৯ এপ্রিল ২০১৮, সোমবার, ৯:০২

এক-এগারোর সরকারের হিসাব নেয়া হোক

দেখা অদেখা

সালাহউদ্দিন বাবর
এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গৃহীত কিছু কার্যক্রম অনেক ক্ষত তৈরি করে গেছে। সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, সে সরকারের আমলে নির্যাতনের বিষয় হিসাব-নিকাশ করা হবে। স্মরণ করা যেতে পারে, সে সরকার ২০০৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ১৭০ জন শীর্ষ নেতাকে তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগে আটক করেছিল। প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান যথাক্রমে শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়াকেও সেই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দুই নেত্রীর পরিবারের বিভিন্ন সদস্যকেও সে সরকার আটক করেছিল। কখনো না হওয়ার চেয়ে ১১ বছর পর এই হিসাব-নিকাশ নেয়ার বক্তব্য আসা মন্দ নয়। কেউ অন্যায় করে যাবে তার কোনো জবাবদিহি হবে না, এটা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। তা ছাড়া ১/১১-র সরকার কোনো ছোটখাটো অন্যায় করেনি। তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। তারা দেশ শাসনের স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করেছে। দেশে সফল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কালিমাযুক্ত করেছিল।

সংবিধান ভঙ্গ করার অভিযোগ গুরুতর। সংবিধানে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সন্নিবেশিত ছিল, তখন এই নির্দেশনা ছিলÑ সে সরকার শুধু রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কাজগুলো নির্বাহ করবে। কোনো নীতিগত মৌলিক বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা হস্তক্ষেপ করবে না। এই নির্দেশ না শুনে তারা বহু নীতিগত বিষয়ের চর্চা ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করবে এর পর তারা বিদায় নেবে। এই সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সেই সরকার দুই বছর ক্ষমতায় থেকেছে। দুই বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে তাদের স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে, যা আইনসঙ্গত ছিল না।

এই অতিরিক্ত সময় ক্ষমতায় থাকার লক্ষ্য ছিল, আরো অধিক সময় ক্ষমতায় থাকার জন্য ফন্দি-ফিকির করা। তাদের যোগ্যতা না থাকলেও তারা চেয়েছিল একটি ভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে রাজনীতিতে আসার। এ জন্য তারা চেষ্টা-তদবির কম হয়নি। তারা বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে রাজনীতিবিদদের চরিত্র হননের জন্য। কিন্তু এসব করে এরা বিশেষ সফলতা পায়নি। বড় দুই দলের নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দল ভাঙার অপচেষ্টা করেছে।
কয়েক দফা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশে সুষ্ঠুভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায়; এ পদ্ধতিতে নির্বাচন ভালো হওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি হয়েছিল যে, দেশে গণতন্ত্রের মূল প্রাণ নির্বাচনব্যবস্থায় একটা স্থায়ী পথ তৈরি হলো। কিন্তু জনগণের ওই আস্থার স্থলটি ১/১১-র সরকার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। তারা অধিক সময় ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ রাজনীতিতে নাক গলানোর চেষ্টা করেছে। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভাবমর্যাদায় আঘাত লাগে, মানুষ হতাশ হয়। ১/১১-র সরকারের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার প্রচেষ্টা দেশের কোথায় কার কতটা ক্ষতি হবে, সে হিসাব তারা করেনি; করার দরকারও বোধ করেনি।
তা ছাড়া, তাদের এই ভূমিকা দেশের গণতান্ত্রিক ধারা বিকাশের পথ রুদ্ধ করেছে। পরবর্তীকালে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করে নিয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের একটি পথ-পদ্ধতি তৈরি হওয়া ছিল জরুরি। সে পথ-পদ্ধতি বহাল হতে না পারায় আজো রাজনীতিতে রয়েছে সঙ্কট। তাই এখনো ঘুরেফিরে আসে কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। ১/১১-র সরকার ক্ষমতায় গিয়ে এর ললাটে যে কালিমা লেপন করে গেছে, তা গণতন্ত্রের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১/১১-র সরকারের অপকর্মের ব্যাপারে হিসাব গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি এসেছে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর হলেও এ বিষয়ে ঘোষণা আসার পর এই প্রত্যয় জন্মাবে যে, দোষীরা কখনোই রেহাই পেতে পারে না। আর যদি কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তবে ভবিষ্যতে অপরাধীরা এমন অপকর্ম করার আরো সাহস পাবে। আর বর্তমান সরকারকে মনে রাখতে হবে, ১/১১-র সরকারের পর তারাই ক্ষমতা এসেছে। তাই তাদের ওপর এ দায়িত্ব এসেছে যে, তাদেরকেই এর উচিত ব্যবস্থা নিতে হবে। স্মরণ করা যেতে পারে, অতীতে আরো একাধিকবার সংবিধানের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকার তার পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার অধিকারী। কিন্তু অতীতে দেখা গেছে, একাধিকবার নির্বাচিত সরকারকে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাদের পদচ্যুত করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সুহৃদ জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ অতীতে বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে। এমন ঘটনার যথাযথ প্রতিবিধান যদি হতো, তবে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে এখন যে সঙ্কট তা হয়তো থাকত না। বিষয়টি বর্তমান সরকারি কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেবে বলে আশা করি।

নির্বাচন এলেই লক্ষ করা যায়, তখন কথা ওঠে নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে? নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কী হবে? ভোটের সময় নিরাপত্তার কী হবে? ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ভোট জালিয়াতি রোখা হবে কি হবে না? কোন পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হবে? ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিতে হবে কি না? আসল কথা হচ্ছে, আমাদের দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনমত সবচেয়ে সুষ্ঠুভাবে প্রতিফলিত হতে পারবে, সেটাই সবার গ্রহণ করে নেয়া উচিত। অতীতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কারণে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। তাই কমিশন যাতে প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন করতে পারে, সে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। নির্বাচন কমিশনের দুর্বল ভূমিকার কারণে কমিশনের ওপর থেকে জনগণের আস্থা নষ্ট হয়েছে। এর স্থায়ী প্রতিবিধান হওয়া দরকার। নির্বাচনী বিধি যাতে কোনোভাবে লঙ্ঘন না হতে পারে সেজন্য কঠিন হওয়া, সব আয়োজন হওয়ার পর নির্বাচনের দিনে ভোট দেয়ার নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথাযথ হচ্ছে কি না সেটা দেখা এবং ভোটের সময় শান্তিশৃঙ্খলা বিধানের জন্য সেনা মোতায়েন করা ভোটারদের দাবি। এ নিয়ে কোনো মতপার্থক্য থাকা সঙ্গত নয়। গণতন্ত্রের প্রাণ হচ্ছে সুষ্ঠু ভোট, তা নিশ্চিত করা কমিশনের প্রধান কর্তব্য এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব।

বাংলাদেশ সমস্যা জর্জরিত একটি জনপদ, ছোট্ট একটি ভূখণ্ডে ১৬ কোটি মানুষের বসবাস। এসব সমস্যা মাথায় নিয়েও ধীরে ধীরে এগোতে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই অগ্রযাত্রার জন্য যে স্বাভাবিক স্থিতিশীল পরিবেশ দরকার ও একটি দক্ষ সৎ জনবান্ধব প্রশাসন দরকার, সেটির অভাব রয়েছে। একটি জনবান্ধব প্রশাসনের পূর্বশর্ত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় জীবনের জবাবদিহিতা। যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় জীবনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে, সেই সংসদ নিজেই এখন সুস্থ নয়। ফলে কোনো জবাবদিহি নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা শুধু হালের নয়, বছরের পর বছর ধরে চলছে। এমন অবস্থা দেশে চলতে থাকলে তার বহু উপসর্গ সমাজে দেখা দেয়। রাষ্ট্রে বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তারা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এখন অবস্থা তাই। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ সম্প্রতি গত তিন মাসের আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যা উদ্বেগজনক। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হয়েছেন ৪১ জন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ সময় ১২ জন গুমের শিকার হয়েছেন। উল্লিখিত রিপোর্ট অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে মোট বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ১৯ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে সাতজন এবং মার্চে হত্যার শিকার হন ১৮ জন। জানুয়ারি মাসে গুম হয়েছেন ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে একজন আর মার্চ মাসে গুম হয়েছেন পাঁচজন। রাজনৈতিক সহিংসতায় তিন মাসে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৯ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে পাঁচজন এবং মার্চে ৯ জন নিহত হন। রাজনৈতিক সহিংসতায় তিন মাসে মোট আহত হয়েছেন এক হাজার ৩৭৭ জন। তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৮৩ জন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৭৮ জন এবং মার্চে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৯ জন। এ সময়ে যৌতুকের সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৩৬ জন নারী।
দেশের আইনশৃঙ্খলার যে চিত্র অধিকারের রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, তাতে কারো দাবি করা ঠিক হচ্ছে না যে, প্রশাসনে যারা রয়েছেন তারা সব ঠিকঠাকমতো চালিয়ে যাচ্ছেন। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব প্রতিটি সরকারের প্রধান কর্তব্য। এখন এই দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে পালন করছেন বলা যাবে না। এই জনপদের মানুষের নিরাপদ জীবন যাপন করার যে মৌলিক অধিকার, তাকে সামনে রেখেই প্রশাসন তার কর্তব্যকর্ম নির্ধারণ করবে। তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সব সময় স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা তাদের পালন করতে হয়, তাই সরল পথ ধরে তাদের সব সময় চলা সম্ভব হয় না।
রাজনীতিসহ সমাজের সব ক্ষেত্রে ভিন্নমত থাকতেই পারে। এটা শুধু গণতান্ত্রিক অধিকারই নয়, সংবিধান বাংলাদেশের নাগরিকদের এমন অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন সময় নানা ক্ষেত্রে ভিন্নমতাবলম্বীদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। আর রাজনীতির অঙ্গনে ভিন্নমতাবলম্বীরা হামেশাই বৈষম্যমূলক আচরণ পেয়ে থাকে। হালে এমনটি ঘটছে বেশি। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিল বাংলাদেশে সাংবাদিক, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী ও নাগরিক সমাজসহ মানবাধিকার রক্ষক এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কাউন্সিলের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কমিটি গত ১৫ ও ১৬ মার্চ জেনেভায় বাংলাদেশের উত্থাপিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই অভিমত ব্যক্ত করেছে। মানবাধিকার রক্ষকদের ওপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০১৩, খসড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮, বৈদেশিক অনুদান নিয়ন্ত্রণ অ্যাক্ট-২০১৬ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪এর প্রভাবের ব্যাপারে কমিটি উদ্বিগ্ন। কমিটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের ওপর ব্যাপকভিত্তিক দুর্নীতির প্রভাবের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কমিটি জানায়, বিশ্ব র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত। সংস্থাটি আর্থিক ও কর্মচারী নিয়োগের দিক থেকে যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে না।
উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য বহু ক্ষেত্রের সূচকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সমন্বিত উন্নয়নের দিক থেকে বিবেচনা করলে এটি একটি বড় ধরনের ব্যত্যয়। সুশাসনের নিরিখে বিবেচনা করলে দেশ পিছিয়ে রয়েছে, এটাই সাব্যস্ত হবে। আগামী ২০২১ সালে উন্ননশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। তাই সব বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য সরকারের পদক্ষেপ জরুরি। বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে বাধাগুলো রয়েছে, সেগুলো সরকারি সংস্থা তুলে ধরতে সক্ষম হয় না। তাই এ ক্ষেত্রে যাতে সংবাদমাধ্যমগুলো বিনা বাধায় ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য সরকারকে সহিষ্ণু হতে হবে। ভুলত্রুটি তুলে এনে তা প্রকাশ করার সব রকম সুযোগ থাকলে তাতে সরকারের কল্যাণ হবে। তারা এসবের প্রতিবিধান করার সুযোগ পাবে। এটা নির্বাচনের বছর। এ বছরে জনগণ নিত্তি নিয়ে বসে আছে সরকারের ভালো কাজগুলোর মাপঝোখ করার জন্য। এর পাশাপাশি মানুষ দেখতে চাইবে তাদের কল্যাণে কারা কতটুকু কাজ করবে। সরকারি দল ইতোমধ্যে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে। তারা তাদের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরছে উন্নয়নের বিষয়টি। কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষকে তারা প্রচারকাজে সুযোগ দেয়া তো ভিন্ন বিষয়, সাধারণ সাংগঠনিক তৎপরতা চালানোর ব্যাপারেও বাধা সৃষ্টি করছে; এটাও জনগণ লক্ষ করছে। এই নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়, সেই আকাক্সক্ষা দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক সমাজের। তবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা রয়েছে। তাদের এ জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, যা এখন নেই।

 

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/308766