২৯ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:১৪

নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক

প্রায় প্রতিদিন দর হারাচ্ছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার। গতকালও দরপতন অব্যাহত ছিল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। এদিন ডিএসই’র সব সূচক কমেছে। যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেন এবং বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দর। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক নামমাত্র বেড়েছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সূচকের যে অবস্থানে উঠতে আট মাস সময় লেগেছে, সেখান থেকে নামতে সময় লেগেছে মাত্র এক মাসের কিছু বেশি। অর্থাৎ ২০১৭ সালের ১৯শে জুন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকের অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে। সেখান থেকে উত্থান হওয়ার পর গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি সূচকের অবস্থান হয় সর্বোচ্চ ছয় হাজার ১০২ পয়েন্টে। এই অবস্থানে উঠতে সময় লাগে আট মাস। আর সেই অবস্থান থেকে নেমে গতকাল ৫ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। এজন্য সময় লেগেছে এক মাসের কিছু বেশি সময় বা ২৭ কার্যদিবস। এই অল্প সময়ে সূচক ৯ মাস পিছিয়ে গেছে। অন্যদিকে লেনদেনের অবস্থা আরও করুণ। নয় মাস আগে ২০১৭ সালের ১৯শে জুন লেনদেন হয়েছিল প্রায় ৫৪১ কোটি টাকা। আর গতকাল তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৭৭ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ লেনদেন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। বাজার পর্যালোচানায় জানা গেছে, বর্তমান অস্থিরতায় ডিএসই’র ডিএসইএক্স ৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা ১৯১ কার্যদিবস বা ৯ মাস ৯ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক। এর আগে ২০১৭ সালের ১৯শে জুন সূচকটি ৫ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করেছিল। ডিএসইতে অপর দুই সূচকও কমেছে। শরীয়াহ্ সূচক ৬ ও ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২৯৭ ও ২০৫৫ পয়েন্টে।

অপরদিকে সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ০.৪১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৯৪৬ পয়েন্টে। এ সূচকটিও ১৯৩ কার্যদিবস বা ৯ মাস ১০ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এর আগে সিএএসপিআই ২০১৭ সালের ১৬ জুন ১৬ হাজার ৯১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৫০ সূচক ০.৯৯ ও সিএসসিএক্স ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছ যথাক্রমে ১২৭৯ ও ১০২৩৯ পয়েন্টে। তবে সিএসই-৩০ সূচক ২৩ ও সিএসআই ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৫৬০৫ ও ১১৪৯ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে, দর বেড়েছে ১১৭টির এবং ৬০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে ৯৯টির, বেড়েছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টির। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যা আগের দিন থেকে ৩৪ কোটি টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩১১ কোটি টাকার। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ২ কোটি টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১২ কোটি টাকার।
জানা গেছে, গত কয়েক মাস থেকে একের পর এক ইস্যুতে শেয়ারবাজারে দরপতন চলছে। দরপতনের জন্য এডিআর ইস্যুতে ব্যাংক খাতের তারল্য সংকটকে প্রধান কারণ বলে মনে করছেন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, এ নিয়ে সৃষ্ট আতঙ্কে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ পতন আরো বাড়ছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=110974