২৯ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৩

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন জটিলতায় বাংলাদেশ

জেডব্লিউজি বৈঠকে আলোচনা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন জটিলতায় পড়েছে বাংলাদেশ। পরিচয় যাচাই-বাছাই শেষে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার দুই দফায় যে ৫৫২ জনের নাম পাঠিয়েছে, তারা ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের সদস্য। পরিবারের একটি অংশকে বাংলাদেশে রেখে রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরে যেতে চাইবেন না। ফলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই মুখ থুবড়ে পড়বে। বিষয়টি প্রত্যাবাসনসংক্রান্ত যৌথ কার্যকরী গ্রুপের (জেডব্লিউজি) আগামী বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জেডব্লিউজির অভ্যন্তরীণ বৈঠকে (বাংলাদেশ অংশ) এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যাবাসন চুক্তির পর বাংলাদেশ প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে দিতে চেয়েছিল। এ জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তৈরি করা রোহিঙ্গাদের ডেটাবেজের সহযোগিতা নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার পরবর্তী সময়ে জানায় তালিকা হতে হবে পরিবারভিত্তিক। এরপর জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় আট হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার পরিবারভিত্তিক তালিকা তৈরি করা হয়। ঢাকায় দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ তালিকা মিয়ানমারকে হস্তান্তর করা হয়। মিয়ানমার যাচাই-বাছাই শেষে প্রথমে ৩৭৪ জন এবং পরে ১৭৮ জনের তালিকা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশকে দেয়। কিন্তু এ তালিকা পরিবারভিত্তিতে না করে এলোমেলোভাবে (র্যা নডম) করা হয়েছে। ফলে কোনো কোনো পরিবারের দু’জনকে তালিকাভুক্ত করা হলেও বাকিদের বাদ দেয়া হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আগে থেকে শঙ্কিত রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আরো অনীহা দেখাচ্ছেন।

গতকালের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সাথে জেডব্লিউজির পরের বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
মিয়ানমারের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান মার্কিন নেতৃবৃন্দের : গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব না দেয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।

যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, মুসলিম ও ইহুদিদের নিয়ে গঠিত একটি আন্তঃধর্মীয় প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে গতকাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানিয়েছে। ‘বার্মায় গণহত্যা বন্ধে আন্তঃধর্মীয় জোট’ ১৪ সদস্যের এ প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের আয়োজন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে এবং তাদের নিরাপদ, মর্যাদা ও অধিকারের সাথে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আন্তঃধর্মীয় প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র ফিরে গিয়ে মার্কিন কংগ্রেস, প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের সাথে আলোচনার মাধ্যমে জনমত গঠনে সক্রিয় হবে।

 

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/305731