৮ এপ্রিল ২০১৮, রবিবার, ৯:৪৮

কোটাবিরোধী আন্দোলনের পোস্টমর্টেম

শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পর থেকে কোটায় নিয়োগ যুবমানসে অসন্তোষ তৈরি করেছে। বিশেষ করে মেধাবী তরুণ যুবকরা কোটার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা বিভিন্ন সময় কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন।
এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোটায় নিয়োগ কমাতে পারেননি। বর্তমানে চাকরির বাজারের অবস্থা ভালো নয়। লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার আজ চাকরিপ্রার্থী।
শিক্ষিত হয়েও গরিব পরিবারের যুবকরা অনেক সময় কোটার কারণে চাকরি পাচ্ছে না। তবে কোটা ব্যবস্থা প্রচলনের পেছনে যে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল, এমন নয়। কিন্তু যেসব কারণে কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, সে কারণগুলোর ক্ষেত্রে পরিবর্তন বা উন্নয়ন হলে তো কোটায়ও পরিবর্তন আসা দরকার ছিল।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন এখন অনেকটাই নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছে। এজন্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে।
বিসিএস পরীক্ষায় শতকরা ৫৬ জন নিয়োগ পাচ্ছেন কোটায়! বাকি ৪৪ জনের ক্ষেত্রেও মেধা কতটা অগ্রাধিকার পাচ্ছে, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) নিয়োগের ক্ষেত্রে যেহেতু কোনো আইন নেই, সে কারণে এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসেবে সব আমলেই সরকারদলীয় গুডবুকে থাকা ব্যক্তিরাই নিয়োগ পেয়েছেন। ফলে পিএসসির কর্মকাণ্ডে, বিশেষ করে মৌখিক পরীক্ষায় শতভাগ পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে, এ কথা বলা যায় না।
সুপারিশ ও তদবির কালচারের এ দেশে বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় যেখানে ৫০ নম্বর রাখলেই হয়, সেখানে এ পরীক্ষায় ২০০ নম্বর রাখায় বোর্ড চাইলে কোনো পরীক্ষার্থীকে বেশি নম্বর দিয়ে সহজে ‘ফেভার’ করা সম্ভব।

মহাজোট আমলে বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ করায় রাজনৈতিক মুরব্বি বা মন্ত্রি-সচিব পর্যায়ে আত্মীয়স্বজন নেই- এমন মেধাবীদের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন ভেঙে পড়ে। কারণ লিখিত পরীক্ষায় ভালো করেও এদের অনেকে মৌখিক পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার কারণে বিসিএসে উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চলমান কোটা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য অবশ্যই মহৎ ছিল। তখন এ ব্যবস্থাকে সবাই সমর্থন করেছেন। কিন্তু এখন তো পরিস্থিতি তেমন নেই। কাজেই সরকারি চাকরিতে কোটায় নিয়োগ সম্পর্কে আলোচনা ও সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রথমেই বলা যাক মুক্তিযোদ্ধা কোটার কথা। যারা দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে অবদান রেখেছেন, তারা অবশ্যই সর্বাধিক সম্মান পাওয়ার যোগ্য। সেজন্য ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সৃষ্টি করে মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারি চাকরিতে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়ার কাজটি নিঃসন্দেহে ভালো হয়েছে।

কারণ মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ না করলে তো দেশই স্বাধীন হতো না। কাজেই এ সম্মান এদের প্রাপ্য। তারা দেশপ্রেমিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলেই এ সম্মান পেয়েছেন। কোটা ছাড়া তাদের আরও অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হলে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের একই হারে কোটা দেয়ার নীতির ক্ষেত্রে প্রশ্ন আছে।
কারণ একজন সৎ লোকের ৭ সন্তান থাকলে তারা সবাই যে তাদের বাবার মতো সৎ হবে, সে নিশ্চয়তা যেমন দেয়া যায় না, তেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-সন্ততিরা সবাই যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হবেন- এমন নিশ্চয়তা দেয়া যায় কি? এদের মধ্যে একটি ছেলের কি চোর, ডাকাত, অসৎ বা সঙ্গদোষে জঙ্গি মানসিকতাসম্পন্ন হওয়া একেবারেই অসম্ভব?
চলমান ব্যবস্থায় ওই ছেলেটি নিজে মুক্তিযুদ্ধ না করে এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনাসম্পন্ন হয়েও মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা পাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার এমন সন্তানকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধা দেয়া উচিত কিনা, তা ভাববার বিষয় বৈকি।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের কোটা সুবিধা দেয়ার সময় এসব বাছবিচার না করে ঢালাওভাবে সবাইকে এ সুবিধা দেয়া কতটা বিবেচনাপ্রসূত, সে প্রশ্ন উত্থাপন করা যায়।
আবার সরকারের তরফ থেকে স্বীকার করা হচ্ছে যে, মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় প্রচুর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে এবং ইতিপূর্বে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করার পরও সে তালিকা সঠিক হয়নি। প্রতিবারই তালিকা করার সময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে এবং পুরনো তালিকা থেকে বাদ পড়েছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নাম।
পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এসব তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সর্বনিম্ন সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯৬ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে ১ লাখ ৩৪ হাজার নতুন আবেদন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ষষ্ঠ তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে।
সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন তালিকা তৈরি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা পরিবর্তন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কাজেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও কতজন মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা পেয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছে, তার হিসাব করা হয়নি।

এ নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের কোনো গবেষণা আছে বলে আমার জানা নেই। একই প্রশ্ন উঠতে পারে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের ব্যাপারেও। এরা যেহেতু সংখ্যায় আরও বেশি, কাজেই এদের মধ্যে সবাই যে এদের দাদা-দাদি বা নানা-নানির মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, সে নিশ্চয়তা দেবে কে?
এদের কারও কারও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী হয়েও মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা সুবিধা পাওয়া কতটা যৌক্তিক হচ্ছে? তা ছাড়া কত প্রজন্ম ধরে এ কোটা চলমান থাকবে, সে বিষয়টিও সুস্পষ্ট করা দরকার। তা না হলে যত দিন যাবে, ততই মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রাজনীতি ও এর দাবিদারের সংখ্যা বাড়বে।
জঙ্গি চেতনাসম্পন্ন কেউ যাতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধা না পায়, সে ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা দরকার। স্বীকার্য যে, বড় বড় নীতিনির্ধারণী পদে মেধার পরিবর্তে কোটায় নিয়োগ হলে চাকরিপ্রাপ্তদের যোগ্যতা ও সেবার মান তুলনামূলকভাবে হ্রাস পায়। তখন মেধাবী চাকরিপ্রার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যুগ যুগ ধরে এমনটি চলতে থাকলে সরকারি প্রশাসনে অযোগ্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। ভেঙে পড়বে প্রশাসনিক সেবা প্রদানের মান ও পেশাদারিত্ব। তবে মেধার দরকার পড়ে না, এমন সব নিুতর পদে কোটায় নিয়োগ দিলে এ প্রশ্ন উঠবে না।

এবার ধরা যাক, উপজাতি ও নারী কোটার কথা। স্বাধীনতা-উত্তরকালে যখন এ কোটা দুটি প্রবর্তন করা হয়েছিল, তখন উপজাতীয় নাগরিকরা সবদিক থেকে পিছিয়েছিলেন। শিক্ষা, সরকারি চাকরি ও প্রশাসনে তাদের অংশগ্রহণ আশঙ্কাজনকভাবে কম ছিল।
একই ব্যাখ্যা নারীদের বেলায়ও ছিল প্রযোজ্য। কিন্তু এখন এ ব্যাখ্যা আগের মতো গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে নারী এবং উপজাতীয়রা শিক্ষায় যেমন এগিয়েছেন, তেমনই চাকরিতেও তাদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
সাধারণ প্রতিযোগিতায় তারা এখন সবার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে সরকারি চাকরিতে আসতে পারছেন। কাজেই তাদের জন্য এখন কোটা থাকা উচিত কিনা, সে বিষয়ে ভাবতে হবে। এখন সারা দেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেলা পর্যায়ে মেডিকেল কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গড়ে উঠছে। লেখাপড়ার হার অনেক বেড়েছে।

কাজেই সাধারণভাবে সবার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই সব জেলার শিক্ষার্থীরা চাকরি পাচ্ছেন। সরকার জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। কাজেই কোনো জেলা আর আগের মতো বিশেষভাবে পশ্চাৎপদ থাকছে না। সেক্ষেত্রে কোটার মাধ্যমে জেলার উন্নতি করার বিধানেরও অবসান হয়েছে।
পেশাদারিত্বের যুগে প্রশাসনের উন্নয়নের লক্ষ্যে মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা করে সবার সরকারি চাকরিতে আসা উচিত। তাহলে একদিকে যুবকদের মধ্যে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মেধাবী যুবকদের মধ্যে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন সতেজ হওয়ার মধ্য দিয়ে যেমন লেখাপড়ায় উৎসাহ বাড়বে, তেমনি সরকারি প্রশাসনও পাবে দক্ষ ও সুযোগ্য প্রশাসক।
তারা তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে অধিকতর যোগ্যতার সঙ্গে নাগরিকদের সেবা দিতে পারবেন। কাজেই কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা তাদের ৫ দফা দাবিতে সব মিলিয়ে যে শতকরা ১০ ভাগ কোটা রাখার কথা বলেছে, আমি ২০১৩ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেও এমন প্রস্তাব দিয়েছিলাম।
তবে এখন ২০১৮ সালে, আমি আন্দোলনকারীদের শতকরা ১০ ভাগ কোটা রাখার প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নই। আমার মতে, এখন মেধার ওপর জোর দিয়ে এ হার আরও কমানো দরকার। তবে হ্যাঁ, মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা কোটা রাখা অত্যন্ত যৌক্তিক। ওই কোটার পরিমাণ সংশ্লিষ্টদের চিন্তা-ভাবনা করে নির্ধারণ করা ভালো হবে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পারফরম্যান্স নির্ভর করে যোগ্য, দক্ষ ও পেশাদার আমলাদের ওপর। কারণ তারাই সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করেন। সেই আমলা শ্রেণী নিয়োগ পান পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতামূলক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার মাধ্যমে। এ পরীক্ষায় মেধার যোগ্যতায় ভালো করে আকর্ষণীয় ক্যাডারে প্রথম শ্রেণীর সরকারি চাকরি পাওয়া প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। আর এ ক্ষেত্রে শতকরা ৫৬ শতাংশ কোটার মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বপ্নে আঘাত করা হচ্ছে। তাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করা হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থী কী বলতে চায়, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দিয়ে শুনছে না।
স্মর্তব্য, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি, বিসিএস পরীক্ষার অনিয়মানুবর্তিতা ও নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ২০১৩ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নামলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছিল। আন্দোলকারীদের দাবি-দাওয়া না শুনেই ওই সময় প্রধানমন্ত্রী কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে ভাংচুরকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে পরবর্তীকালে তাদের সব রকম চাকরিতে অযোগ্য করার ঘোষণা দিয়েছিলেন (যুগান্তর, ০১-০৮-২০১৩)।

সম্প্রতি চাকরি বাজারে মন্দা, নিয়োগে দুর্র্নীতি, নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যাবৃদ্ধির ফলে চাকরিপ্রার্থীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এজন্য আগের আন্দোলনের সাড়ে চার বছর পর এ বছরের ১৪ ফেব্র“য়ারি থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা আবার কোটাবিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন।
এবার তারা যথেষ্ট সতর্ক। তারা শান্তিপূর্ণভাবে এ অরাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে তাদের দাবির প্রতি মনোযোগী করতে চায়। এজন্য ২৫ মার্চ তারা গলায় সনদপত্র ঝুলিয়ে হাতে ঝাড়– নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে সারা দেশে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতীকী আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন।

আন্দোলনকারীরা কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবি করছেন না। তারা ৫ দফা দাবি দিয়ে এর যৌক্তিক সংস্কার দাবি করছেন। একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আমি সরকারকে অনুরোধ করব, আন্দোলনকারীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনে তাদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে দেখতে। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা কম দেখে অতীতের মতো তাদের পুলিশ দিয়ে লাঠিপেটা করে এ আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করলে নির্বাচনের বছরে সরকারের জন্য তা মোটেও হিতকর হবে না।
রাজপথে নামা বা মানববন্ধনে দাঁড়ানো কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সংখ্যা স্বল্প হলেও এদের দাবির প্রতি কিন্তু লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার যুবক এবং বিবেকবান নাগরিক সমাজের সমর্থন রয়েছে।
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মনে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন সৃষ্টি করা এবং সরকারি প্রশাসনকে দক্ষ, যোগ্য ও পেশাদার করার জন্যও সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের উপস্থাপিত কোটা ব্যবস্থা সংস্কারে দ্রুত মনোযোগী হওয়া।
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

https://www.jugantor.com/todays-paper/sub-editorial/36125