২০ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫২

বিশ্বের চতুর্থ দূষিত নগরী ঢাকা

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঢাকা। বাতাসের গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে প্রণীত সূচকে এ কথা বলা হয়েছে। ওই সূচকটি প্রস্তুত করেছে ইউএস এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন এজেন্সি। ওই তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হলো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরীর মধ্যে চতুর্থ। সূচক মূল্যায়ন যার ১৯৫। আর সবচেয়ে বেশি দূষিত নগরী হলো নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। এর মূল্যায়ন ২০৮। রোববার এ সূচক প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওই এজেন্সি। সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বায়ুদূষণ ঘণ্টায় ঘণ্টায় এমনকি দৈনিক ভিত্তিতেও পরিবর্তন হয়। উল্লেখ্য, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে একই সূচকে ঢাকা ছিল সবচেয়ে দূষিত শহর। তখন বাংলাদেশের মূল্যায়ন ছিল ৩৩৯। আর এখানকার বাতাসকে বলা হয়েছিল ‘ভেরি আনহেলদি’ বা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকি বাড়ানো বুঝাতে ছয়টি ক্যাটাগরিতে এ সূচক প্রণয়ন করা হয়েছে। কোনো শহর যদি এ সূচকে ৩০০ অতিক্রম করে তাহলে সেখানকার বাতাসের গুণগত মানকে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্য দিকে সূচকে কোনো শহর ৫০-এর নিচে স্কোর করলে তাকে দেখা হয় স্বাস্থ্য উপযোগী শহর অথবা সেখানকার বাতাস স্বাস্থ্যকর। ‘আনহেলদি’ বা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত স্কোরকে। সূচকে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাতাসের গুণগত যে মান বিরাজ করছে তাতে প্রত্যেকটি মানুষ বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন। বিশেষ করে যেসব মানুষ বায়ুদূষণে স্পর্শকাতর তারা পড়তে পারেন ভয়াবহ দুর্ভোগে। স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশজ ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্ট দেখাচ্ছে যে, বাতাসের গুণগত মানের সূচক ঢাকায় গত ১১ মার্চ ছিল ৫০১ স্কোরে। একই দিনে এ স্কোর গাজীপুরে ছিল ৩৩৮ এবং নারায়ণগঞ্জে ছিল ৩০৮। দেশে সব শহরের মধ্যে মার্চে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয় নারায়ণগঞ্জে। সেই স্কোর ছিল ৫৩৮। চিকিৎসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুষ্ক মওসুমে বাতাসে সাধারণত ধুলোবালির পরিমাণ অন্য সময়ের তুলনায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। নির্মাণপ্রতিষ্ঠান থেকে ছড়িয়ে পড়া ধুলোবালি, ময়লায় এ পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তোলে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এসব ধুলোবালি শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসযন্ত্রের মারাত্মক তি করতে পারে। দেখা দিতে পারে ফুসফুসের নানা রকম রোগ। দেখা দিতে পারে ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। স্ট্যাটিসটিকস অব বাংলাদেশজ ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্টের মতে, বর্ষা মওসুমে বায়ু দূষণটা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে। উল্লেখ্য, গুণগত মানের দিক থেকে ০-৫০ পর্যন্ত স্কোরকে ভালো হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোরকে মডারেট বা মাঝারি মানের ধরা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত স্কোরকে সতর্কতামূলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৫১-২০০ পর্যন্ত স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর বা আনহেলদি ধরা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত স্কোরকে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়। আর ৩০১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত স্কোরকে ধরা হয় চরমভাবাপন্ন অস্বাস্থ্যকর হিসেবে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/303347