৩১ মার্চ ২০১৮, শনিবার, ৮:৩০

রাজধানীর বাজার দর

ইলিশের বাজারে বৈশাখের উত্তাপ

পহেলা বৈশাখ আসতে এখনও বেশ কয়েকদিন বাকি। তবে এখন থেকেই রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। শুক্রবার এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায়। গত সপ্তাহের চেয়ে ৬০০-৭০০ টাকা বেশি। অন্যদিকে চালের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। নতুন করে না বাড়লেও গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল আছে চালের বাজার। কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে দেশি পেঁয়াজে। গত সপ্তাহের চেয়ে ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। আর সরবরাহ বেশি থাকায় স্থিতিশীল ছিল সবজির দাম। এছাড়া মাছ, মাংস, ডাল ও তেলসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দামই ছিল স্থিতিশীল। পুরান ঢাকার নয়াবাজার, কারওয়ান বাজার, রামপুরা কাঁচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের ইলিশ বিক্রেতা রবিউল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ইলিশের বাজারে বৈশাখের উন্মাদনা চলছে। অনেকেই ইলিশ কিনতে শুরু করেছেন। তাই দাম একটু বেশি। তবে বড় ইলিশের তুলনায় ছোট ও মাঝারি ইলিশের চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, শুক্রবার বড় আকারের এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায়। গত সপ্তাহে এই আকৃতির ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ টাকায়। ৮০০ গ্রাম ওজনের এক পিস বিক্রি হয় এক হাজার টাকায়, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০০ টাকায়। ৭০০ গ্রাম ওজনের এক পিস ইলিশ বিক্রি হয় ৭০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা এবং ৫০০ গ্রাম ওজনের এক পিস ইলিশ বিক্রি হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ইলিশ কিনতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আহমেদ শরীফ যুগান্তরকে বলেন, বৈশাখকে কেন্দ্র করে মাছ বিক্রেতারা আগেভাগেই ইলিশের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার কারণে বড় ইলিশ কেনার ইচ্ছা থাকলেও মাঝারি আকারে ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৪৪-৪৫ টাকা। তবে আমদানি করা ভারতীয় স্বর্ণা ৪২-৪৩ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। আগের দামেই মিনিকেট ৬৩-৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিআর-২৮ বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকায়, পারিজাত ৪৭-৪৯ টাকা, নাজিরশাইল ৬৬-৭৯ টাকা এবং জিরাশাইল ৫৯-৬১ টাকা।
চালের দাম না কমলেও কমেছে দেশি পেঁয়াজের দাম। আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫-২৮ টাকা দরে। রসুন ১০০ টাকা কেজিতে এবং আদা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বাজারভেদে পুরনো আলু বিক্রি হয়েছে ১৪-১৫ টাকা কেজি এবং নতুন ১৫-২০ টাকায়। এছাড়া বেগুন মান ও জাতভেদে ৩০-৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, টমেটো ২৫ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, শিম ৩০-৩৫ টাকা, ফুলকপি প্রতিপিস ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, গাজর ২০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, চাল কুমড়া (জালি) ৩০-৩৫ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, লাউ ৩০-৩৫ টাকা, ধনে পাতা ৫০-৬০ টাকা কেজি এবং কাঁচামরিচ ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. রানা মিয়া বলেন, ধীরে ধীরে কমে আসছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ যেমন পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি আমদানিও হচ্ছে প্রচুর। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার ফলে দামটা কমে আসতে শুরু করেছে।

মাছের বাজারে ইলিশের দামে হেরফের হলেও অন্যান্য মাছের দাম একই রকম আছে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার চারটি এক কেজি ওজনের রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার টাকা এবং পাঁচটিতে এক কেজি ওজনের বিক্রি হয়েছে ৮৫০ টাকা। রুই ও কাতলা বিক্রি প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকা, চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে বড় আকারে প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ৭০০ টাকা এবং ছোট আকারের ৫০০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, কই মাছ ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সিলভার কার্প ১০০-১২০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১০০-১২০, নলা ১২০-১৩০ টাকা এবং সরপুঁটি ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৫০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৮০ টাকা, ছাগলের মাংস ৬৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৩০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ১৫০ টাকা এবং সাদা লেয়ার মুরগি ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

 

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/33241