বের করে দিচ্ছে হল প্রশাসন। মামলা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে দেয়ারও হুমকি দেয়া হচ্ছে তাদের। রাতে তাদের বের করে দিয়ে ঢাবি প্রশাসন কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে।
এ সময় অতি দ্রুত বের করে দেয়া ছাত্রীদের হলে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। পাশপাশি প্রাধ্যরে পদত্যাগ দাবি এবং মামলা প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবি করেন তিনি।
রাশেদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। আন্দোলনের পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও একটি মহল ক্যাম্পাসে আতঙ্ক তৈরি করেছে। আন্দোলনকারীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। রাতে হলগুলোতে ব্যারিকেড দেয়া হচ্ছে। ছাত্ররা ভয়ের মধ্যে আছে নানাভাবে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ভিসির সামনে ছাত্রীদের মৌন প্রতিবাদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেয়ায় ভিসির সামনে পোস্টার নিয়ে মৌন প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রীরা। গতকাল সন্ধ্যায় বেগম রোকেয়া হলের ‘র্যাগ ডে’ উপলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানের সামনে তারা প্রতিবাদ জানান। এ সময় হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে নিরাপত্তার কথা না ভেবে হল প্রশাসন এমন জঘন্য কাজ কিভাবে করতে পারে? তাই আমরা মনে করি, আমরা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ নই। এর প্রতিবাদে ভিসির সামনে দাঁড়িয়েছি।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/312024