কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কর্মসূচিতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ
১৫ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪০

পুলিশি বাধায় পণ্ড কোটা সংস্কার আন্দোলন : আটক ৫০

পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটার মাধ্যমে পণ্ড হয়েছে চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে পরিচালিত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনকারী শিার্থীদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি গতকাল দুপুরে পুলিশের হামলায় পণ্ড হয়। এতে ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া ৫০ জনকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। এ দিকে পুলিশি হামলার অভিযোগ এনে এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ১৮ মার্চ সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মোমবাতি প্রজ্ব¡লন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারীরা।
একই দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিােভ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হচ্ছে বলে আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা যায়। তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছেÑ বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দান; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীা না নেয়া; সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ এবং চাকরিতে একাধিকবার ব্যবহার সুবিধা না রাখা।
এ সব দাবিতে বুধবার দুপুরে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে বের হয়। মিছিলটি হাইকোর্ট মোড়ে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীদের প্রত্যাশা ছিল আধা ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সেখানে এসে তাদের আশ্বস্ত করবেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে, এ ছাড়া লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আন্দোলনকারী শিার্থী রেদওয়ান ইসলাম বলেন, পুলিশ আমাদের ওপর বিনা কারণে হামলা চালিয়েছে। আমরা কোনো সহিংস আন্দোলন করতে সেখানে যাইনি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। এ দিকে সোহরাব, জহির, আরিফসহ পাঁচজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই আটককৃতদের ছাড়াতে রমনা থানায় গেলে কমপে ৫০ জনকে আটক করে থানা পুলিশ। সর্বশেষ তারা রমনা থানায় আটক ছিল বলে জানা যায়। এ ছাড়া ঘটনায় আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু তারা রমনা থানায় আছে। আমাদের কাছে নেই।
পরে রমনা থানায় একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও থানা কর্তৃপক্ষ কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এ দিকে হাইকোর্টের সামনে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়ে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় টিএসসি থেকে শাহবাগ, দোয়েল চত্বর মোড়ে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান শেষে আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে এ দিনের আন্দোলন শেষ করে। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৮ মার্চ সারা দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করবে তারা।
এ ছাড়া এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটকদের মুক্তির দাবিতে শাহবাগে থানার সামনে অবস্থান করছিল শিক্ষার্থীরা।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/301863