২১ মার্চ ২০১৮, বুধবার, ১০:১৫

পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের ব্যয় দ্বিগুণ হলো

ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হবে


নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পেরে এখন প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণ বাড়ানো হলো। সময় বাড়ছে আরো দুই বছর। এটি হয়েছে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে। এ বাড়তি ব্যয় একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের জুনে শেষ করার কথা ছিল। সেটা এখন ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হলো। এ ছাড়া শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হচ্ছে ঢাকায়। এতে ব্যয় হবে ৯১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটিসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, এ ১৬ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৬৮০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা দেয়া হবে জিওবি খাত থেকে। বিদেশী কোনো অর্থায়ন এসব প্রকল্পে নেই।

একনেকের তথ্যানুযায়ী, এক হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরে এ সমুদ্র বন্দরটির উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় ব্যয় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বাড়িয়ে এখন তিন হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটি হবে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর। মেয়াদ শেষে এসে এখন জমি অধিগ্রহণের ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধাদির উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ৬ লাখ টাকা। সিলেট সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৪৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের ২০ তলার ২টি বেইজমেন্টসহ ১০তলা প্রধান কার্যালয় নির্মাণকাজ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। নোয়াখালী সদরের সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ডাক অধিদফতরের সদর দফতর নির্মাণ প্রস্তাবিত প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলাধীন তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে বকসী লঞ্চঘাট হতে বাবুরহাট লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং এবং কুকড়ি-মুকড়ি দ্বীপ বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলাধীন লর্ডহার্ডিঞ্জ ও ধলিগৌরনগর বাজার রক্ষা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলাধীন স্বর্ণদ্বীপ মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষাকল্পে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে উদ্যান জাতীয় ফসল সরবরাহ ও পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এক্সপানশন অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/303550