২০ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৫৬

কারওয়ান বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও বাসচালকরা বেপরোয়া

কারওয়ান বাজার ও সার্ক ফোয়ারা মোড়ে বসানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উদ্দেশ্য- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল ও রাস্তায় চলাচলে সচেতনতা বৃদ্ধি। অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান দুটি বাসকে থামার ইশারা দেন। আয়াত পরিবহন ও লাব্বাইক পরিবহনের দুটি বাস না থামিয়ে পালাতে থাকে। আয়াত পরিবহনের বাসটি প্রজাপতি গুহার সামনে এসে ধরা পড়ে। লাব্বাইক পরিবহনের বাসের হ্যান্ডেল ধরে ফেলেন এক পুলিশ সদস্য। এতে চালক আরও বেপরোয়া গতিতে ছুটতে থাকে। পুলিশ সদস্যও তাল মিলিয়ে দৌড়াতে থাকেন। অবশেষে পুলিশ সদস্য হ্যান্ডেল ছেড়ে দেন। বাসটি পালালেও চালকের সহকারীকে ধরে ফেলে পুলিশ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনা অমান্য করে বেপরোয়া গতিতে ছুটতে থাকা অনেক বাসই এভাবে পালিয়ে যায়।
কারওয়ান বাজার ও সার্ক ফোয়ারা মোড়ের পুলিশ বক্সের সামনে বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান এ সময় চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। অভিযানের শুরুতে কারওয়ান বাজারের পাতালপথ প্রজাপতি গুহায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ভবঘুরে ও ভিক্ষুকদের তুলে দেয়া হয়।
ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন সময় চালকেরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। তাদের মধ্যে গতির প্রতিযোগিতার প্রবণতাও দেখা যায়। অনেক সময় তারা ট্রাফিক আইন মানে না। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকের অঙ্গহানি হয়। এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। তাই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং সড়কে চলাচলের বিষয়ে চালক ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই এ অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, ডিএমপির ট্রাফিকের চারটি বিভাগ মাসে চার দিন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। সম্প্রতি রাজীব হোসেনের দুর্ঘটনাসহ বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এ অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আয়াত পরিবহনের চালক রুহুল আমিনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। রুহল আমিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি থামানোর ইশারা বুঝতে পারেননি। আর লাব্বাইক বাসের চালকের সহকারী মো. স্বপনকে দেয়া হয় তিন মাসের কারাদণ্ড। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্য হাতে সামান্য আঘাত পেয়েছেন। বাসের গতি বেড়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্য হ্যান্ডেল ছেড়ে দেন। যদি হ্যান্ডেল না ছাড়তেন তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। হ্যান্ডেল ছেড়ে দেয়ার সময় পেছনে কোনো গাড়ি থাকলেও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। পরে অবশ্য বাসটি একটু দূরে গিয়ে সহকারী স্বপনকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযানের সময় নিউভিশন পরিবহনের একটি বাসকে থামার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সেটিও থামেনি। একজন সার্জেন্ট মোটরসাইকেলে করে বাসটির পেছনে ছোটেন। ফার্মগেটে গিয়ে বাসটি ধরেন। বাসের চালকসহ আরও একজনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এদিকে অভিযানের সময় সার্ক ফোয়ারা মোড়ে বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করছিল যাত্রীবাহী বাস। অথচ সেখানে বড় করে সাইনবোর্ড টানানো আছে যাত্রী উঠানামা করা নিষেধ।

https://www.jugantor.com/todays-paper/news/40030/