১৪ এপ্রিল ২০১৮, শনিবার, ৯:২৯

এমসিকিউ বাদ নিয়ে প্রাথমিকের নতুন প্রশ্ন কাঠামো

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দিয়ে পরিমার্জিত প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন করেছে সরকার। গতকাল জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) নতুন পরিমার্জিত নম্বর কাঠামো প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি মহাপরিচালক শাহ আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, প্রাথমিক বিজ্ঞান ও সব ধর্মের নৈতিক শিক্ষা। এ ৬টি বিষয়ে ১০০ নম্বরে জন্য ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় দিয়ে আলাদা আলাদা নম্বরপত্র দেয়া হয়েছে। গত ১০ই এপ্রিল জাতীয় কর্মশালায় পরিমার্জিত এই প্রশ্নপত্রের কাঠামো চূড়ান্ত করা হয় বলে আদেশে জানায় নেপ। প্রতিটি বিষয়ে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন বাদ দিয়ে সেখানে নতুন ধারার প্রশ্ন যুক্ত করে এবার থেকে প্রাথমিক সমাপনীর প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে।

এমসিকিউ প্রশ্ন বাদ দেয়া হলেও পরীক্ষার সময় আগের মতো আড়াই ঘণ্টাই থাকবে। গত বছর প্রাথমিক সমাপনী পারীক্ষার প্রায় সব বিষয়ের প্রশ্ন পরীক্ষার আগের রাতে বা পরীক্ষার সকালে ফঁস হয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে তা সামাজিক গোযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। নতুন বিন্যাস অনুযায়ী, বাংলায় ১৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থদের। আর ইংরেজিতে দিতে ১৩টি ক্যাটাগরিতে। গণিতের নম্বর বিন্যাস করা হয়েছে এভাবে, সংক্ষিপ্ত উত্তর ২০টির জন্য ২০ নম্বর, ৮ নম্বর করে ৬টি ক্যাটাগরি উত্তর দিতে হবে। এরমধ্যে আছে চার প্রক্রিয়া সম্পর্কিত সমস্যা সমাধান, লসাগু, গসাগু, ভগ্নাংশ, গড় সম্পর্কিত সমস্যা, দশমিক ভগ্নাংশ এবং শতকরা সম্পর্কিত সমস্যা। জ্যামিতি ৩টি প্রশ্নের মধ্যে ২টি উত্তর দিতে হবে ৬ করে ১২ নম্বর, পরিমাপে ৮, সময় সম্পর্কিত ৪ এবং উপাত্ত ও জনসংখ্যা সমাধান ৮। সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি এবং সকল ধর্মের নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে প্রশ্ন কাঠামো একই রাখা হয়েছে। প্রথমে বিষয়ে ১৫টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন থাকবে ১৫টি উত্তর দিতে হবে প্রত্যেকটি জন্য নম্বর ধরা হয়েছে ২ করে ৩০, সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ ১৪টি মধ্যে ১২টি ১২ নম্বর, মিলকরণ বাম পাশে ৫টি ডানপাশে ৭টি মোট ১০ নম্বর এবং অবকাঠামোগত ১০টি প্রশ্নের মধ্যে ৮টি উত্তর দিতে হবে পূর্ণমান ৮৪।

বাংলাদেশে এসএসসিতে এমসিকিউ প্রশ্ন প্রবর্তন করা হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখন মোট ৫০টি বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর দিতে হত; প্রতিটির জন্য বরাদ্দ ছিল ১ নম্বর করে। দীর্ঘদিন ওই ব্যবস্থা চলার পর প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এখন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ কমিয়ে আনছে সরকার। আর এবার থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হবে শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক বা সৃজনশীল প্রশ্নে। ২০০৯ সালে সারা দেশে এক সঙ্গে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরুর পর ২০১২ সালে প্রথমবারের মত ১০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্ন সংযোজন করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ২০১৩ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৩৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৫০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্নে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা হয়।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=113268