২০ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ৭:৫৩

সিসিমার্কা নির্বাচনের জন্য দায়ী কে?

মিনা ফারাহ

প্রকাশিত স্বৈরশাসকের নতুন তালিকা নিয়ে ৯ এপ্রিল প্রথম আলো লিখেছে সিসিমার্কা নির্বাচনের কথা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক দেশের সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে একদলীয় শাসকের সংখ্যা। এ দিকে, জিনপিংকে আমৃত্যু প্রেসিডেন্ট ঘোষণায় উৎসাহিত মিসরের জেনারেল সিসিও টার্ম লিমিট অবলুপ্ত করার ঘোষণা দিলেন। চার বছরের টার্ম লিমিটকে ছয় বছর বানিয়ে আমৃত্যু মতায় থাকার পথে রাশিয়ার পুতিনও। ভুয়া নির্বাচন করে সিসি ও পুতিন যথাক্রমে ৯৭ এবং ৭৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার দাবি করলেন। জার্মান-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় তুরস্কের এরদোগান, সিরিয়ার আসাদ, ফিলিপাইনের দুতার্তে, মালয়েশিয়ার নাজিব, হাঙ্গেরির ভিক্টর প্রমুখ স্বৈরশাসকদের তালিকায়। এই প্রথমবারের মতো একই তালিকায় বাংলাদেশকে নিয়ে গেল কে?

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্যামুয়েল ফিলিপ হান্টিংটনকে উল্লেখ করে প্রথম আলো লিখেছে, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত নির্বাচন। তবে কেবল সিসিমার্কা নির্বাচন হলেই ‘গণতান্ত্রিক’ বলা যাবে না। লিবারেলরাও স্বীকার করলেন, ভোট দেয়া মানুষের অধিকার। তবে বেশির ভাগই লিবারেল হতে পারল না, বরং কমিউনিস্টদের মতো তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দিয়েই লেখাটি প্রকাশ করল (দ্র: আমাদের সময়)।

আড়াই হাজার বছর পর সক্রেটিসকে সত্য বলে প্রমাণ করল আওয়ামী লীগও। বলেছিলেন, ‘মূর্খদের জন্য গণতন্ত্র নয়।’ সংগ্রামী দলটি কী কারণে এত দ্রুত স্বৈরশাসকের তালিকায় ঢুকল, এসব প্রশ্ন অবান্তর। মতার লোভে অনেক কিছুকেই লুফে নিল আওয়ামী লীগ। অভিযোগ অস্বীকারের উপায় নেই। ফলে নির্বাচনের চেহারা হাঙ্গেরি, মিসর ও রাশিয়ার মতো না হয়ে কি ভারত-আমেরিকার মতো হবে? তবে এ অবস্থার জন্য ভারতই সবচেয়ে বেশি দায়ী। অথচ তারাই বহুদলীয় গণতন্ত্রের সেরা দৃষ্টান্ত।

আওয়ামী লীগের ওপর একদলীয় ব্যবস্থা প্রভাবের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী চীন-রাশিয়া। পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে, বাণিজ্যিকভাবে গ্রাস করতে এমন মাপের ঋণ দিচ্ছে, যা পূরণের মতো অর্থনীতি মতাসীনদের অলীক কল্পনা। উন্নতির নামে এ যেন পরাশক্তিদের কাছে নিঃশর্ত আত্মনিবেদন। অনুষঙ্গ হিসেবে রয়েছে জাতিসঙ্ঘ নামের একটি অকর্মা প্লাটফর্ম। সিকিউরিটি কাউন্সিলে পাঁচটি ভেটো পাওয়ারের দু’টি হলো চীন-রাশিয়া। এদের কারণেই সু চি, বশির, আসাদদের মতো স্বৈরাচারীরা এখনো মতায়। আসাদের পে আজ অবধি ৮৬ বার জাতিসঙ্ঘে আস্থা জানালেন পুতিন। এসব বলার কারণ, গণতন্ত্রকে জাতিসঙ্ঘে এনে এভাবেই ভোটাভুটির মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ভারতের ভেটো পাওয়ারের প্রস্তাবটি বন্ধ করল চীন। তাতে কী? ভারতের পাশে আছে রাশিয়া। বাংলাদেশের বন্ধু চীন-ভারত-রাশিয়া। তবে মতাসীনদের পে উভয় ব্লককে এক প্লাটফর্মে রাখার মতা একমাত্র ভারতেরই।

গণতান্ত্রিক ভারতের অগণতান্ত্রিক আচরণ এবং কাইভের প্রত্যাবর্তন ১/১১-এর সময় থেকেই গোটা জাতির সাথে নিরন্তর প্রতারণা। ১ নম্বরে ভোট প্রতারণা। ৫ জানুয়ারির ভোট চুরির পরও নিঃশর্ত মা চাওয়ার বদলে বারবার ‘সুজাতা সিং মিশন।’

৯ এপ্রিল প্রায় সব পত্রিকাতেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফরের খবর। গোখলের বক্তব্যের সারমর্ম উত্তাপ ছড়ায়নি কোনো মহলেই। তিনিও বললেন, বরাবরই যা অসত্য ও বানোয়াট বলে প্রমাণিত। ফের প্রমাণ হলো দিল্লির সাথে দলের সম্পর্ক, রাষ্ট্রের নয়। অন্যথায় উনি বন্দী নেত্রীর খবর নিতেন ২০ দলের কাছে। ভাবখানা এমন ‘হু ইজ খালেদা?’ বরাবরের মতোই বাগাড়ম্ব ‘বাংলাদেশের নির্বাচন অভ্যন্তরীণ বিষয়।’ এটি ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয়ের নমুনা হলে; ভোট চুরির নমুনা কোনটি?

আমরা জানি, মানুষের সাথে সম্পর্কের রাজনৈতিক অর্থ, বিরোধী দলের সাথে সম্পর্ক। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা মতাসীনদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে ‘১/১১’-এর সময় দুই নেত্রীকে নিয়ে দিল্লির হইচইয়ের প্রধান উদ্দেশ্য, জেল থেকে বের করে একজনকে দীর্ঘমেয়াদি মতায় বসানো। পরবর্তী সময়ে অন্যজন মাইনাস হলে ভিকটিমের বিষয়ে হাত ঝেড়ে ফেলেছে দিল্লি। বরং আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে নির্বাচনের আগে লন্ডনে দুই প্রধানমন্ত্রীর সাাৎ এবং মোদির ঢাকা সফর। সুজাতার পর গোখলের মিশনের উদ্দেশ্য আরো পাঁচ বছর এদেরকেই মতায় রাখা।

তবে ২০১৮-এর নির্বাচন কেন ৫ জানুয়ারির চেয়ে বেশি প্রহসনমূলক হতে পারে, একটি প্রমাণই যথেষ্ট। ৯ এপ্রিলের খবর, সেনা মোতায়েনের পে সিইসি। কথাটি শোনামাত্র তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন হাইকমান্ড। ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে সিইসিকে কড়া বার্তা, নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করবে কে? খালেদা কারাগারে। অপর দিকে, তিনি নিজে বাইরে থেকে নির্বাচনের হুজুগ সৃষ্টিতে ব্যস্ত। বোঝা গেল, সপরিবারে মতার সেঞ্চুরি করেই ছাড়বেন। এরপরও ২০১৮-এর নির্বাচনের তাৎপর্য কী?

২০১৮-এর অবৈধ পার্লামেন্টকে বৈধতা দিতে এবার বিএনপিকে লাগবেই। হাইব্রিড নাকি মৌলিক, পরাশক্তিরা তোয়াক্কা করে না। সেই হিসাবেই আগামী নির্বাচনের জাল এমনভাবে বোনা হয়েছে, বিরোধীশিবিরের রুই-কাতলা কেন, পোনাও হয়তো ঢুকতে পারবে না। এই জালের নেতৃত্বে কে, প্রমাণের প্রয়োজন নেই। ২০ দল কি কখনোই জানতে চেয়েছে, মতায় ওরা কারা? কোত্থেকে এসেছে? বাকশালীদের হাতে বিলুপ্ত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারকারী বিএনপির মতো জায়ান্ট দলটি কিভাবে দয়া-দােিণ্যর দলের পর্যায়ে পৌঁছাল, সে প্রসঙ্গ অতীত। অম, অথর্ব, অদূরদর্শী এ রকম একটি বিরোধী দলই যেকোনো স্বৈরশাসকের স্বপ্ন।


কথা হচ্ছে সিসিমার্কা নির্বাচন, স্বৈরশাসকের নতুন তালিকা এবং ‘আমিত্ববাদ’ নিয়ে। রাষ্ট্র ও সমাজে ‘আমিত্ববাদের’ য়তির বিষয়টি আলোচনা থেকে উধাও। তবে ১২ বছর ধরেই যে সংবাদগুলো মিডিয়া দমন করছে, সেটাই ক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া। ১৬ কোটি মানুষের দেশে আরো পাঁচ বছর এদেরকে মতায় বসতে দিলে, দেশ ও জাতির স্বার্থ আর নিরাপদ থাকবে না। সুতরাং মৌলিক সরকারের অধীনে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।

বহুদলীয় বনাম একদলীয় সংসদ এবং ইমপিচমেন্টের কিছু উদাহরণ। দীর্ঘ দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল কিনটনের অভিশংসন হিয়ারিং হয়েছে ক্যাপিটালহিলে। একটি মাত্র মেজরিটি ভোটে রা পেলেন বিল। ওই ভোটটি কিনটনের প্রতিপই দিয়েছিল। একইভাবে, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রমাণ হাতে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে আইনপ্রণেতাদের কড়া হুঁশিয়ারি ‘পদত্যাগ না করলে ইমপিচমেন্ট।’ সার্কাস চাননি বলেই হোয়াইট হাউজের মায়া ত্যাগ করে পদত্যাগ করলেন নিক্সন। প্রশ্ন অগণতান্ত্রিক সংসদ হলে বিলের ভাগ্যে কী জুটত?

আসন্ন অযোধ্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিশংসনের চেষ্টা চালাচ্ছে বিরোধীশিবির। তারা মনে করছে, নির্বাচনের আগে রায় হলে মতা বিজেপির পে যাবে। বিজেপি চাইছে নির্বাচনের আগেই রায়। কারণ, মামলার মতিগতি বলছে, বাদিপই জিতবে। বিজেপি মেজরিটি সরকার হওয়ায়, বিরোধীশিবিরের সেই মতা নেই। তারপরও এটা মৌলিক অধিকার। সেই হিসাবই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ঘুষ, গুণ্ডাবাজি ও অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ তুলে দারুণ হইচই বিরোধীশিবিরে।

এবার ৫ জানুয়ারির পার্লামেন্টে। এই পার্লামেন্টটি কিভাবে, কখন, কোত্থেকে এলো; সে প্রসঙ্গ অতীত। ‘এখানে সরকারই বিরোধী দল।’ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে ফায়দা হবে না। কারণ, সাদাকে কালো বলা অসম্ভব। ২০১৪ সালে হাইকমান্ড নিজ মুখে বলেছিলেন, নিয়ম রা শেষে ৯০ দিনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হবে; কিন্তু হয়নি। এ যেন জাতিকে বিভ্রান্ত করার প্রমাণ। পাঁচ বছর পূরণের পরও আরেকটা সার্কাস নির্বাচনের আয়োজনে এমনকি পুতিন-সিসিকেও টেক্কা দেয়া হলো। ওরা অন্তত প্রতিপকে জেলের বাইরে রেখেই নির্বাচন চুরি করেছেন। ৫ জানুয়ারি করে এবং ৯ বছর ক্রমাগত স্টিমরোলার চালিয়েও অনেক দেরিতে তালিকাভুক্তি বাংলাদেশের। এর মূলে অত্যন্ত সফলভাবে পশ্চিমা মিডিয়াকে রাডারের বাইরে রাখার অপকৌশল।

প্রসঙ্গ, সংসদ ও রাজপথে ১৬তম সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতি বনাম স্বৈরাচারদের যুদ্ধ। প্রায় দুই ডজন অ্যামিকাস কিউরি এবং বিচারক মিলে সর্বোচ্চ আদালত থেকে এমন একটি রায় দেয়া হলো, যার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শক্তি কারো নেই। এমনকি আওয়ামী লীগেরও নেই। সিনহাকে নিয়ে মতাসীনদের অবস্থান ভুলে যাবো কেন? দেশ-বিদেশে বহু লেখালেখি, লম্বা প্রতিবাদ; কিন্তু প্রতিটি অঘটনে অনড়-অদম্য হাইকমান্ড। ৯ বছর ধরেই ৯৯.৯৯ ভাগ সময় কণ্ঠভোটে তিনবার ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত’ বলার প্রমাণ। এর বিপরীতে একবারও ‘না জয়যুক্ত’ জয়ী হয়নি। তিনবার ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত’ বলা কণ্ঠভোটের প,ে স্পিকার নিজেও তিনবার ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত’ যুক্ত করে বিলটি গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তা আইনে পরিণত হয়।

বলছি, বর্তমান একদলীয় পার্লামেন্টের সাথে মানুষের সম্পর্ক নেই। কারণ, বৈধ বিরোধী দল সেখানে অনুপস্থিত। এরশাদকে যারা বিরোধী দল বলে, তারা জেনে শুনে বিবেককে ফাঁকি দিচ্ছেন। ১৬তম সংশোধনীর বিরুদ্ধে রায়ের প্রধান কারণ অনির্বাচিত সংসদ। বাতিলকারীদের যুক্তি, ১৫৪ জন সংসদ সদস্যই অনির্বাচিত হওয়ায় এই সংসদ অবৈধ। সুতরাং তাদের হাতে অভিশংসনের মতা দেয়া বিপজ্জনক। রায়ের মর্মার্থ, ইচ্ছামতো যাকে খুশি কণ্ঠভোটে অভিশংসন করবে।
সিনহাকে যা করা হলো, বিচার বিভাগের ইতিহাসে রেফারেন্স হয়ে থাকল। ওদের হাতেই অভিশংসনের মতা দেয়ার কথা যারা বলে, দেশ চালানোর যোগ্যতা তাদের কতটুকু, সে প্রশ্ন অবশ্যই উঠবে। অভিশংসনের মতা ছিল না বলেই তারেকের পে রায় দেয়া বিচারপতি এবং সিনহা পালিয়ে বাঁচলেন। অন্যথায় খালেদার অবস্থাই হতো। কারণ সিনহার বিরুদ্ধেও অর্থ জালিয়াতি ও শান্তি কমিটির সদস্য হওয়ার অভিযোগ। সিনহা কোন আইনের মুখোমুখি হতে হতো, শাস্তি কী হতো এসব নিজে জানতেন বলেই ‘নিখোঁজ’ বা নির্বাসিত।

এবার আসা যাক অন্য যুক্তিতে। একই সাথে কেউ শেক্সপিয়র, আইনস্টাইন, হেগেল, গান্ধী হতে পারবেন না। আইনস্টাইনের মতো সাদা গোঁফ রাখলেই আইনস্টাইন হওয়া যায় না। বলার কারণ, ১৬ কোটি মানুষের দেশে এক ব্যক্তির ইচ্ছাই সব। এর চেয়ে অদ্ভুত রাষ্ট্রব্যবস্থা কোনটি? ব্যক্তির ইচ্ছার সাথে কারো দ্বিমত পোষণের মতা নেই। সংপ্তি উদাহরণ, ইউনেস্কো যখন সুন্দরবনে ভারতের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিমত দিলো, তখন ইউনেস্কো আর ইউনূস এক মাপের শয়তান। আবার ৭ মার্চের বক্তৃতাকে ইয়েস বললে ইউনেস্কোই ‘সবচেয়ে বড় মহাত্মা গান্ধী।’

৯ বছর ধরে যত গোপন চুক্তি, কোনটার সাথে জনগণের সম্পর্ক? ২০ দলও এটাকে ‘দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র’ হিসেবেই দেখছে। মতাসীনেরাও প্রতিবাদ না করায় এই অভিযোগ মেনে নিয়েছে বলেই ধরে নেব। এই কাজে অবৈধ ১৫তম সংশোধনীর চরম ব্যবহার। দায়মুক্তির শর্তে চুক্তিগুলোর শীর্ষে সুন্দরবন, রূপপুর, কুইক রেন্টাল, ট্রানজিট, পাইপলাইন, অস্ত্র ক্রয়, মেগাঋণ ইত্যাদি। অথচ ছয় বছর পরও পদ্মা সেতুর বেশি খবর নেই। বিশ্বব্যাংককে তাড়িয়ে না দিলে এত দিনে সেতুর কাজ হয়তো অনেক এগিয়ে যেত। খরচও ৪ ভাগের ১ ভাগই থাকত। এতে দেশের কী উপকার হতো, সেই আলোচনার বদলে এখন পদ্মা সেতুর ঠ্যাং নিয়েই ব্যস্ত!

ভয়ানক বাণিজ্যঘাটতির বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য। গুগল সার্চে এসব তথ্য ভূরি ভূরি, কিন্তু কোনো উত্তাপই ছড়াল না! একটি উদাহরণ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫২৭ মিলিয়ন ডলার রফতানির বিপরীতে ভারত থেকে আমদানি ৬.৫ বিলিয়ন ডলার। আজ অবধি কতগুলো দায়মুক্তির শর্তে মতা, শাসক ও কথিত বন্ধুরা জানে। আসল কথা, ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল থিওরি’কে আগলে ধরে ২০৪১ পেরিয়ে সপরিবারে মতায় থাকতে হবে। এই কাজে সর্বোচ্চ ব্যবহার ‘জিরো টলারেন্স’ গুজবের। ভারতের সৌজন্যে বিদেশীরাও বিশ্বাস করেছেন। কিন্তু দেশবাসী দেখেছে, জিরো টলারেন্সের নামে বিরোধীশিবিরকেই টার্গেট করা হয়। আরেকটা সার্কাস নির্বাচনের ল্েয আবারো দিল্লির আনাগোনার অংশ হিসেবেÑ লন্ডনে দুই প্রধানমন্ত্রীর সাাৎ।

শিরোনামটি ছিল ‘সিসিমার্কা নির্বাচনের জন্য দায়ী কে?’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ভারমুক্ত মহাসচিবকে বলছি, শুধু ভারতকেন্দ্রিক অপশক্তিই নয়, বিএনপির বর্তমান অবস্থার জন্য আপনারা নিজেরাও কি কম দায়ী নন? ২০ দলকে বার্তা, ঘরে বসে আন্দোলন করে খালেদাকে মুক্ত করার কথা ভুলে যান। বিএনপির ভাঙন ঠেকানোর ব্যাপারে সাবধান হোন।

গণতন্ত্রের কিছু নমুনা। এক পুত্রকে নির্বাসন, মাকে জেল, আরেক পুত্রকে নির্বাসনে রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া। নিজের দেশেই এত বড় জোট সরকারকে পরবাসী বানিয়ে ফেলা। পুলিশ দিয়ে গণতন্ত্র পাহারা...।
মোদির ঢাকা সফরের আগেই যে বার্তাগুলো দেয়া গণতন্ত্রকামীদের জন্য সবচেয়ে জরুরি : আবারো ৫ জানুয়ারির পথ পরিত্যাগ করা। সুজাতা সিং মিশনকে চিরদিনের মতো পরিত্যক্ত ঘোষণা। ২০৪১ মিশন বাতিল ঘোষণা। বারবার গণতন্ত্র নির্বাসনে নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা। দল বাদ দিয়ে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়া।

ই-মেইল : farahmina@gmail.com
ওয়েবসাইট : www.minafarah.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/311620